ঢাকা ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

‘আসামে মুসলিমরা আনন্দে আছেন’ মুখ্যমন্ত্রীর এমন বক্তব্যে সংখ্যালঘুদের তীব্র সমালোচনা

‘আসামে মুসলিমরা আনন্দে আছেন’ মুখ্যমন্ত্রীর এমন বক্তব্যে সংখ্যালঘুদের তীব্র সমালোচনা

রাজ্যে মুসলিমদের নিশানা করার অভিযোগে বিরোধীরা সোচ্চার হওয়ার মধ্যে গত শনিবার তিনি ওই মন্তব্য করেন। বিজেপি নেতা ও মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা বলেন, ‘মুসলিম ছেলেমেয়েরা এখন চাকরি-টাকরি পাচ্ছে। স্কুল-কলেজেও যাচ্ছে তারা। ফুর্তিতে আছে তারা।’

কিন্তু রাজ্যে সম্প্রতি বিরোধী দল কংগ্রেস ও এআইইউডিএফ বিধায়করা বলেছেন, টানা দ্বিতীয়বারের মতো ক্ষমতায় আসার পর থেকে মুসলিমদের টার্গেট করে একেরপর এক পদক্ষেপ নিয়ে চলেছে রাজ্য সরকার। যার ফলে শঙ্কিত মুসলিম জনগণ। তারা এ ব্যাপারে একনাগাড়ে উচ্ছেদ অভিযান এবং বাল্যবিবাহের ঘটনায় ব্যাপক ধরপাকড়ের বিষয়ে রাজ্য সরকারের তৎপরতার তীব্র সমালোচনা করেছেন।

আব্দুল মান্নান লস্করের সাক্ষাৎকার

এ প্রসঙ্গে আসামের হাইলাকন্দির বিশিষ্ট সমাজকর্মী আব্দুল মান্নান লস্কর রেডিও তেহরানকে দেয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী তো কিছু একটা বলতেই পারেন। ওনার বলার সেই স্বাধীনতা রয়েছে। উনি বলেছেন যে, মুসলিম ছেলেমেয়েরা উনার সঙ্গে ঘোরাফেরা করে, ওনাকে সমর্থন করে। সেটা হতে পারে ১ শতাংশ। এক হাজার জনের মধ্যে যদি একজনের উন্নয়ন হয়, সুযোগ-সুবিধা পায় সেটাকে আমরা উন্নয়ন বলি না। ১ হাজার জনের মধ্যে একজন যদি ফুর্তিতে থাকে সেটাকে আমরা সবার আনন্দ বলি না। মুখ্যমন্ত্রীর সেই বিষয়টা বোঝা উচিত। উনার সঙ্গে যারা যায়, সেই মানুষগুলো যাবে, যারা উনার কাছ থেকে কিছু ফায়দা পায় অর্থাৎ স্বার্থান্বেষী মানুষ। আজকে গোটা সংখ্যালঘু সমাজ উনার পলিসিকে, উনার বিভিন্ন পদক্ষেপকে ধিক্কার দিচ্ছে এবং প্রকাশ্যে ধিক্কার জানাচ্ছে। মুসলিম সমাজ, সংখ্যালঘু সমাজ উনার পদক্ষেপে মোটেও সন্তুষ্ট নয়। উনি যদি সেটাকে বিকৃত করে বিবৃতি দেন তাহলে সেটা উনার ব্যক্তিগত ব্যাপার। সমাজই সেটা বিবেচনা করবে। কিন্তু একজন সংখ্যালঘু সমাজের প্রতিনিধি হিসেবে আমরা সেটাকে একজন দায়িত্বশীল হিসেবে বলতে পারি, উনার পদক্ষেপে সংখ্যালঘু সমাজ মোটেই খুশি নন। বিভিন্ন সংখ্যালঘু বিরোধী পদক্ষেপ উনি গ্রহণ করছেন, আর বলছেন সংখ্যালঘুরা খুশি! যদি উনি পাগলের মতো কথা বলেন, তাহলে আমার কিছু করার নেই। কিন্তু একজন শিক্ষিত মানুষ হিসেবে, একজন সমাজের প্রতিনিধি হিসেবে সমাজের সব সদস্যের প্রতিক্রিয়াটা উনার মনে রাখা উচিত।’

তিনি আরও বলেন, ‘দেখুন উনি কখনও বলছেন, মিঞারা, মিঞা মানে মুসলিম, উনি মিঞাদের টার্গেট করছেন।

গোটা মুসলিম সমাজকেই টার্গেট করে কথা বলছেন। বিভিন্ন ঐতিহ্য, কৃষ্টি, কালচারকে নিয়ে তিনি হাসি-তামশা, মজা করছেন। আবার বলছেন সংখ্যালঘুরা খুশিতে আছেন! সেটা কষ্মিনকালেও নয়। উনি বিকৃত মানসিকতার পরিচয় দিয়েছেন বলেও মন্তব্য করেন অসমের হাইলাকন্দির বিশিষ্ট সমাজকর্মী আব্দুল মান্নান লস্কর।

* সূত্র : পার্সটুডে

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত