আলোর মুখ দেখেনি কবি শামসুর রহমান স্মৃতি গ্রন্থাগার

একেএম রেজাউল করিম

প্রকাশ : ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

বাংলা সাহিত্যের প্রধান কবি শামসুর রাহমানের পৈতৃক ভিটা নরসিংদীর রায়পুরার উপজেলার পাড়াতলী গ্রামে। তারই স্মৃতিতে পাড়াতলী কলিম উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ে ২০০৯ সালে নির্মিত হয় কবি শামসুর রাহমান স্মৃতি গ্রন্থাগার। কবির মৃত্যুর পর এলাকায় তার স্মৃতি বাঁচিয়ে রাখতে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে জেলা পরিষদ নির্মাণ করে এই গ্রন্থাগারটি। ওই সময় মন্ত্রণালয় থেকে বেশ কিছু বই ও আসবাপত্র পাওয়া গিয়েছিল। কিছু চেয়ার- টেবিল এখনো অবশিষ্ট থাকলেও বইয়ের কোনো হদিস নেই। গত ১৪ বছর ধরে এটি তালাবদ্ধ। এর দেখভালের দায়িত্ব যে কার, সেটিও কেউ জানেন না। ফলে ১৪ বছরেও আলোর মুখ দেখেনি গ্রন্থাগারটি।

বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলছে, কবি শামসুর রাহমানের নামে গ্রন্থাগারটি বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে নির্মিত হলেও এর কোনো কর্তৃত্ব তাদের হাতে নেই। বিদ্যালয়ের নিজস্ব একটি লাইব্রেরি আছে, যেখানে তাদের শিক্ষার্থীরা জ্ঞানচর্চা করে থাকে।

কবি শামসুর রাহমানের পৈতৃক বাড়ি পাড়াতলী গ্রামে। এই গ্রামের সঙ্গে তার অনেক স্মৃতি জড়িয়ে আছে। ১৯৭১ সালের এপ্রিল মাসের এক দুপুরে বাড়ির পুকুর পাড়ে বসে তিনি লিখেছিলেন অমর দুটি কবিতা ‘স্বাধীনতা তুমি’ ও ‘তোমাকে পাওয়ার জন্য হে স্বাধীনতা’।

বিদ্যালয়টির সাবক-বর্তমান শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বলেন, কোনো জনবল না থাকায় প্রতিষ্ঠার পর অল্প কিছুদিন চালু ছিল গ্রন্থাগারটি। সে সময় আসবাবপত্রে সুসজ্জিত গ্রন্থাগারটিতে বেশ কিছু বই ছিল। বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও স্থানীয় সচেতন মানুষ গল্প, কবিতা ও উপন্যাস পড়তে আসতেন। অল্প কিছুদিন পরই চিত্র বদলাতে শুরু করে, সেই থেকে এখন পর্যন্ত এটি তালাবদ্ধ। তবে ঠিক কি কারণে তালাবদ্ধ করা হয়েছিল, তা কেউ বলতে পারেননি। বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক তাজুল ইসলাম বলেন, গ্রন্থাগারটিতে কোনো বইপত্র নেই, সবসময় তালাবদ্ধই থাকে। এটি পরিচালনার দায়িত্ব আমাদের কাছে না থাকায় ভেতরে কি কি আসবাবপত্র আছে, তাও জানি না। তবে গ্রন্থাগারটি দ্রুত সচল করার দাবি করেন তিনি।

রায়পুরার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আজগর হোসেন বলেন, গ্রন্থাগারটি দেখভাল বিষয়ে কোনো পক্ষ থেকে কোনো নির্দেশনা পাইনি। এ বিষয়ে বিস্তারিত খোঁজ নিয়ে যা করণীয়, তা করা হবে বলে জানান তিনি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে কবি শামসুর রাহমানের ভাতিজা ও কেন্দ্রীয় যুবলীগের কার্যকরী সদস্য ব্যারিস্টার তৌফিকুর রাহমান বলেন, ২০০৯ সালে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় গ্রন্থাগারটি নির্মাণ করে দিলেও তা পরিচালনার দায়িত্ব সুনির্দিষ্টভাবে কাউকে দেওয়া হয়নি। এছাড়া দেখেশুনে রাখার জন্য কোনো জনবল নিয়োগ না দেয়ায় প্রথম থেকেই নানা ধরনের সমস্যা হচ্ছিল। পরবর্তীতে গ্রন্থাগারটি কোনো ধরনের ফান্ডও পায়নি।