ইয়েমেন যুদ্ধ বন্ধে সৌদির উদ্যোগ
প্রকাশ : ১১ এপ্রিল ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
আলোকিত বিশ্ব ডেস্ক
স্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছানোর লক্ষ্যে সৌদি আরবের একটি প্রতিনিধি দল ইয়েমেনের রাজধানী সানায় হুতি বিদ্রোহীদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করতে যাচ্ছে। এর মধ্যস্থতা করছে ওমান। দেশটির একটি প্রতিনিধি দলও সানায় অবস্থান করছে। ইয়েমেন সরকারকে হটিয়ে ২০১৫ সাল থেকে সানার নিয়ন্ত্রণ নেয় হুতি বিদ্রোহীরা। এর পরই হুতি ও সরকারকে সমর্থনকারী সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয়। সৌদি আরবের পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়া হয়নি। তবে হুতি বিদ্রোহী পরিচালিত সংবাদ সংস্থা সাবা বলেছে, বর্তমানে সানায় সৌদি ও ওমানের প্রতিনিধি দল অবস্থান করছে।
একটি ফাঁস হওয়া ছবিতে হুতি নেতা মোহাম্মদ আলী আল হুতিকে সৌদি নেতার সঙ্গে হাত মেলাতে দেখা যায়। তবে তার মুখ অস্পষ্ট ছিল। একে ইয়েমেনে যুদ্ধের অবসান ঘটাতে পারে, এমন একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর জন্য উভয় পক্ষের ইচ্ছার আরেকটি উল্লেখযোগ্য চিহ্ন হিসেবে দেখা হচ্ছে। এখনও কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা না এলেও এ মাসের শেষেই চুক্তিতে পৌঁছানোর আশা করছে উভয় পক্ষ। বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, হুতি সুপ্রিম পলিটিক্যাল কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট মাহদি আল মাশাতের সঙ্গে সফররত প্রতিনিধি দলের বৈঠক হবে। বৈঠকে অবরোধ প্রত্যাহার, আগ্রাসনের অবসান, ইয়েমেনি জনগণের অধিকার পুনরুদ্ধারসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হবে।
বিবিসি জানায়, চুক্তির এ পর্যায়ে দুই পক্ষ পারস্পরিক আত্মবিশ্বাস তৈরির ব্যবস্থা এগিয়ে নিতে সম্মত হয়েছে। এর মধ্যে বন্দি বিনিময় ও আমদানি নিষেধাজ্ঞা শিথিল করার মতো নানা বিষয় যুক্ত হয়েছে। ইরান ও সৌদি আরবের মধ্যে চীনের মধ্যস্থতায় কূটনৈতিক চুক্তির পর মধ্যপ্রাচ্যে বড় ধরনের পরিবর্তনের আভাস পাওয়া যাচ্ছে। এর মধ্যে সর্বশেষ সৌদি ও হুতিদের মধ্যে চুক্তির বিষয়টি সামনে এসেছে। কয়েক বছরের বৈরিতা শেষে গত মার্চে ইরান ও সৌদি আরব তাদের কূটনৈতিক দূরত্ব ঘোচানোর ব্যাপারে সম্মত হয়। দুই দেশের মধ্যকার কূটনৈতিক দূতাবাসগুলো নতুন করে চালুর ব্যাপারে সমঝোতা হয়। চীনের বেইজিংয়ে দুই দেশের প্রতিনিধিদলের মধ্যে বৈঠকে প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের সহায়তায় চুক্তিটি হয়েছিল। এর পর দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরাও চীনের রাজধানী বেইজিংয়ে বৈঠক করেছেন।
ইরানে নতুন করে দূতাবাস খোলার ব্যাপারে আলোচনা করতে সৌদি কর্মকর্তারা তেহরানে পৌঁছেছেন। মধ্যপ্রাচ্যে এ দুই আঞ্চলিক শক্তির মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনঃস্থাপনে চীনের মধ্যস্থতায় হওয়া চুক্তির আওতায় তেহরানে দূতাবাস ও মাশহাদে কনস্যুলেট খোলা নিয়ে আলোচনা হবে। গত শনিবার সৌদি আরবের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এমন তথ্য জানিয়েছে। এদিকে সৌদি আরব গত শনিবার ১৩ জন হুতি বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে। হুতি বিদ্রোহীদের এক মুখপাত্র এ তথ্য দিয়েছেন বলে জানায় কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
হুতি কর্মকর্তা আবদুল কাদের আল মুর্তজা টুইটারে বলেন, মুক্তি পাওয়া ১৩ জন হুতি বন্দি সানায় এসেছেন। হুতিরা আগে এক সৌদি বন্দিকে মুক্তি দেয়। এর বিনিময়ে ১৩ হুতি বন্দিদের মুক্তি দিয়েছে সৌদি। হুতি বিদ্রোহীরা কবে সৌদির বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে, তা উল্লেখ করেননি আবদুল কাদের। এ বিষয়ে সৌদি সরকারের কাছ থেকে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। বড় ধরনের বন্দি বিনিময়ের ব্যাপারে বিবাদমান পক্ষগুলোর মধ্যে একটি সমঝোতা হয়েছে। এ সমঝোতা পুরোপুরি বাস্তবায়নের আগে ১৩ জন হুতি বন্দীকে মুক্তি দিল সৌদি।