করোনা মহামারির সময়েও প্রযুক্তি খাত বেশ ভালো মুনাফার মুখ দেখেছে। কিন্তু মহামারির প্রকোপ স্তিমিত হয়ে আসলে বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দাবস্থা শুরু হয়েছে; অন্যান্য শিল্পের মতো প্রযুক্তি খাতও চাপে পড়েছে। এ অবস্থায় প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোয় ঘটছে একের পর এক ছাঁটাই।
মেটা : টিকটক থেকে শুরু করে বিভিন্ন প্রতিদ্বন্দ্বীর প্রতিযোগিতার সম্মুখীন হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়া জায়ান্ট মেটা। বিজ্ঞাপন খাত থেকে কোম্পানিটির আসা আয়ও কমে গেছে। এসব কারণেই ফেসবুকের এ প্যারেন্ট কোম্পানিটিতে অনেক কর্মী ছাঁটাই করেছে। প্রায় দুই দশক পুরোনো এ কোম্পানিটি এই প্রথম এত বেশি কর্মীকে কাজ থেকে বাদ দিয়েছে।
টুইটার : নভেম্বরের শুরুর দিকে কোম্পানিটির নতুন মালিক ইলন মাস্ক টুইটারের মোট কর্মীশক্তির অর্ধেকই ছাঁটাই করেন। শুধু তাই নয় ইলন মাস্ক কোম্পানিটি কিনে নেয়ার পরপরই হাজার হাজার কনট্রাক্টরের চুক্তি হঠাৎ করেই বাতিল করে দেয়া হয়। টুইটারের পরিবেশ স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত সেখানে কতজন কর্মী কাজ করছেন তা বলা রীতিমতো চ্যালেঞ্জ।
বাইজু’স : শুধু যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোতেই ছাঁটাইয়ের ঘটনা ঘটেনি। ভারতের বিস্তৃত প্রযুক্তি খাতেও ছাঁটাই চলেছে। এর মধ্যে ভারতের টেকজায়ান্ট বাইজু’সে অক্টোবরে আড়াই হাজার কর্মী ছাঁটাই করা হয়েছে; যা কোম্পানিটির মোট জনবলের ৫ শতাংশ।
পেলোটন : যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানি পেলোটন দামি প্রযুক্তি সরঞ্জাম তৈরি করে থাকে। এ কোম্পানিটিও বছরজুড়ে কর্মী ছাঁটাই করেছে। লকডাউনের সময় কোম্পানিটি শক্তিশালী প্রবৃদ্ধির মধ্যে থাকলেও এখন তা নিম্নমুখী। এ অবস্থায় মুনাফা ধরে রাখতে কোম্পানিটি কর্মী সংখ্যা কমাতে শুরু করেছে।
এত কর্মী ছাঁটাই কেন?
যুক্তরাষ্ট্রের আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান গোল্ডম্যান স্যাকসের এক গবেষণায় বলা হয়েছে, উচ্চ সুদের হার ও কঠিন আর্থিক পরিস্থিতি প্রযুক্তি কোম্পানির ওপর প্রভাব ফেলেছে। এ ছাড়া বিজ্ঞাপন থেকে আসা আয় কমে যাওয়ার পাশাপাশি ক্রিপ্টোকারেন্সির বিস্ফোরণও কোম্পানিগুলোকে কর্মী ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে প্রভাবিত করেছে।
অর্থনীতিতে কেমন প্রভাব ফেলছে?
এখানে প্রশ্ন হচ্ছে, এত ছাঁটাই হলেও এর প্রভাব কেন এতটা অনুভূত হচ্ছে না? প্রথমত, আমেরিকার মোট জনশক্তির মাত্র তিন শতাংশ প্রযুক্তি খাতে কাজ করে। এ ছাড়া প্রযুক্তি খাতের যেসব কর্মী কাজ হারিয়েছেন, তারা আবার খুব অল্প সময়ের মধ্যেই নতুন কোথাও নিয়োগ পেয়েছেন।