তথ্যপ্রযুক্তির কল্যাণে অনেক কিছু এখন সহজ হয়ে গেছে। বিশেষ করে দ্রুত যোগাযোগ, যে কোনো তথ্য তাৎক্ষণিক হাতের মুঠোয় চলে আসা, কেনাকাটা ও দাম মেটানোসহ জীবনযাপনের গুরুত্বপূর্ণ বহু কাজ এখন প্রযুক্তিনির্ভর হয়ে পড়েছে। সুবিধার পাশাপাশি এসব কাজে সাইবার ঝুঁকিও দিন দিন বাড়ছে। আগে কম্পিউটারে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়া ছিল একমাত্র ঝুঁকি। এখনকার ঝুঁকিগুলো বিচিত্র, ক্ষেত্রবিশেষে ভয়াবহ। সাইবার ফাঁদে পড়ে অনেকে নিস্ব হয়েছেন, সে খবরও পাওয়া যায়। ডিজিটাল দুনিয়ার সেসব সাইবার ফাঁদ থেকে বাঁচতে কিছু বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে। ডিজিটাল যে কোনো সেবা ব্যবহারের ক্ষেত্রে থাকতে হবে সজাগ। কী কী উপায়ে আপনাকে ফাঁদে ফেলা হতে পারে, সেসব বিষয়েও সম্যক ধারণা থাকতে হবে।
১. শক্তিশালী পাসওয়ার্ড ব্যবহার করা : দুর্বল পাসওয়ার্ড ব্যবহার সাইবার আক্রমণের ঝুঁকি বাড়ায়। বিভিন্ন অনলাইন অ্যাকাউন্টে শক্তিশালী ও ভিন্ন ভিন্ন পাসওয়ার্ড ব্যবহার করা উচিত। পাসওয়ার্ডে ছোট-বড় হাতের অক্ষর, সংখ্যা ও বিশেষ চিহ্ন যুক্ত করার পরামর্শ দেয়া হয়।
২. দুই ধাপে যাচাইকরণ (টু ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন) চালু করা : অ্যাকাউন্ট নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দুই ধাপ যাচাইকরণ একটি কার্যকর পদ্ধতি। এতে অ্যাকাউন্টে প্রবেশের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত একটি ধাপ পার হতে হয়। যেমন মোবাইলের মাধ্যমে এককালীন পাসওয়ার্ড (ওটিপি) পাঠানো হয়।
৩. সফটওয়্যার এবং অ্যান্টিভাইরাস নিয়মিত আপডেট রাখা : পুরোনো সফটওয়্যার বা অ্যান্টিভাইরাসে নিরাপত্তা ত্রুটি থাকতে পারে, যা সাইবার হামলার সুযোগ তৈরি করে। নিয়মিত আপডেট করার মাধ্যমে ত্রুটিগুলো দূর করা সম্ভব।
৪. সন্দেহজনক লিংক বা ই-মেইল এড়িয়ে চলা : ফিশিং ই-মেইল বা সন্দেহজনক লিংকের মাধ্যমে প্রতারণার ফাঁদে ফেলা হয়। এসব লিংক আসতে পারে হোয়াটসঅ্যাপেও। পরিচিত উৎস থেকে না এলে বা সন্দেহজনক মনে হলে লিংকগুলো এড়িয়ে চলা উচিত।
৫. পাবলিক ওয়াই-ফাই ব্যবহারে সতর্কতা : পাবলিক ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্ক সাধারণত নিরাপদ নয়। এসবে হ্যাকারদের আক্রমণের ঝুঁকি বেশি থাকে। প্রয়োজন হলে ভিপিএন ব্যবহার করা নিরাপদ বিকল্প।
৬. ব্যক্তিগত তথ্য শেয়ারিংয়ে সতর্কতা অবলম্বন : সোশ্যাল মিডিয়া বা অনলাইনে অতিরিক্ত ব্যক্তিগত তথ্য শেয়ার করা উচিত নয়। কারণ এসব তথ্য সাইবার অপরাধীরা ব্যবহার করতে পারে।
৭. নিরাপত্তা সম্পর্কিত নিয়মিত শিক্ষা ও সচেতনতা বৃদ্ধি : সাইবার নিরাপত্তা সম্পর্কে নিজে সচেতন থাকা এবং পরিবারের সদস্য বা সহকর্মীদের এ বিষয়ে শিক্ষা দেয়া গুরুত্বপূর্ণ।
যা করবেন- হ্যাক হয়েছে টের পেলে অ্যাপটি আন-ইনস্টল করে ফেলবেন। তারপর নতুন করে ইনস্টল করবেন। এ ক্ষেত্রে বেশ কয়েক ঘণ্টা সময় লাগতে পারে। যদিও ওই সময়ের মধ্যে হ্যাকাররা চাইলে আপনার অ্যাপের সব তথ্য ডাউনলোড করে সংরক্ষণ করতে পারে। তাই হোয়াটসঅ্যাপের কোনো তথ্য গুগলড্রাইভ বা আইক্লাউডে ব্যাকআপ না রাখাই নিরাপদ।
বিশেষ সতর্কতাণ্ড প্রাতিষ্ঠানিক বা করপোরেট নম্বরের হোয়াটসঅ্যাপে কোনো অস্বাভাবিক লিংক পেলে বা হ্যাক হলে প্রতিষ্ঠানটির প্রযুক্তি শাখায় যোগাযোগ করবেন। নয়তো ওই লিংকে ক্লিক করলে তা পুরো অফিসের সব সহকর্মীর হোয়াটসঅ্যাপে পৌঁছে যেতে পারে। এতে সবাই বিব্রত হতে পারেন।