ঢাকা ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

কারাবন্দি নার্গিসের নোবেল পুরস্কার

কারাবন্দি নার্গিসের নোবেল পুরস্কার

কারাগারে বন্দি ইরানি মানবাধিকার কর্মী নার্গিস মোহাম্মদির হয়ে নোবেল শান্তি পুরস্কার গ্রহণ করেছেন তার যমজ ছেলে-মেয়ে। কারাগার থেকে পাঠানো ও তার সন্তানদের মাধ্যমে পাঠ করা বার্তায় তিনি ইরানের ‘অত্যাচারী’ সরকারের নিন্দা করেছেন। তিনি বলেন, ‘ইরানের জনগণ অধ্যবসায়ের সঙ্গে দমন-পীড়ন ও কর্তৃত্ববাদের জয় করবে। কোনো সন্দেহ নেই, এটা নিশ্চিত।’ সাহিত্য, বিজ্ঞান ও অর্থনীতিতে অন্যান্য নোবেল পুরস্কারের সঙ্গে রোববার অসলোতে সম্মানজনক শান্তি পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। নার্গিস বহু বছর ধরেই ইরানের একজন বিশিষ্ট মানবাধিকার ব্যক্তিত্ব। ৫১ বছর বয়সের এ নারী ২০১০ সাল থেকে প্রায় নিয়মিত কারাগারে অন্তরীণ রয়েছেন। মোট ১৩ বার গ্রেপ্তার, ৫ বার দোষী সাব্যস্ত ও সর্বশেষ মোট ৩১ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হয়েছেন। বর্তমানে তিনি ‘অপপ্রচার ছড়ানোর’ দায়ে কারাগারে অন্তরীণ রয়েছেন।

রাজনৈতিক কর্মী তাগি রহমানি তার স্বামী। দুই সন্তানের সঙ্গে তিনিও প্যারিসে নির্বাসিত জীবন পার করছেন। বহু বছর ধরে পরিবারের সঙ্গে নার্গিসের কোনো দেখা নেই। ইরান থেকে পাঠানো নার্গিসের একটি চিঠি পড়ে শুনিয়েছেন তার ১৭ বছর বয়সের যমজ সন্তান কিয়ানা ও আলি রহমানি। বক্তৃতাটি ফারসি ভাষায় ছিল। নার্গিস চিঠিতে লিখেছেন, ‘আমি একটি কারাগারের উঁচু, ঠান্ডা দেওয়ালের আড়াল থেকে এ বার্তা লিখছি।’ চিঠিতে তিনি তরুণ ইরানিদের প্রশংসা করেছেন; যারা রাস্তা ও পাবলিক প্লেসগুলোকে ব্যাপক গণপ্রতিরোধের জায়গায় রূপান্তরিত করেছে। বিশেষ করে, মাহসা আমিনির মৃত্যুর পরে গত বছর শুরু হওয়া বিক্ষোভের কথা উল্লেখ করেছেন তিনি। তিনি বলেন, ‘প্রতিরোধ জীবন্ত ও সংগ্রাম দুর্বল হয়নি। প্রতিরোধ ও অহিংসা আমাদের সেরা কৌশল। এটি একই কঠিন পথ, যেখানে ইরানিরা পর্যন্ত আজ হেঁটেছে। তাদের ঐতিহাসিক চেতনা ও তাদের সম্মিলিত ইচ্ছার জন্য কৃতজ্ঞতা।’

তার অনুপস্থিতি বোঝাতে সন্তানদের মাঝখানে একটি চেয়ার খালি রাখা ছিল। শনিবার তার স্বামী রহমানি হার্ডটককে বলেছেন, তার স্ত্রী একবার তাদের সন্তানদের কাছে একটি চিঠি লিখেছিলেন, যেখানে সন্তানদের উদ্দেশ্যে বলা ছিল, ‘তাদের মা হতে না পারায় আশা করি তারা ক্ষমা করবে।’ এক মাস আগে ইরানে কুখ্যাত এভিন কারাগারে অনশন শুরু করেন নার্গিস। তাকে এখানে বন্দি রাখা হয়েছে। এর আগে ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছিল, নোবেল পুরস্কারটি ‘পক্ষপাতমূলক’ ও ‘কিছু ইউরোপীয় দেশের হস্তক্ষেপবাদী এবং ইরানবিরোধী নীতির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ’।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত