ঢাকা ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

বেকায়দায় যুক্তরাষ্ট্র

পুতিন এরদোয়ান বাশার সমাঝোতা

অধ্যাপক শাব্বির আহমদ
পুতিন এরদোয়ান বাশার সমাঝোতা

সিরিয়ায় ১২ বছর ধরে চলা রক্তক্ষয়ী গৃহযুদ্ধের অবসান ঘটানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এই উদ্যোগে শামিল হয়েছে সিরিয়া, রাশিয়া ও তুরস্ক। তুরস্ক, রাশিয়া ও সিরিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রীরা গত ২৮ ডিসেম্বর মস্কোয় বৈঠক করেছেন। বৈঠক শেষে তিন দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রীরা আলোচনা অত্যন্ত ফলপ্রসূ হয়েছে বলে জানিয়েছেন। খবরে প্রকাশ, খুব শিগগির তিন দেশের রাষ্ট্রপ্রধান চূড়ান্ত শান্তি স্বাক্ষরের লক্ষ্যে মিলিত হবেন। পুতিন-এরদোয়ান-বাশার সমাঝোতায় পৌঁছার খবরে চরম বেকায়দায় পড়ে গেছে মার্কিন নীতিনির্ধারকরা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে যে মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে ছিল মার্কিনিদের একচ্ছত্র আধিপত্য, সেই মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রকে বাদ দিয়ে সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ অবসানে শান্তিচুক্তি সম্পাদন থেকে সহজেই বুঝা যায় মধ্যপ্রাচ্যে তাদের অবস্থান সময়ের ব্যবধানে কত তলানিতে! ২০১১ সালে মূলত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যক্ষ মদদে বাশার আল আসাদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের সূত্রপাত হয়েছিল এবং পরে যুক্ত হয় তুরস্ক, সৌদি আরব ও আরব আমিরাত।

আসাদবিরোধী শক্তিশালী বিদ্রোহী দল ফ্রি সিরিয়ান আর্মি (এফএসএ) তুরস্কের সহায়তায় গঠিত হয়েছিল। ২০১২ সালের শেষের দিকে বিদ্রোহীরা দামেস্কের দোরগোড়ায় পৌঁছে গিয়েছিল এবং বিদ্রোহীদের কামানের গোলা প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের প্রতিরক্ষা দেয়ালে আঘাত হানছিল। তখন মনে হয়েছিল দামেস্কের পতন কেবল সময়ের ব্যাপার। কিন্তু না, তা হয়নি। হঠাৎ যুদ্ধের মোড় পাল্টাতে লাগল। সিরিয়ায় ক্ষমতার ভারসাম্য পরিবর্তিত হতে থাকে খুব দ্রুতগতিতে। শুরু হয় নতুন নতুন মেরুকরণ। এটি কেবল একটি সরকারের সঙ্গে বিদ্রোহীদের লড়াইয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকেনি। আমেরিকান, ইরান, রাশিয়া, তুরস্ক মাঠে থাকলেও অনেকে প্রক্সি যুদ্ধে লিপ্ত হয়। প্রতিনিয়ত শত্রুমিত্রের সংজ্ঞা পরিবর্তিত হতে থাকে। মাঝখানে বলির পাঁঠা হয় সিরিয়ার নিরীহ জনগণ।

আসাদ সরকারের পতনের চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেও আমেরিকা কেন ইউটার্ন দিল, তিন মাসে শেষ হতে যাওয়া একটি ইস্যুকে কেন বার বছর পেছনে ঠেলে দেওয়া হলো, কেন তিনভাগের একভাগ সিরিয়াবাসীকে দেশ ছেড়ে পালাতে হলো, ছয় লাখ সিরিয়াবাসী কেন বলি হলো, মার্কিন তাঁবেদার কুর্দি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে তুর্কি অভিযানের পূর্ব মুহূর্তে হঠাৎ সিরিয়ায় মোতায়েন পাঁচ হাজার সেনার মধ্যে মাত্র এক হাজার সেনাকে তেল স্থাপনায় রেখে বাকি সেনাদের প্রত্যাহার নিয়ে শুধু সিরিয়ায় নয়, মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বব্যাপী মার্কিন ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ হয়। ফলশ্রুতিতে সিরিয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব গৌণ হয়ে পড়ে। বাড়তে থাকে রাশিয়া, তুরস্ক আর ইরানের প্রভাব।

