উন্নয়নশীল দেশগুলোতে খাদ্য সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে কৃষ্ণসাগরের বন্দরগুলো দিয়ে ইউক্রেনের খাদ্যশস্য রপ্তানি উল্লেখযোগ্য পরিমাণ কমে গেছে। জাহাজে খাদ্যপণ্য রপ্তানির বিষয়টি পর্যবেক্ষণে দায়িত্বরত কর্তৃপক্ষ এ তথ্য জানিয়েছে। গত নভেম্বরে জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় ইউক্রেন ও তুরস্কের মধ্যে খাদ্যশস্য রপ্তানির চুক্তি নবায়ন হয়। আগামী মাসে আবার এই চুক্তি নতুন করে নবায়ন করতে হবে। এর মধ্যেই ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে রুশ হামলার বর্ষপূর্তি পালিত হবে। এ পরিস্থিতিতে খাদ্য চুক্তির ভবিষ্যৎ নিয়ে তৈরি হয়েছে উদ্বেগ।
ইস্তান্বুুলে জাতিসংঘ, রাশিয়া, ইউক্রেন ও তুরস্কের প্রতিনিধিরা যৌথভাবে জয়েন্ট কো-অর্ডিনেশন সেন্টারের অধীনে খাদ্যপণ্যবাহী জাহাজে নজরদারি করে থাকে। এই সেন্টারে জাতিসংঘসহ তিন দেশের পরিদর্শক রয়েছেন। তাঁদের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, গত ডিসেম্বরে ইউক্রেনের বন্দরগুলো থেকে ৩৭ লাখ মেট্রিক টন খাদ্যপণ্য রপ্তানি করা হলেও তা জানুয়ারিতে ৩০ লাখ টনে নেমে এসেছে। যে পরিমাণ খাদ্যপণ্য রপ্তানি কমেছে, তা কেনিয়া ও সোমালিয়ার মতো দেশের প্রায় এক মাসের খাদ্য খরচের সমান।
খাদ্যপণ্য রপ্তানি কমে যাওয়ায় ইউক্রেন সরকার রাশিয়াকে দোষারোপ করেছে। তাদের অভিযোগ, রাশিয়ার পরিদর্শকরা ইচ্ছাকৃতভাবে পরিদর্শন বিলম্বিত করে থাকেন। এর মাধ্যমে তারা কৃষ্ণসাগরের নিজস্ব বন্দর থেকে নিরবচ্ছিন্ন বাণিজ্য সুবিধা ভোগ করছে। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে রাশিয়া। তারা বলছে, অভিযোগ সত্য নয়।
দুই দেশের প্রতিনিধিত্বকারী দু’জন এক টেবিলে না বসে চুক্তিতে পৃথকভাবে সই করেন। বাঁ পাশে সই করছেন ইউক্রেনের অবকাঠামো বিষয়ক মন্ত্রী ওলেকসান্দার কুবরাকভ। তার অপর পাশে তুরস্কের প্রতিরক্ষামন্ত্রী হালুসি আকার। আর মাঝে ছিলেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস ও তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান। এমনকি অনুষ্ঠানে দুই দেশের পতাকাও পাশাপাশি ছিল না
কৃষ্ণসাগরের বন্দরগুলো দিয়ে শস্য রপ্তানি চুক্তি ঘিরে যে আশঙ্কা ছিল গত নভেম্বরে তা কেটে যায়। ওই সময় ইউক্রেন থেকে খাদ্যশস্য রপ্তানির চুক্তির মেয়াদ আরও চার মাস বাড়ানো হয়। শস্য ও তেলবীজ উৎপাদনকারী অন্যতম দেশ ইউক্রেন। কিন্তু যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ইউক্রেনের বন্দরগুলো দিয়ে শস্য রপ্তানি বন্ধ হয়ে যায়। গত বছরের জুলাইয়ে তুরস্ক ও জাতিসংঘের প্রচেষ্টায় রাশিয়া-ইউক্রেনের মধ্যে বন্দরগুলো দিয়ে শস্য রপ্তানি চুক্তি সম্পন্ন হয়। এর আওতায় বিশ্বজুড়ে খাদ্যঘাটতি পূরণে সমুদ্রপথে একটি নিরাপদ করিডর তৈরির কথা বলা হয়। এতে ইউক্রেনের তিনটি বন্দর থেকে নিরাপদে শস্য রপ্তানির পথ খুলে যায়।
সূত্র : দ্য গার্ডিয়ান