ঢাকা ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

এআই প্রেমিকা বাড়াচ্ছে পুরুষের একাকিত্ব

এআই প্রেমিকা বাড়াচ্ছে পুরুষের একাকিত্ব

যুক্তরাষ্ট্রে হঠাৎই বাড়ছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) তৈরি প্রেমিকার সংখ্যা। এতে পুরো এক প্রজন্মের তরুণদের মধ্যে একাকিত্বের নীরব মহামারি দেখা দিতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। এআই প্রেমিকার প্রভাব নিয়ে সম্প্রতি বিজনেস ইনসাইডারে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়। ওলিন বিজনেস স্কুলের ডেটা সায়েন্সের অধ্যাপক লিবার্টি ভিত্তার্তের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, এআই প্রেমিকার সহজলভ্যতার কারণে পুরুষরা বেশি করে একাকিত্বের দিকে ধাবিত হচ্ছেন। অধ্যাপক ভিত্তার্ত তার ১৮ বছর বয়সি শিক্ষার্থীদের জিজ্ঞেস করেন, তারা কোনো ধরনের সামাজিকমাধ্যম ব্যবহার করেন। তাকে চমকে দিয়ে তার একছাত্র বলেন, তার এআই প্রেমিকা আছে। ভিত্তার্ত বলেন, ‘সে এত খোলামেলাভাবে বলল যে, আমি অবাক হয়ে গেছি। এআই প্রেমিকা তৈরির চল বেশ কয়েক বছর ধরেই চলছে। তবে ইদানীং এটির প্রবণতা এত বেড়েছে যে মানুষ এখন এআই প্রেমিকা নিয়ে আলোচনা করতে আগ্রহী।’ এমন অনেক অ্যাপ আছে যেখানে এ ভার্চুয়াল প্রেমিকারা আপনার সঙ্গে কথা বলবে, ভালোবাসবে এবং ‘নিখুঁত’ সম্পর্ক তৈরি করতে চাইবে। এমনই এক জনপ্রিয় অ্যাপ রেপ্লিকা। এর রয়েছে এক কোটির মতো ব্যবহারকারী। বৈশ্বিক মহামারির সময় এর ব্যবহার ৩৫ শতাংশ বেড়ে যায়। রেপ্লিকার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ব্যবহারকারীরা এআই প্রেমিকার প্রেমে পড়ার, সম্পর্কে জড়ানোর, এমনকি এআই সঙ্গীকে বিয়ে করার কথা পর্যন্ত বলেছেন। অধ্যাপক ভিত্তার্ত বলেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার এ প্রেমিকাগুলো আপনার সব ধরনের চাহিদা মেটাতে সক্ষম। ‘এটাকে ঠিক ভার্চুয়াল প্রেমিকা বলা যায় না। এটি এমন এক প্রেমিকা যে আপনার কাছ থেকেই আপনার পছন্দ-অপছন্দ শেখে। এই এআই প্রেমিকাদের কোনো খারাপ দিন থাকে না, তাই পুরুষদের কাছে তাদের সঙ্গে তৈরি সম্পর্ক নিখুঁত মনে হয়। বাস্তব প্রেমের সম্পর্কের কোনো উত্থান-পতনের মুখোমুখি তাদের হতে হয় না।’ অধ্যাপক বলেন, মানুষ বাস্তব সম্পর্কের চেয়ে এ চ্যাটবটের সঙ্গে সম্পর্ক বেছে নিচ্ছেন। তিনি আশঙ্কা করছেন, এর কারণে অধিক পুরুষ একাই রয়ে যাবেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের জন্মহারও হ্রাস পেতে থাকবে। যুক্তরাষ্ট্রে সঙ্গীহীন নারীর তুলনায় সঙ্গীহীন পুরুষের সংখ্যা বেশি উল্লেখ করে অধ্যাপক বলেন, ‘এআই প্রেমিকাগুলো তরুণ প্রজন্মের পুরুষদের মধ্যে একাকিত্বের নীরব মহামারির সৃষ্টি করেছে। আমরা পুরুষের তুলনায় নারীদের বেশি সংখ্যক ঘনিষ্ঠ বন্ধু বা বড় বন্ধু বলয় থাকার কথা শুনি।’ ভিত্তার্তের মতে, পুরুষদের মতো নারীরা মানসিকভাবে ‘এআই লাইফস্টাইলের’ শিকার হন না। ২০২২ সালে পিউ রিসার্চ সেন্টারের তথ্য অনুসারে, ৬৩ শতাংশ পুরুষই সঙ্গীহীন। অথচ সঙ্গীহীন নারীদের হার ৩৪ শতাংশ।

প্রতিবেদনে বলা হয়, নারীদের তুলনায় পুরুষের ঘনিষ্ঠ বন্ধুর সংখ্যা কম। ভিত্তার্ত বলেন, ‘গত কয়েক বছরে এআই প্রেমিকার প্রাদুর্ভাব উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। এরা বেশ দ্রুত উন্নতও হয়ে উঠছে। এআই প্রেমিকাদের এখন শুধু মেসেজই নয় ছবিও পাঠানো যায়। এর ফলে শারীরিক এবং আবেগের দ্রুত মিশ্রণ ঘটছে।’

আলোকিত বাংলাদেশ
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত