এ প্রাঙ্গণের যেমন ধর্মীয় গুরুত্ব রয়েছে, তেমনি ফিলিস্তিনি জনগণের সংস্কৃতি ও জাতীয়তার প্রতীকও এটি। সোনালি গম্বুজের ‘ডোম অব দ্য রক’ সারা বিশ্বের মুসলমানদের কাছে স্বীকৃত। এ স্থানে প্রার্থনা করতে আসতে পারা একটি বড় সুযোগ বলে মনে করেন মুসলমানরা। বর্তমান সীমানাগুলো তৈরি হওয়ার আগের বছরগুলোতে সেই পুরনো আমলে মুসল্লিরা পবিত্র শহর মক্কা ও মদিনার উদ্দেশ্যে যাত্রা করলেও সেই সফরে জেরুসালেমকেও অন্তর্ভুক্ত করতেন। আল আকসার বিস্তীর্ণ প্রাঙ্গণ এখনও হাজার হাজার ধর্মানুরাগীকে আকৃষ্ট করে। যারা প্রতি শুক্রবার জামাতে নামাজের জন্য জড়ো হন।
আল আকসা প্রাচীনতম মসজিদগুলোর একটি। মিরাজের রাতে এ মসজিদেই নামাজ আদায় করেছিলেন নবী মুহাম্মদ (সা.)। মক্কায় হজ ও ওমরা পালনের আগে আল আকসা ছিল মুসলমানদের কাছে প্রধান ধর্মীয় স্থান। ইহুদিরা বিশ্বাস করে, ‘টেম্পল মাউন্টেই’ তাদের পয়গম্বর আব্রাহাম তার পুত্র ইসমাইলকে উৎসর্গ করার জন্য নিয়ে এসেছিলেন। এখানে উল্লেখ্য ইহুদিদের পয়গম্বর আব্রাহাম ইসলাম ধর্মে নবী ইবরাহিম (আ.) হিসেবে পরিচিত। ইহুদিরা বিশ্বাস করে, এখানেই ছিল ইহুদিদের প্রথম ও দ্বিতীয় পবিত্র উপাসনালয়। তারা মনে করে, ৩ হাজার বছর আগে রাজা সোলেমান এখানে প্রথম উপাসনালয় নির্মাণ করেছিলেন। যেটি ধ্বংস করেছিল ব্যাবিলনীয়রা। আর দ্বিতীয় উপাসনালয়টি ৭০ খ্রিষ্টাব্দে রোমান বাহিনী ধ্বংস করে দেয়। এখানে একটি খ্রিষ্টান ব্যাসিলিকাও ছিল; যা একই সঙ্গে ধ্বংস হয়। সেই উপাসনালয়ের শুধু পশ্চিম দিকের দেওয়ালটিই এখনও টিকে আছে এবং এটিই ইহুদিদের প্রার্থনার স্থান।
ইহুদিদের মতে, আল আকসায় ‘ফাউন্ডেশন স্টোন’ বা বিশ্বের ‘ভিত্তি পাথর’-এর অবস্থান। যেখান থেকে বিশ্বের সৃষ্টি শুরু হয়েছিল বলে তারা বিশ্বাস করে। অন্যদিকে খ্রিষ্টানরা মনে-প্রাণে বিশ্বাস করে, এটাই সেই জায়গা, যেখানে যীশু খ্রিষ্ট ক্রুশবিদ্ধ হয়েছিলেন। আর এখানকার গুহাতেই তার দেহ রাখা হয়েছিল। ইসরাইল ১৯৬৭ সালে জেরুসালেম ও পশ্চিম তীর দখল করে নেওয়ার আগে এটি নিয়ন্ত্রণ করত জর্ডান। এখন পূর্ব জেরুসালেম ইসরাইল অধিকৃত হলেও আল আকসা বা টেম্পল মাউন্ট এলাকাটি নিয়ন্ত্রণ বা পরিচালনা করে জর্ডান-ফিলিস্তিনের একটি ওয়াকফ প্রতিষ্ঠান।