ভারতে ক্ষমতাসীন বিজেপি সম্পর্কে নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন বলেছেন, ‘ভারত বলতে যা বোঝায়, বিজেপি সেই পরিসরকে ছোট করে দিয়েছে। বিজেপি প্রবলভাবে এক হিন্দু ভারত এবং শুধু হিন্দি বলা ভারতের জন্ম দিয়েছে। এটা খুবই দুঃখজনক হবে, যদি বিজেপিবিরোধী কোনো শক্তি এই দেশে উঠে না আসে।’
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন শনিবার প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে এ মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, এই সময়ে বিজেপিকে অত্যন্ত শক্তিশালী মনে হলেও তাদের অসংখ্য দুর্বলতাও রয়েছে। এই দুর্বলতার প্রশ্নেই তিনি বলেন যে, এখানে ভারতের আঞ্চলিক দলগুলোর বড় ভূমিকা পালনের সুযোগ রয়েছে। অমর্ত্য সেন এই সাক্ষাৎকার দিয়েছেন সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে। অমর্ত্য সেন মনে করেন, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভারতের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার যোগ্যতা রয়েছে।
অধ্যাপক অমর্ত্য সেন বলেছেন, ‘এই নয় যে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের যোগ্যতা নেই। অবশ্যই তাঁর যোগ্যতা রয়েছে দেশের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার। কিন্তু এটা এখনও প্রমাণিত হয়নি যে, বিজেপির বিরুদ্ধে মানুষের যে গভীর ক্ষোভ, তাকে এক জায়গায় আনতে (তিনি) পারবেন কি-না। যাতে এই যে বিভাজনের রাজনীতি চলছে, সেই রাজনীতিকে তিনি একটা নেতৃত্ব দিতে পারেন।’
অমর্ত্য সেন বলেন, ‘অনেক দল রয়েছে যেমন (তামিলনাড়ুর) ডিএমকে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল কংগ্রেস বা (উত্তর প্রদেশের) সমাজবাদী পার্টি। এসব দলের একটা অবস্থান রয়েছে; কিন্তু সেটাকে তারা ভবিষ্যতে আরও শক্তিশালী করতে পারবেন কি-না, তা আমি বলতে পারব না। আমি এটুকুই শুধু বলতে পারি যে, আমি এই বিষয়ে যথেষ্ট জানি না, যার ভিত্তিতে আমি বিজেপিবিরোধী শক্তিকে খারিজ করে দেব।’
কংগ্রেসের বিষয়ে একই সঙ্গে দুটি কথা বলেছেন অধ্যাপক সেন। একদিকে তিনি বলেছেন, কংগ্রেস যেভাবে দুর্বল হয়েছে, সেই পরিস্থিতিতে তাদের ওপর মানুষ কতটা আস্থা রাখবে, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। আবার একই সঙ্গে এ-ও জানিয়েছেন, বিজেপি যখন ভারত সম্পর্কে সামগ্রিক ধারণাটাই ভেঙে দিচ্ছে, তখন কংগ্রেস ছাড়া অন্য কোনো রাজনৈতিক দলের পক্ষে জাতীয় স্তরে দিকনির্দেশনা দেওয়া মুশকিল। তার মতে, কংগ্রেস এখনও যা পারে, সেটা অন্য কোনো আঞ্চলিক দল পারবে না। দেশ চালাতে সংকীর্ণতার ঊর্ধ্বে উঠে সামগ্রিক দৃষ্টিভঙ্গি থাকা প্রয়োজন এবং এই দৃষ্টিভঙ্গি শুধু কংগ্রেসেরই রয়েছে বলে সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন অধ্যাপক সেন।