মহাকাশ কক্ষপথে ভেঙে পড়েছে অ্যারোপ্লেন ও নভোযান নির্মাতা কোম্পানি বোয়িংয়ের নকশা ও নির্মাণ করা একটি যোগাযোগ স্যাটেলাইট। ‘আইএস-৩৩ই’ নামের এ স্যাটেলাইটটি ‘পুরোপুরি ভেঙে পড়ার’ খবর নিশ্চিত করেছে এর অপারেটর কোম্পানি ইনটেলস্যাট, যার ফলে তাদের ইউরোপ, আফ্রিকা ও এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের কিছু অংশের গ্রাহক সেবায় সমস্যা দেখা দিয়েছে।
কোম্পানিটি আরো বলছে, এ ঘটনার ‘বিস্তারিত তদন্তের’ জন্য তারা বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। সাম্প্রতিককালে একাধিক জায়গায় সমস্যার মুখে পড়েছে বোয়িং। এর মধ্যে রয়েছে কোম্পানির বাণিজ্যিক প্লেন ব্যবসায় নিষেধাজ্ঞা ও স্টারলাইনার রকেট সংশ্লিষ্ট জটিলতার মতো বিষয়গুলো।
‘স্যাটেলাইটটির ডেটা ও পর্যবেক্ষণগুলো বিশ্লেষণের জন্য আমরা এর নির্মাতা কোম্পানি বোয়িং ও বিভিন্ন সরকারি সংস্থার সঙ্গে কাজ করছি,’ বলেছে ইনটেলস্যাট। তবে, বিষয়টি নিয়ে বোয়িং বিবিসি’র কাছে সরাসরি মন্তব্য না করলেও এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছে মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের স্পেস-ট্র্যাকিং ওয়েবসাইট ‘স্পেস্টট্র্যাক’।
‘ইউএস স্পেস ফোর্সেস (ইউএসএসএফ)’ বলেছে, তারা এখন স্যাটেলাইটটির ‘প্রায় ২০টি টুকরা ট্র্যাক করে’ দেখছে। এদিকে, জুন মাসে নাসার দুই নভোচারী সুনিতা উইলিয়ামস ও বুচ উইলমোরকে নিয়ে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে গিয়েছিল বোয়িংয়ের স্টারলাইনার নভোযান। কিন্তু কারিগরি জটিলতার কারণে তাদের ফেলে রেখেই পৃথিবীতে ফেরত আসে নভোযানটি। সামনের বছর ইলন মাস্কের রকেট কোম্পানি স্পেসএক্স-এর একটি নিয়মিত নভোযানে তাদের পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনার পরিকল্পনা করেছে নাসা। অন্যদিকে, সেপ্টেম্বর থেকে বোয়িংয়ের বাণিজ্যিক প্লেন ব্যবসার ৩০ হাজারের বেশি কর্মী ধর্মঘটে যোগ দিয়েছে, যেখানে বুধবার কোম্পানির সাম্প্রতিক প্রস্তাবনা নিয়ে ভোটাভুটি করার কথা ইউনিয়ন সদস্যদের। নতুন এ প্রস্তাবে সামনের চার বছরে কর্মীদের বেতন ৩৫ শতাংশ বাড়ানোর কথা উল্লেখ রয়েছে বলে উঠে এসেছে বিবিসি’র প্রতিবেদনে। গত সপ্তাহে, বোয়িং ঘোষণা দিয়েছে, তারা সাড়ে তিন হাজার কোটি ডলারের নতুন তহবিল খুঁজছে। এমনকি নভেম্বর থেকে নিজেদের প্রায় ১৭ হাজার কর্মীর ছাঁটাই শুরু করার কথাও বলেছে কোম্পানিটি, যেটি কোম্পানির মোট কর্মী সংখ্যার প্রায় ১০ শতাংশ। জুলাই মাসে এক মামলায় অসাধুপন্থার দায় স্বীকার করে অন্তত ২৪ কোটি ৩৬ লাখ ডলার জরিমানা দিতেও রাজি হয়েছে বোয়িং, যেখানে মামলায় কোম্পানির বিরুদ্ধে ২০২১ সালের এক চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগ ছিল। এ চুক্তির সঙ্গে দুটি ৭৩৭-ম্যাক্স প্লেন জড়িত, যেখানে পাঁচ বছরেরও বেশি সময় আগের এক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান ৩৪৬ জন যাত্রী।