ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠালেই আড়াই শতাংশ প্রণোদনা দিচ্ছে সরকার। এর বাইরে বর্তমানে দেশের ব্যাংকগুলো বাড়তি আড়াই শতাংশ প্রণোদনা দিয়ে প্রবাসীদের পাঠানো ডলার কিনতে পারে। বাড়তি এ প্রণোদনা ঘোষণার পর ডলারের খোলাবাজারে প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। গতকাল রাজধানীর দিলকুশা ও পল্টন এলাকার কয়েকটি মানি চেঞ্জারে প্রতি ডলার কিনতে খরচ হচ্ছে ১২০ টাকা ৫০ পয়সা। যেখানে গত সপ্তাহে এক ডলার ছিল ১১৮ থেকে ১২০ টাকা। তবে গ্রাহক উপস্থিতি অন্যান্য দিনের তুলনায় কম। এর আগে সর্বপ্রথম ২০২২ সালের আগস্টে ডলারের দাম সর্বোচ্চ ১২০ টাকায় উঠেছিল। এরপর বেশ কয়েক মাস ডলারের দাম কিছুটা কমতির দিকে ছিল। তবে চলতি বছরের অক্টোবর মাসের শুরুর দিকে খোলাবাজারে ডলারের দাম ১২০ টাকায় ওঠে। তবে অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে নতুন উচ্চতা ১২০ টাকা ৫০ পয়সা ঠেকেছে ডলারের দাম।
এদিকে বাড়তি প্রণোদনা দেওয়ার জন্য ব্যাংকগুলো বাধ্য নয়। ব্যাংক যদি প্রবাসী আয় কিনতে চায়, তাহলে এ প্রণোদনা দিতে পারে। নতুন এ সিদ্ধান্তের ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে রেমিট্যান্স প্রবাহে। সদ্য সমাপ্ত অক্টোবর মাসে প্রবাসীরা ১৯৭ কোটি ৭৫ লাখ ডলার পাঠিয়েছেন। এর আগের মাসে এসেছিল ১৩৪ কোটি ডলার। অর্থাৎ এক মাসের ব্যবধানে প্রবাসী আয় বেড়েছে ৬৩ কোটি ডলার। অর্থনীতিবিদদের মতে, বাড়তি প্রণোদনা দেওয়ার ফলে স্বল্প সময়ের জন্য প্রবাসী আয় কিছুটা বাড়বে। তবে এটি কোনো স্থায়ী সমাধান নয়। তাই সমস্যার পুরোপুরি সমাধান করতে হলে ডলারের দামের পার্থক্য আরো কমাতে হবে। কারণ, ব্যাংকিং চ্যানেলে আসা ডলার ও হুন্ডির মাধ্যমে আসা ডলারের দরের মধ্যে এখনও বড় পার্থক্য রয়েছে। ব্যাংক বাড়তি আড়াই শতাংশ প্রণোদনা দিলেও প্রতি ডলারের দাম পড়বে প্রায় ১১৬ টাকা।
আর অপ্রাতিষ্ঠানিক চ্যানেলে বর্তমানে ডলারের দাম ১২০ টাকা ছাড়িয়ে গেছে। এর ফলে বৈধ পথে প্রবাসী আয় পাঠানোয় প্রবাসী বাংলাদেশিরা উৎসাহিত হবেন না বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। করোনার সময় দেশের রিজার্ভ ব্যাপকহারে বাড়তে শুরু করেছিল। তখন রেকর্ড উচ্চতায় ঠেকেছিল বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। তবে করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ব্যবসা-বাণিজ্য ঠিক হতে থাকে।
এর ফলে ডলারের চাহিদা ও ব্যয় বাড়তে থাকে। এরপর তৈরি হয় ডলারের ব্যাপক সংকট। সেই সংকট চলছে প্রায় দুই বছর ধরে।
রিজার্ভ থেকে ধারাবাহিকভাবে ডলার বিক্রি করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে রিজার্ভ কমে ২ হাজার কোটি ডলারের ঘরে নেমে এসেছে।