ঢাকা ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

ফেনী নদী থেকে আরাকান জয়

অধ্যাপক শাব্বির আহমদ
ফেনী নদী থেকে আরাকান জয়

১৩৪০ সালে সুলতান ফখরুদ্দীন মোবারক শাহের আমলে সর্বপ্রথম চট্টগ্রাম বৃহত্তর বাংলার (তৎকালীন সুবা বাংলা) অধীনে আসে। ১৩৪৬ সালে এ চট্টগ্রাম দিয়েই বাংলাদেশে প্রবেশ করেন বিখ্যাত পর্যটক ইবনে বতুতা। তিনি তার ভ্রমণকাহিনীতে চট্টগ্রামকে বঙ্গ সালতানাতের অন্তর্ভুক্ত সুন্দর নগর হিসেবে বর্ণনা করেন। প্রায় ২০০ বছর মুসলিম শাসনামলের পর ১৫১৩ সালে চট্টগ্রাম আবার বাংলার হাতছাড়া হয়। সুলতান আলাউদ্দিন হুসাইন শাহের আমলে পার্শ্ববর্তী ত্রিপুরা রাজ্য কর্তৃক চট্টগ্রাম দখল করে নেয়া হয়। যদিও ত্রিপুরার এ দখলদারিত্ব বেশি দিন বজায় ছিল না। অচিরেই সুলতান আলাউদ্দিন হুসাইন শাহের পুত্র সুলতান নশরত শাহ কর্তৃক চট্টগ্রাম বিজয় হয়। চট্টগ্রাম বিজয় করেই সুলতান অঞ্চলটির নাম দেন ‘ফাতেয়াবাদ’। আজো চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়-সংলগ্ন ফাতেয়াবাদ অঞ্চলটি সুলতান নশরত শাহের স্মৃতিকে ধারণ করে আছে। চট্টগ্রাম-হাটহাজারি সড়কের ফাতেয়াবাদে অবস্থিত নশরত শাহ কর্তৃক খননকৃত বড় দিঘি এবং সুলতান নশরত শাহ মসজিদ আজো অস্তিত্বের জানান দেয়।

মুসলমানদের গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ : সুলতান নশরত শাহ ত্রিপুরা রাজ্য থেকে চট্টগ্রামকে বিজয় করে আনলেও এ বিজয় টেকসই ছিল না। ১৫৮১ সালে এসে আরাকান রাজ্য বাংলার আধিপত্য খর্ব করে চট্টগ্রামকে পুরোপুরি আরাকানের অন্তর্ভুক্ত করতে সক্ষম হয়। ইতিহাস সাক্ষী, ১৪০৬ খ্রিষ্টাব্দে আরাকানের ম্রাউক-উ রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা রাজা নরমিখলা বর্মিদের আক্রমণে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে পালিয়ে বাংলার তৎকালীন রাজধানী গৌড়ে চলে এলে গৌড়ের শাসক জালালুদ্দিন শাহ নরমিখলার সাহায্যে ৩০ হাজার সৈন্য পাঠিয়ে আরাকান থেকে বর্মিদের উৎখাতে সহায়তা করেন। নরমিখলা ইসলাম কবুল করে সোলাইমান শাহ নাম নিয়ে আরাকানের সিংহাসনে বসেন। গৌড়ের মুসলমানদের অনুকরণে মুদ্রা প্রথার প্রবর্তন করে মুদ্রার এক পাশে ফারসি ভাষায় কালেমা খোদাই করা হয়। ১৭৮৪ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত সময়ে প্রায় প্রত্যেক রাজা নিজেদের বৌদ্ধ নামের সঙ্গে একটি মুসলিম নাম ব্যবহার করতেন। মুসলমানদের গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ দিতেন। মধ্যযুগে বাংলা সাহিত্যচর্চার একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র ছিল আরাকান তথা রোসাঙ্গ রাজদরবার। মহাকবি আলাওল রোসাঙ্গ দরবারের রাজকবি ছিলেন। তিনি লিখেছিলেন মহাকাব্য পদ্মাবতী। তিনি তার পদ্মাবতী কাব্যে রোসাঙ্গ জনগোষ্ঠীর একটি বিবরণ দিয়ে লিখেছেন, নানা দেশি নানা লোক/শুনিয়া রোসাঙ্গ ভোগ/আইসন্ত নৃপ ছায়াতলে। রোসাঙ্গ রাজদরবারের আনুকূল্যে ও পৃষ্ঠপোষকতায় বদিউজ্জামাল, সতী ময়না ও লোর-চন্দ্রানী, সয়ফুলমূলক, জঙ্গনামা ইত্যাদি কাব্যগ্রন্থ রচিত হয়েছিল। (রোহিঙ্গা জাতির ইতিহাস : এন এম হাবিব উল্লাহ)।