পশ্চিমা ও মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক থিংকট্যাংকগুলোর কাছ থেকে পাওয়া তথ্য মতে, ২০১১ সালে আরব বসন্তের শুরু থেকেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিপ্লবের পক্ষে মেকি সমর্থন দিলেও অল্প সময়ের মধ্যে সিদ্ধান্ত পাল্টায়। ব্রাদারহুড আর সমমনা আরব স্বৈরাচারবিরোধী বিপ্লবী শক্তি ধ্বংস করার ছক আঁকতে শুরু করে। সৌদি-আমিরাতের প্রত্যক্ষ মদদে মিশরের সেনাপ্রধান সিসির সামরিক অভ্যুত্থানে ২০১২ সালের ৩ জুলাই কেবল মুরসির পতন ঘটেনি, বরং সেই সঙ্গে সিরিয়ার গণআন্দোলনের ভাগ্যই নির্ধারিত হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু তখন আর সিরিয়ার বিপ্লবী শক্তির পিছিয়ে আসার সুযোগ ছিল না। আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিশ্লেষকদের মতে, সিরিয়া সংঘাতে শুধু বৃহৎ শক্তিগুলোর পরোক্ষ ভূমিকাই যে প্রভাব ফেলছে তা বলা যায় না, বরং শিয়া-সুন্নি বিষয়টিও ভূমিকা পালন করছে। শাসকগোষ্ঠীর অধিকাংশই ‘শিয়া’ হলেও দেশটির সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণ সুন্নি। প্রেসিডেন্ট আসাদের সমর্থকরা শিয়া এবং বিদ্রোহীরা সুন্নিদের সমর্থন পাচ্ছে। ইরান, লেবাননের হিজবুল্লাহ আসাদের ঘোর সমর্থক।

অন্যদিকে আরব বিশ্বের অধিকাংশ দেশে এবং তুরস্কে সুন্নিদের আধিপত্য। তাই আসাদবিরোধীরা এসব রাষ্ট্র থেকে সহায়তা লাভ করে। গৃহযুদ্ধ লাগিয়ে আমেরিকাসহ পশ্চিমা জোট গভীর এবং সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা নিয়ে অগ্রসর হয়। ইসরাইলের সুরক্ষা নিশ্চিত করা তো আছেই, তার ওপর পশ্চিমা জোটের পরিকল্পনা ছিল দীর্ঘমেয়াদি শিয়া-সুন্নি যুদ্ধের ক্ষেত্র প্রস্তুত করা এবং মধ্যপ্রাচ্যের মানচিত্রে আরেকবার ছুরি চালানো। কারণ, প্রথম মহাযুদ্ধের পরে সাইকস-পিকট চুক্তির অধীনে প্রণীত একশ বছরের পুরোনো মধ্যপ্রাচ্যের মানচিত্র এখন তাদের স্বার্থ রক্ষা করতে পারছে না। তাই তুরস্ক, ইরাক আর সিরিয়াকে ভেঙে নতুন কুর্দি রাষ্ট্রের জন্ম দিয়ে আরেক তাবেদার রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেয়। অন্যদিকে ইয়েমেনের হুতিদের বিরুদ্ধে সৌদি আরবকে লেলিয়ে দিয়ে শিয়া-সুন্নি দ্বন্দ্বের নয়া ফ্রন্ট খোলা হয়। এভাবেই পশ্চিমারা মধ্যপ্রাচ্যে ভাঙা-গড়ার এক ভয়ংকর খেলায় মেতে ওঠে।

এমন সময়ে আইএস এর উত্থান সিরিয়া বিপ্লবের মোড়কে পুরোপুরিভাবে ঘুরিয়ে দেয়। পশ্চিমারা তো এমনিতেই বিপ্লবের পক্ষে ছিল না। এখন তারা বিরাট বাহানা খুঁজে পায়। আসাদ নয়, আইএসকে ধ্বংস করাই তাদের বাহ্যিক লক্ষ্য হয়ে দাঁড়ায়। সিরিয়াবাসীর মুক্তির লড়াইকে হ্যাক করে সন্ত্রাসবিরোধী লড়াইয়ের রূপ দেয়া হয়। সিরীয় বিদ্রোহীদেরকে, বিশেষ করে স্বাধীন কুর্দি রাষ্ট্রের লোভ দেখিয়ে কুর্দি মিলিশিয়াদের আইএসের বিপক্ষে দাঁড় করে দিয়ে দামেস্কে আসাদের অবস্থানকে সুকৌশলে মজবুত করে দেয়া হয়। বিদ্রোহী যোদ্ধাদের মধ্যে দেখা দেয় চরম বিশৃঙ্খলা।

কোন ফ্রন্টে তাদের লড়াই করা উচিত তা বুঝতে পারছিল না। শেষ পর্যন্ত সরকারি বাহিনী আর আইএস- এই দুই ফ্রন্টেই তাদের একই সময়ে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে হয়। ‘আইএস’ পর্ব শেষে নিশ্চিতভাবে প্রমাণিত হলো, ‘আইএস’ ট্রয় নগরীর কাঠের ঘোড়া ছাড়া আর কিছুই নয়।

সিরীয় সংকটে ২০১৫ সালে রাশিয়ার প্রত্যক্ষ হস্তক্ষেপ ছিল বিপ্লবের কফিনে সর্বশেষ পেরেক টোকার মতো। মধ্যপ্রাচ্যে সিরিয়া ছাড়া তাদের কদম ফেলার আর কোনো জায়গা নেই। সিরিয়া হাতছাড়া হলে সিরিয়ার তরতুসে অবস্থিত রাশিয়ার নৌঘাঁটির ভবিষ্যৎ চরম অনিশ্চয়তায় পড়ে যাবে। আসাদও বুঝতে পারল যে, তার মসনদ রক্ষা করার জন্য কেবল ইরানিরা যথেষ্ট নয়। বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত আলেপ্পো, ইদলিব, রাক্কা, আফরিনে ২০১৬ সালে রাশিয়ার প্রচণ্ড বিমান হামলার মুখে বিদ্রোহীদের টিকে থাকা অসম্ভব ছিল। যদি তাদেরকে বিমান বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করা হতো তাহলে হয়তো যুদ্ধের মোড় কিছুটা ঘুরানো সম্ভব হতো। কিন্তু আমেরিকা এক্ষেত্রে বেঁকে বসে। তারা এই সব অস্ত্র আইএসের হাতে চলে যাবার ভয় দেখায়। তুরস্ক অনেক তদবির করেও পশ্চিমাদেরকে রাজি করাতে পারেনি। রাশিয়ার প্রত্যক্ষ মদদে আসাদ বাহিনী ও শিয়া মিলিশিয়ারা আলেপ্পোসহ সুন্নি অধ্যুষিত এলাকায়, বিশেষ করে উত্তর সিরিয়ায় পোড়ামাটি নীতি অবলম্বন করলে তুরস্ক অভিমুখে সিরীয় শরণার্থীর ঢল ব্যাপক আকার ধারণ করে।

সুন্নিদের প্রতি সংবেদনশীল তুর্কি প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান এসময় জাতিসংঘের প্রতি উত্তর সিরিয়ায় ‘নো ফ্লাই জোন’ গঠন করার দাবি জানায়। কিন্তু আমেরিকা এখানেও ভেটো দেয়। ক্ষুব্ধ এরদোগান আমেরিকাণ্ডরাশিয়ার রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে আসাদবিরোধী মিলিশিয়াদের সঙ্গে নিয়ে ২০১৭ ও ২০১৮ সালে কুর্দি মিলিশিয়াদের বিরুদ্ধে সফল অভিযান পরিচালনা করে সিরিয়ার অভ্যন্তরে আফরিন ও আলেপ্পোতে সামরিক ঘাঁটি স্থাপন করে। সিরিয়া অভিমুখে সবচেয়ে দুঃসাহসিক অভিযানটি পরিচালনা করে ২০১৯ সালের নভেম্বর মাসে। এই অভিযানের উদ্দেশ্য ছিল সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে ‘সেফ জোন’ বা নিরাপদ অঞ্চল প্রতিষ্ঠা। এরদোয়ানের হুংকারের পর তদানীন্ত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আকস্মিক ইদলিব থেকে সেনাঘাঁটি প্রত্যাহারের ঘোষণা দিলে ক্ষুব্ধ কুর্দি মিলিশিয়ারা আসাদ বাহিনীর সহযোগিতা কামনা করে। যে কুর্দিরা আমেরিকার হয়ে আসাদের বিরুদ্ধ লড়েছে এতদিন তাদের সমর্থনে আসাদ বাহিনী ও হিজবুল্লাহ মিলিশিয়ারা দ্রুত এগিয়ে আসে সিরিয়ার অখণ্ডতা রক্ষার কথা বলে।

