বই আলোচনা

আনন্দ আর দিশা জাগানো বই

আনিফ রুবেদ

প্রকাশ : ৩০ মার্চ ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

ঠিক যে, শিশু-কিশোরদের পাঠ্য বড়দেরও পাঠ্য। ধারণা করি, বড়রা এতে আনন্দ পাবেন আরও একটু বেশিই। শিশু-কিশোরদের বই ‘গাবগাছের ভূত ও ভয়ংকর রাত’ পড়লাম। লেখক শফিক আজিজ। প্রথমে ভেবেছিলাম বইয়ের নামটি কোনো একটি গল্পের নাম। কিন্তু তা নয়। দুটি গল্পের শিরোনাম নিয়ে তৈরি হয়েছে বইটির নাম। আবার, অনেকেই ভাবতে পারেন, বইটা বুঝি, ভূত-পেতিœ, জিন, পরী নিয়ে লেখা। মনে হতে পারে, এ বই পড়লে শিশুদের মনে ভয় ঢোকানো হবে। মনে হতে পারে, বইটা পড়লে শিশুমনে কুসংস্কার ঢুকিয়ে দেওয়া হবে। কিন্তু না, একেবারেই না। বরং ভূতের অলীক বিশ্বাস আর ভীতি থেকে বের হয়ে আসবে শিশুরা। বইটিতে সাতটি গল্প রয়েছে। সাতটি গল্পই লেখক কিশোর বয়সে লিখেছেন। ফলে কিছুটা কাঁচা ভাব থাকলেও রসের অভাব নেই। বরং নতুন আইডিয়া রয়েছে অনেকগুলোতে। ‘অনুতপ্ত’ গল্পে চিংড়ি মাছ নিয়ে একটি ব্যাপার আছে; ‘ভয়ংকর সে রাত’ গল্পে আছে, অন্ধকার রাত্রে চামচিকা ভুল করে মানুষের গালে এসে আঘাত করে চলে গেলে ভূত বিশ্বাসী মানুষ ভেবে নেয়- তাকে বুঝি ভূতে থাপ্পড় মেরে গেল। এ ব্যাপারগুলো বেশ মজার এবং নতুন। শিশুকে যুক্তিশীল হতে উৎসাহিত করবে বলেই মনে করি।

বইটির সবচে সুন্দর গল্প ‘মামণি’। গল্পটিতে পাঠের আনন্দ যেমন আছে তেমনিভাবে আছে গভীর চিন্তাও। এমন গভীর চিন্তাকে এতো সহজ ভাষায় প্রকাশ করতে পারা খুব সহজ ব্যাপার নয়। এর জন্য লেখক আলাদা করে ধন্যবাদ পাবার যোগ্য। গল্পটি শিশুদের আগে শিশুদের পিতামাতার পড়া দরকার। বইটি শিশু-কিশোরদের যুগ যুগ ধরে আনন্দ আর দিশা জোগাবে বলেই আমি মনে করি। ভালোবাসা লেখক শফিক আজিজ। বইটি ‘এবং মানুষ প্রকাশনী’ থেকে ২০২৪-এর বইমেলায় বেরিয়েছে। মূল্য রাখা হয়েছে ২০০ টাকা। প্রচ্ছদ শিল্পী : মনিরুজ্জামান পলাশ। বইটির বহুল প্রচার ও পাঠকপ্রিয়তা প্রত্যাশা করছি।