পশ্চিম তীর, গাজা ও পূর্ব জেরুজালেম এলাকায় ইসরাইলের দখলদারিত্ব ঠেকাতে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিস-আইসিজে) মতামত চেয়েছে জাতিসংঘ। শুক্রবার জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব পাস হয়েছে। ১৯৬৭ সালের আরব-ইসরাইল যুদ্ধে পশ্চিম তীর, গাজা ও পূর্ব জেরুজালম দখল করে ইসরাইল। ২০০৫ সালে গাজা ভূখণ্ড থেকে নিজের বাহিনী সরিয়ে নিলেও মিসরের সঙ্গে জোট বেঁধে এই ভূখণ্ডের সীমান্ত এখনও নিয়ন্ত্রণ করছে ইসরাইল। আন্তর্জাতিক আদালত বা আইসিজে বিশ্বের বৃহত্তম আদালত এবং জাতিসংঘভিত্তিক একটি সংস্থা। তবে ফিলিস্তিন-ইসরাইল ইস্যুতে এই আদালত যে মতামত দেবে- গুরুত্বের বিচারে তা যথেষ্ট হলেও তবে সেই মতামত বা পরামর্শ বাস্তবায়নের ক্ষমতা আইসিজের নেই।
শুক্রবার জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে প্রস্তাবটি উত্থাপনের পর পরিষদের ১৯৩ সদস্যরাষ্ট্রের মধ্যে ৮৭টি প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয়, বিপক্ষে ভোট দেয় যুক্তরাষ্ট্রসহ ২৪টি সদস্যরাষ্ট্র এবং ভোট দেওয়া থেকে বিরত থাকে ৫৩টি রাষ্ট্র। ভোটের আগে জাতিসংঘে নিযুক্ত ইসরাইলের রাষ্ট্রদূত গিলাদ এরদান এক বিবৃতিতে বলেন, ‘নিজভূমিতে ইহুদিরা দখলদার কি-না- সেই সিদ্ধান্ত কোনো আন্তর্জাতিক সংস্থা নিতে পারে না। আদর্শগতভাবে দেউলিয়া ও রাজনৈতিক পক্ষপাতদুষ্ট জাতিসংঘের এই প্রস্তাব পুরোপুরি ভিত্তিহীন এবং অবৈধ।’
রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরাইল-ফিলিস্তিন দ্বন্দ্ব মেটাতে আন্তর্জাতিক আদালতের পরামর্শ কামনা করে যে প্রস্তাবটি শুক্রবার সাধারণ পরিষদে পাস হয়েছে, সেটির কাজ শুরু হয়েছিল প্রায় ১ মাস আগে। ইসরাইলের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইয়াইর লাপিদ সে সময় বৈশ্বিক নেতাদের এই প্রস্তাবের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেছিলেন, ‘এর মাধ্যমে চরমপন্থিরা উৎসাহিত হবে।’ ২০০৭ সালে এক সংক্ষিপ্ত গৃহযুদ্ধে ফিলিস্তিনের মধ্যপন্থি রাজনৈতিক দল ফাতাহকে পরাজিত করে গাজা ভূখণ্ডের দখল নেয় ইসলামপন্থি সশস্ত্রগোষ্ঠী হামাস। তারপর গত ১৫ বছরে হামাস ও ইসরাইলের মধ্যে তিনবার বড় ধরনের যুদ্ধ হয়েছে।
জাতিসংঘে ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত রিয়াদ মনসুর সাধারণ পরিষদের এই ভোট গ্রহণকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, ‘এমন এক সময় এই প্রস্তাব পাস হয়েছে যখন একটি চরম ডানপন্থি সরকার ইসরাইলের ক্ষমতায় আসীন হতে যাচ্ছে, যারা নিজেদের দখল কার্যক্রম বাড়াতে বদ্ধ পরিকর।’ ‘আমরা বিশ্বাস করি, আজ এই ভোটের ফলাফল যা ই হোক- আপনি যদি আন্তর্জাতিক আইন ও শান্তিতে বিশ্বাসী হন, তাহলে আপনি আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের পরামর্শকে সমর্থন করবেন।’
সূত্র : রয়টার্স