নারীদের পোশাকবিধি মেনে চলা এবং জনসমক্ষে চুল ঢেকে রাখা নিশ্চিত করতে ইরানের পুলিশ আবার বিতর্কিত টহল শুরু করেছে। দেশটির নীতি পুলিশের এক মুখপাত্র রোববার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেছেন, ইরানের হিজাব আইন বাস্তবায়নে মাঠে কাজ করবে নীতি পুলিশ। যথাযথ নিয়ম মেনে হিজাব না পরার অভিযোগে গত বছরের সেপ্টেম্বরে মাসা আমিনি নামের এক তরুণীকে তেহরানে আটক করেছিল ‘নীতি পুলিশ’। আটকের পর নীতি পুলিশের হেফাজতে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাকে তেহরানের একটি হাসপাতালে নেয়া হয়। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
এ ঘটনার পর বিক্ষোভে ফুঁসে ওঠে গোটা ইরান। বড় বড় শহরে সরকারি বাহিনীর সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয় বিক্ষোভকারীদের। এতে অনেক প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। দেশজুড়ে এমন বিক্ষোভের পর নীতি পুলিশের টহল সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছিল। এর প্রায় ১০ মাস পরে আবারও তৎপরতা শুরু করেছে বিশেষায়িত এ বাহিনী। নীতি পুলিশ ইরানের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সংযুক্ত। ইরানের শীর্ষ ধর্মীয় কর্তৃপক্ষের ঠিক করা ইসলামি নীতি-নৈতিকতা মানুষ মানছে কি-না, তা তারা নিশ্চিত করে।
নীতি পুলিশের প্রতিটি ইউনিটে একটি করে ভ্যান আছে। এ ভ্যানগাড়িতে নারী ও পুরুষ উভয় সদস্য থাকেন। তারা ব্যস্ত এলাকা টহল দেন। কখনও কখনও দাঁড়িয়ে থাকেন। কেউ যথাযথ পোশাক না পরলে তাদের ধরেন। ইরানের শরিয়া আইন অনুযায়ী, নারীদের মাথা ও চুল ঢেকে রাখা বাধ্যতামূলক। তাদের এমন লম্বা ও ঢিলেঢালা পোশাক পরতে হবে, যাতে শরীরের গঠন বোঝা না যায়।
ইরানে ১৯৭৯ সালে ইসলামি বিপ্লব হয়। এ বিপ্লবের কয়েক দশক পরও দেশটির ধর্মীয় নেতারা পোশাকসংক্রান্ত নিয়মনীতি পুরোপুরি বাস্তবায়ন করতে পারেননি। ইসলামি বিপ্লব নারীদের রক্ষণশীল পোশাক পরার বিষয়টিকে অন্যতম স্তম্ভ হিসেবে গ্রহণ করে। ফলে কঠোর হিজাববিধি নিয়ে সেই সময় থেকেই দেশটিতে একটি বিরোধ আছে।