ভারতের কর্ণাটক, মধ্যপ্রদেশের কলেজে হিজাব বিতর্কের পর এবার ছাত্রীদের বোরকা পরা নিয়ে সহিংসতা ছড়াল মহারাষ্ট্রের একটি কলেজে। বিজেপি-শিন্ডেসেনা জোট শাসিত ওই রাজ্যের রাজধানী মুম্বইয়ের একটি কলেজে গত বুধবার বোরকা পরা ছাত্রীদের প্রবেশ করতে বাধা দেয়া হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, মুম্বইয়ের চেম্বুরের ওই কলেজে নির্দিষ্ট পোশাকবিধি রয়েছে বলে কয়েকজন মুসলমান ছাত্রীকে বোরকা পরিহিত অবস্থায় ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি। ঘটনার জেরে ওই ছাত্রীদের মধ্যে কয়েকজনের অভিভাবক এবং স্থানীয়দের একাংশ ওই কলেজের সামনে বিক্ষোভ দেখায়। শেষ পর্যন্ত পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে ঘিরে বিতর্ক, ওই ‘এনজি আচার্য অ্যান্ড ডিকে মারাঠে কলেজ’ একটি বিবৃতি প্রকাশ করে বলেছে, কলেজের পোশাক পরার সময় কিছু শর্ত এবং নিয়ম মেনে চলতেই হবে।
এর আগে ২০২২ সালের ১ জানুয়ারি কর্ণাটকের উদুপির একটি কলেজে কয়েকজন হিজাব পরিহিত মুসলিম ছাত্রীকে ক্লাসে বসতে বাধা দেয়া হয়। কলেজ উন্নয়ন সমিতির সভাপতি তথা স্থানীয় বিজেপি বিধায়ক রঘুপতি ভট্ট বলেছিলেন, হিজাব পরিহিতরা ক্লাসে ঢুকতে পারবেন না। ওই বিতর্ক দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে রাজ্যজুড়ে। এরপর একই বছরের ২৬ জানুয়ারি কর্ণাটক সরকারের শিক্ষা দপ্তর এ বিষয়ে একটি বিশেষ কমিটি গঠন করে। ঘোষণা করা হয়, কমিটি নির্দিষ্ট সুপারিশ করার আগপর্যন্ত ছাত্রীরা শুধু ইউনিফর্ম পরেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যেতে পারবেন। সরকারের ওই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে উদুপির কয়েকজন ছাত্রী কর্ণাটক হাইকোর্টে রিট মামলা দায়ের করেন।
তারা আদালতকে জানান, হিজাব পরা তাদের মৌলিক অধিকারের মধ্যে পড়ে। কোনোভাবেই তা বাতিল করা যাবে না। কিন্তু গত বছরের মার্চ মাসে কর্ণাটক হাইকোর্ট মুসলিম ছাত্রীদের আবেদন খারিজ করে জানায়, হিজাব পরা ইসলামে ‘বাধ্যতামূলক ধর্মীয় অনুশীলন’-এর মধ্যে পড়ে না। এরপর আবেদনকারীরা সুপ্রিমকোর্টের দ্বারস্থ হয়। কিন্তু গত অক্টোবরে বিচারপতি হেমন্ত গুপ্ত এবং বিচারপতি সুধাংশু ধুলিয়ার বেঞ্চ ‘খণ্ডিত রায়’ দেয়ায় মামলাটি এখন শীর্ষ আদালতেরই উচ্চতর বেঞ্চে রয়েছে। দুই বিচারপতির বেঞ্চ স্থগিতাদেশ না দেয়ায় কর্ণাটক সরকারের ‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হিজাব নিষিদ্ধের নির্দেশ’ এখনো বহাল রয়েছে।