আমি একজন বন্ধু খুঁজি
যার চোখে জল ছলছল মায়ার আহ্বান
জোয়ার-ভাটার খেলা চলে, প্লাবনে ভাসায়
তৃষ্ণা মেটায় চাহনি মাত্রই
একজন মানুষ খুঁজি অহর্নিশ
যে নিয়মিত চিঠি লিখবে আমাকে
যার চিঠির আগমনীতে ডাকপিয়নের সাইকেলের
ক্রিং ক্রিং শব্দে দুপুরের ভাতঘুম ভাঙবে
আর চিঠির প্রতিটি শব্দে বুকভরা প্রশান্তি মিলবে।
একজন সঙ্গী খুঁজি
যে শীতের ভোরে ঘরের কড়া নেড়ে
বলবে, ‘রেডি হও, চল কুয়াশা মাড়িয়ে সাইকেল চেপে
খেজুরের রস খেতে বেড়িয়ে পড়ি’।
আমি একজন বন্ধু খুঁজি
নির্ঘুম রাতে যে আমাকে জোছনা অবগাহন থেকে শুরু করে
আকাশের তারা গোনা, সপ্তর্ষিমণ্ডল- শুকতারা-সন্ধ্যাতারা, চেনাবে
ক্লান্তিতে যার কাঁধ হবে- হেলান দেয়ার দেয়াল।
আমি একটা বন্ধু খুঁজি,
আমার আবোলতাবোল ভাবনাগুলোতে পাশে রবে,
ডানপিটে স্বাভাবের হবে,
হঠাৎ করে বাড়ি এসে বলবে,
‘চলো সমুদ্র স্নানে যাই,
পাহাড় বেয়ে আকাশের বুকে জমে থাকা মেঘের ভেলা ছুঁয়ে আসি’।
এমন একটা বন্ধু খুঁজি
থাকবে না অভিমান অভিযোগের জায়গা একরত্তি,
বিন্দাস মনে বলবো নিজেদের মনের যত খুটিনাটি।
হারানোর থাকবে না ভয়,
রইবে না ছেড়ে যাবার অযুহাত নামক বাহানার পাঁয়তারা।
আমি একজন বন্ধু খুঁজি,
যার সান্নিধ্য আমায় দেবে সকল ব্যাকুলতা থেকে স্বস্তির অনুভূতি, জুড়ে রবে সফলতার তীব্র আকাঙ্ক্ষা হয়ে অগুনিত ব্যর্থতার ভীড়ে।
একজন বন্ধু খুঁজি
যার থাকবে না কোনো দ্বিধা, প্রতি উত্তর খুঁজবে না কোনো প্রশ্নের,
সহযাত্রী হবে নিঃস্বার্থ চিত্তে সীমাহীন দিগন্ত ছুঁয়ে দিতে।
এই শহর-গ্রাম-গঞ্জ পেরিয়ে
জগৎসংসারের অলি-গলিতে একজন বন্ধু খুঁজেছিলাম
যাকে আমার সকল অপ্রাপ্তি-প্রাপ্তি-ভাবনা, এই মন
সবকিছু লিখে দিয়ে যাব।
চলার পথে সহযাত্রী পেয়েছি, সঙ্গী পেয়েছি।
বন্ধু পাইনি কোনো
আচ্ছা বন্ধু দেখতে কেমন হয়!