তারেক হাসানের কবিতা

প্রকাশ : ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

আশ্রয়হীনা অতিথি পাখি

অতিথি পাখির মতো এ শহরে এসেছিলাম

একটা নিরাপদ ঝিলের খোঁজে, যদি আশ্রয় মিলে

কিন্তু অনেক জলাশয় দেখলাম, শুকিয়ে গেছে আবেগে

আবার কিছু জলাশয় বিশাক্ত মনে হলো ঘোলা জলে।

এ পাখির আশ্রয় কোথাও হয়না, কোকিল কন্ঠ নেই বলে,

এ পাখির জন্য কারো মনে ভালোবাসার জন্ম হয় না

কারণ তার নিজের একটা বাড়ি নেই বলে।

এ শহরে ভালোবাসা পরিমাপ করা হয় সুশ্রীর নিক্তিতে

তাই এ ফিঙে পাখির কপালে ভালোবাসার আশ্রয় মেলেনি,

তাই তো আজ হাসি মুখেই নিচ্ছে বিদায় শুভকামনায়

এ শহরের মানুষগুলো যেনো স্বপ্ন নিয়ে ভালো থাকে।

নরকে জ্বলছি

স্বর্গে যাচ্ছো যাও, ফিরাব না তোমায়

শান্তির শীতলপাটিতে বিছানো আছে নকশি কাঁথা

দেহটাকে এলিয়ে স্বস্তির নিঃশ্বাস নিয়ে শান্তিতে

ঘুমাতে পারো, সেখানে তোমার জন্য অপেক্ষায় আছে

সবুজ বৃক্ষরাজি, ছায়া দিবে, দিবে শুশীতল বাতাস।

তোমার জন্য অপেক্ষায় থাকবে সুরালা কণ্ঠের শিল্পীরা

শুনাবে গান বাদ্যযন্ত্রের তালে যখন যেভাবে চাও,

যা তুমি জীবনেও স্পর্শ করনি, সেটাও পাবে

সাজানো শরাবের পেয়ালা তোমার ঠোঁটের কাছে

মন আনন্দের জন্য বাইজি নাচ অঙ্গভঙ্গিতে।

তোমার জন্য অপেক্ষায় আছে ফসলের মাঠ

ক্ষুধা লাগার আগেই তার শস্য তোমার সামনে,

পাখিরা তোমার সাথে কথা বলবে মনের সুখে

নহর রয়েছে বিছানার কাছে তৃষ্ণা মেটাতে

যদি চাও চরণ ভেজাতে, দেখবে তোমার চরণের নিচে

হামাগুড়ি খাচ্ছে ঝরনা জলের ধারা প্রতিনিয়ত।

তোমার জন্য অপেক্ষায় আছে সুদর্শন যুবক

কামুকের দেহে যন্ত্রণা নিবারণে প্রস্তুত।

তোমার জন্য অপেক্ষায় নেই শুধু আমি

আমি আমার অপেক্ষায় আছি নরকে

কারণ আমি নরকের আগুনে দাউদাউ

করে জ্বলছি, আর দেখছি তোমার স্বর্গের সুখ।

হগ্গল দোষ আমার

তোরে আমি কোনো দোষ দিই না

হগ্গল দোষ আমার- হেই তোরে কইছি!

মেলা খিদা ছিল পেটে; কিন্তু ঘরে চাইল আছিল না

কেউ যাতে বুঝবার না পায়, তাই ঘুমের ওষুধ খাইয়া

দরজায় তালা দিয়া ভেতরে হারাদিন ঘুমাইছি

বুঝবার দিই নাই আমি না খাইয়া আছি।

হগ্গল দোষ আমার! নিজের চুলা জ্বলেনি

তোরে অভাব বুঝবার দিই নাই, যা লাগছে দিছি

কিন্তু তুই আমার কষ্ট কোনোদিন বুঝবার চাইছসনি?

আমার ভালোবাসার কোনো কমতি ছিল না।

তুই আমারে অযথা বকছিস আমি কিছুই মনে করি নাই

বোকার মতো কষ্ট চাপা মনে, হাইসা সব উড়ায় দিছি

যাতে তুই কষ্ট না পাছ, তুই সুখে থাকস।

আরে-ভাই! প্রেম-ভালোবাসা কি আমার মতো

গেঁয়ো মূর্খ মাইনষের মানায়, তাই তোর বকাগুলানকে

আসমান সমান সুখ মনে কইরা হজ্ঞল কিছু ভুইলা গেছি,

যদি তুই একটা দিনও ভালো থাহস এই আর কি!

যাই হোক তোর ভালো থাকবার লাগি, তুই ভালো থাক

তুই না কস ঐ আমার উপর-আলা তো দেখছে

তাই হগ্গল কিছু ভুইলা গেছি তুই যেনো সুখেই থাহিস

এহন তহন হারাটা জীবন নয়া চাঁন্দের মতন।