এ সময় আসাদ বাহিনী রাশিয়ার প্রত্যক্ষ মদদে তুর্কি সামরিক বহরে হামলা চালিয়ে ৩৩ সেনাকে হত্যা করলে তুরস্ক অত্যাধুনিক ড্রোন দ্বারা রাশিয়ার মোতায়েনকৃত আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে গুঁড়িয়ে দিয়ে সিরিয়ার গভীরেও হামলা চালিয়ে রাশিয়া-ইরানের প্রত্যক্ষ মদদপুষ্ট সিরিয়ান সামরিক শক্তি চূর্ণ করে দেয়। আমেরিকাণ্ডরাশিয়াসহ তাবৎ বিশ্ব বিস্ময়াভিভূত হয় তুরস্কের অভূতপূর্ব সামরিক সক্ষমতা দেখে। শুরু হয় তুরস্কের সামরিক শক্তি নিয়ে নতুন সমীকরণ। রাশিয়ার মধ্যস্থতায় যুদ্ধ বিরতির মধ্য দিয়ে আসাদ সরকার এ যাত্রায় রক্ষা পেলেও ক্ষতি হয় তাঁর বাহিনীর এবং হিজবুল্লাহ মিলিশিয়ার। তুর্কি বাহিনীর সফল এই অভিযান যেন এক ঢিলে দুই পাখি শিকার। একদিকে চিরশত্রু কুর্দিদের নিজ সীমান্ত থেকে বিতাড়ন, অন্যদিকে সুন্নি সংখ্যাগরিষ্ঠ সিরীয় শরণার্থীদের সিরিয়া-তুরস্ক ৪৮০ কিলোমিটার সীমান্তজুড়ে বসতি নির্মাণ করে দিয়ে সিরিয়ার অভ্যন্তরে ৩২ কিলোমিটার পর্যন্ত এলাকায় একটি ‘বাপার জোন’ গঠন করে নিজেদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ।

মূলত, সিরিয়া সংকটের জন্য পশ্চিমারা যতটুকু দায়ী সৌদি আরবের নেতৃত্বে আরব দেশগুলো ঠিক ততটুকুই দায়ী, হয়তো তার চেয়েও বেশি। ২০১৫ সালে সৌদি-আমিরাত সিরিয়া থেকে সটকে পড়লে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান একাই সুন্নিদের জন্য ত্রাতার ভূমিকায় অবতীর্ণ হন।

বর্তমানে সিরিয়ার ৭০ শতাংশের বেশি এলাকা নিয়ন্ত্রণ করছে প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের সরকার। বাকি অংশ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে কুর্দি, তুর্কি সমর্থিত সিরিয়ান ফ্রি আর্মি ও তুরস্কের নিয়ন্ত্রণে। এক যুগব্যাপী গৃহযুদ্ধ দেশটির জীবনব্যবস্থা, কর্মসংস্থান, অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দিয়েছে। আসাদ সরকারের বন্ধু বা শত্রু কারোরই হাতে এখন এমন শত শত কোটি টাকা নেই, যা দিয়ে সিরিয়াকে আবার গড়ে তোলা যাবে। ২০১৬ সাল থেকে রাশিয়া এবং ইরান সর্বশক্তি নিয়োগ করে আসাদের শেষ রক্ষা করতে সক্ষম হলেও তুরস্কের শক্ত অবস্থানের কারণে ২০১৮ সালের পর কোনো সফলতা পায়নি। বিপরীতে সিরিয়ার বিরাট এলাকায় নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে তুরস্ক।

আমেরিকার নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা জোটের মোকাবিলায় পুতিন কোনোভাবে এরদোয়ানকে হাতছাড়া করতে চাননি। তুরস্ককে ভাগে আনতে না পেরে এবং সিরিয়ায় তুরস্কের উপর্যুপরি সফল অভিযানের পর পুতিন ২০২১ সালে উদ্যোগ নেন তুরস্ককে সঙ্গে নিয়ে সিরিয়ায় শান্তি স্থাপনের। এরদোয়ান এবং আসাদের মধ্যকার মান অভিমান বুলাতে সময় লেগে যায় বেশ কিছুদিন। শেষ পর্যন্ত পুতিন-এরদোয়ান-বাশার সমাঝোতায় পৌঁছতে একমত হয়।

গত ২৮ ডিসেম্বর মস্কোয় রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রী সের্গেই শোইগু, তুরস্কের প্রতিরক্ষামন্ত্রী হুলুসি আকর, সিরিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী আলী মাহমুদ আব্বাসের মধ্যকার বৈঠক শেষে তিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী উপস্থিত সাংবাদিকদের তাঁদের রাষ্ট্রপ্রধানদের মধ্যকার সমাঝোতা স্মারকের দিনক্ষণ খুব শিগগির জানানো হবে বলে জানিয়েছেন।

এত আয়োজন সত্ত্বেও সিরিয়ার অনিশ্চিত গন্তব্য ঠিক কোন জায়গায় গিয়ে ঠেকবে- তা এই মুহূর্তে বলা বেশ কঠিন। কারণ, বর্তমান শান্তি প্রক্রিয়া যাতে সফল না হয় তার জন্যও চলছে নিরন্তর প্রচেষ্টা। তবে শান্তিপ্রিয় মানুষের প্রত্যাশা, শিগগির গৃহযুদ্ধ শেষে আবারও আগের মতোই প্রাণপ্রাচুর্যে ভরপুর হয়ে উঠুক ৬০০০ বছরের পুরোনো সভ্যতার দেশ ‘মুলকে শাম’ তথা আজকের সিরিয়া।

লেখক : কলামিস্ট ও আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিশ্লেষক

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত