ঢাকা ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

অনুগল্প

মায়াবিনী

আরিফ আনজুম
মায়াবিনী

আকাশটা একদিক থেকে একটু একটু করে লাল হচ্ছে। অন্যদিকে হালকা কালো চাদর বিছোনো। মাঠে কিছু মানুষের নানাবিধ ব্যস্ততা। শরীর চর্চায় মগ্ন। একঝাঁক পাখি উড়ে গেল মাথার ওপর দিয়ে। যেন এতটুকুও ক্লান্তির ছাপ লেগে নেই ওদের ডানায়। কে যেন পাশ দিয়ে যেতে যেতে প্রায় ফিসফিস করে বললো, ‘দু-চার কদম তো হাঁটা হলো। এবার বাড়ি ফিরে যাও। এই ঠান্ডায় বেশীক্ষণ বাইরে থেকো না।’ ফিরে যাবো কি না ভাবছি তখনই দেখি এক দল ছেলেমেয়ে কলকল করে এসে ঢুকলো মাঠে। হাত-পা ছড়িয়ে বসে পড়লো ঘাসের ওপর। জানি একটু পরই ওদের খিলখিল, হা হা রবে আন্দোলিত হবে এই বিশাল মাঠের বুকে ঝুঁকে থাকা রক্তিম আকাশ, ঝিরঝিরে বাতাস। খুব আনন্দ করবে, হুল্লোড় করবে সকলে মিলে। কতক্ষণ হুল্লোড় করবে তাও মোটামুটি আন্দাজ করতে পারছি না সঠিক। লম্বা একটা দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেললাম। একদিন আমারও এই বয়সটা ছিলো। আমিও রোজ বিকেলে এমনই সময়ে এসে বন্ধুদের সঙ্গে প্রবলভাবে মেতে উঠতাম এই মাঠের বুকে। বন্ধুদের পরে আমার জীবনে এলো রুবিনা। বন্ধুরা দূরে সরে গেল এক এক করে। রয়ে গেল শুধু রুবিনা। রুবিনাও একদিন... একঠায়ে দাঁড়িয়ে ডুবে ছিলাম পিছনে ফেলে আসা দিনগুলোয়। সহসা গুটিকতক রাতচরা পাখি উড়ে গেল মাথার ওপর দিয়ে। তখনই দেখলাম ধীরে ধীরে একটা একটা করে তারা ফুটে উঠেছে কালো আকাশের বুকে। এই সেদিনও রুবিনা বলেছিলো, ‘বেশি ঠান্ডা লাগিয়ো না। ভুলে যাচ্ছো কেন তোমার বয়স হয়েছে।’ আমাকে খুব ভালোবাসতো কি না। সহসা মনে হলো রুবিনা যেন এসে আঁচল উপুড় করে রাতটা নামিয়ে দিলো মাঠের বুকে। যেন আরও একটা নিঃসঙ্গ রাত নামিয়ে দিলো আমার এই একলা জীবনে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত