যে মানুষটা ভালো রাখার প্রতিজ্ঞায় হাত ধরে বলেছিল-
‘তোমাকে পথের শেষ অবধি সঙ্গ দেব’
আমি ভরসা করেছিলাম।
বলেছিল- যতই আসুক বাঁধা-বিপত্তি,
আমি থাকবো তোমার অনিবার্য ছায়া হয়ে
পথে যদি থাকে কাঁকড়া-বিছা, আমি নিয়ে যাব বাহুবন্ধনে আবদ্ধ করে।
পুরো আস্থায় চোখ বন্ধ করে তার পথে হাঁটতে শুরু করেছিলাম,
হ্যাঁ, অনেকটা পথ আমরা একসাথে চলেছি,
চলতি পথে কতই না খুনশুটি দুজনার মাঝে,
অভিমান হারিয়ে যেতো অনুরাগের ছোঁয়াতে।
চলতি পথে প্রতিটি বাঁকে হাজারো স্বপ্ন বুনেছি দুজনের কথোপকথনে
তোমার চোখের মায়া আমার কায়া হয়ে চলেছে প্রতিটি প্রতিটি ক্ষণ।
কিন্তু কথা রাখোনি, চলতি পথে হঠাৎ করেই হারিয়ে গেলে যোজন দূরে,
‘এভাবে নাকি আর পথ চলা যায় না’।
বললে, আমার পথচলা যে বড়ই এবরো-থেবরো,
নেই কোনো ল্যাম্পপোস্ট, আছে স্যাঁতস্যাঁতে গলি
আঁধারের গায়ে লেগে থাকা আহাজারি।
যে চোখে ছিলো-
এক হিমালয় প্রতিজ্ঞা সেখানে আজ ভর করেছে
এক সমুদ্র অবজ্ঞার ক্লান্তি
নেই একরত্তি ভালোবাসা, আছে অবজ্ঞা আর অবহেলা।
তুমি বললে, আগের বাঁক টুকু তোমার একাই চলতে হবে,
খুব ক্লান্তশ্রান্ত করুণার সুরে বললে,
আমাদের যুগল পথের সীমা-পরিসীমা এতটুকুই ছিল,
আমাকে আর পিছু ডেকো না।
কিন্তু আমি তো একলা পথ চলতে ভুলেছি সেই কবে
যখন হাতটা ধরে বলেছিলে, ছাড়ব না এ হাত, মৃত্যুবধি।
আচ্ছা, আমাদের পথটা কি খুবই কণ্টকাকীর্ণ ছিল?
তুমি কি বড্ড বেশি রক্তাক্ত হচ্ছিলে?
তাহলে কীভাবে চলব বাকি পথটুকু একাকী?
সঙ্গীহীন, গন্তব্যহীন জীবনে?
বারবার কেবলই কানে ভাসছে,
‘একাই পথ চলাই ঠিক হবে তোমার জন্য,
কোনোদিন হয়ত বুঝবে’
সেই থেকে আজও বুঝিনি আমি-
সাগর কখনও পুকুরকে আলিঙ্গন করে না,
কেবলই সাময়িক জল ধার দেয়।