পর্তুগিজ জলদস্যুদের অভয়ারণ্য : বাংলার প্রতি আরাকানিদের কৃতজ্ঞতা ছিল খুবই অল্প সময়ের। সম্রাট নরমিখলার উত্তরাধিকারীরা ১৪৩৭ সালে রামু এবং ১৪৫৯ সালে চট্টগ্রাম দখল করে নেয়। ১৬৬৬ সাল পর্যন্ত চট্টগ্রাম আরাকানের দখলে ছিল। তখন আরাকান রাজ্যের উত্তর সীমানা ছিল ফেনী নদী। সেই সূত্রে রোহিঙ্গা সংগঠন আরসা, আরএসও ‘আরাকান ইয়োমা’ (আরাকান পর্বতমালা) থেকে ফেনী নদীর তীর পর্যন্ত বিস্তীর্ণ এলাকাকে আরাকান রাজ্যের সীমানা দাবি করে স্বাধীন আরাকান রাজ্যের স্বপ্ন দেখে। ওই সময়ে চট্টগ্রাম হয়ে যায় আরাকানি মগ এবং পর্তুগিজ (ফিরিঙ্গি) জলদস্যুদের অভয়ারণ্য। চট্টগ্রামের ফিরিঙ্গিবাজারের নামকরণ হয় ওই এলাকায় পর্তুগীজদের ব্যাপক পদচারণের কারণে। ওই সময়ে ‘মগ-পর্তুগিজ ঐক্যজোট’ সমগ্র ভাটি বাংলার জনজীবনকে বিভীষিকাময় করে তোলে। চট্টগ্রামকে ঘাঁটি করে মেঘনা নদীর উপকূলের বিস্তীর্ণ ভূ-ভাগে জলদস্যুতা এবং লুটতরাজ চালাত এই মগ এবং হার্মাদগোষ্ঠী।

সপরিবারে আরাকান রাজ্যে আশ্রয় : আরাকান রাজা কর্তৃক মোগল শাহজাদাকে হত্যার মধ্যদিয়ে চট্টগ্রাম বিজয়ের উপলক্ষ তৈরি হয়। ১৬৫৭ সালে মোগল সিংহাসন নিয়ে বাদশাহ শাহজাহানের চার পুত্রের মধ্যে সংঘটিত ভ্রাতৃঘাতী যুদ্ধে আওরঙ্গজেবের কাছে তার অপর ভাইয়েরা পরাজিত হন। তাদের একজন হলেন শাহ সুজা। তিনি ১৬৪০ সাল থেকে ১৬৬০ সাল পর্যন্ত প্রায় ২০ বছর বাংলার সুবেদার ছিলেন।

ভ্রাতৃঘাতী যুদ্ধে পরাজয়ের পর শাহ সুজার লক্ষ্য ছিল, নোয়াখালী থেকে জাহাজে করে সমুদ্রপথে মক্কা অথবা তুরস্কের ইস্তান্বুলে চলে যাবেন। কিন্তু বর্ষাকাল এসে যাওয়ায় তা আর হয়ে ওঠেনি। আওরঙ্গজেবের হাত থেকে রক্ষা পেতে শাহ সুজা সপরিবারে পার্শ্ববর্তী আরাকান রাজ্যে আশ্রয় নেন। কিন্তু ছয় মাসের মাথায় শাহ সুজাকে খুন করে আরাকান রাজা। তার পরিবারের মেয়েদের করা হয় লাঞ্ছিত, ছেলেদের করা হয় কারারুদ্ধ। মোগল শাহজাদার এ বিয়োগান্ত সংবাদ অচিরেই পৌঁছে যায় দিল্লি বাদশাহ আওরঙ্গজেবের কাছে।

পর্তুগিজ ও মগদের মধ্যে বিবাদ : ভ্রাতৃহত্যার প্রতিশোধ নিতে আওরঙ্গজেব বাংলার সুবেদার শায়েস্তা খানকে চট্টগ্রাম দখলের নির্দেশ দিলে শায়েস্তা খান তার পুত্র বুজুর্গ উমেদ খানকে চট্টগ্রাম পুনরুদ্ধারের নেতৃত্বের নির্দেশ দেন। বুজুর্গ উমেদ খাঁ ছিলেন একজন ঠান্ডা মাথার সেনাপতি এবং দক্ষ প্রশাসক। তিনি বুঝলেন, চট্টগ্রাম বিজয় করতে হলে সমুদ্র এবং স্থল দুই পথেই আক্রমণ পরিচালনা করতে হবে। সমুদ্রপথে আক্রমণ করতে হলে দরকার নৌ-ঘাঁটি। আর এই নৌ-ঘাঁটি স্থাপনে জুঁতসই জায়গা হলো সন্দ্বীপ।

সন্দ্বীপে তখনকার শাসক সাবেক মোগল সেনাপতি দিলাওয়ার খাঁ মোগলদের চট্টগ্রাম বিজয়ে সহায়তা করতে রাজি হননি। বাংলার নৌপথ সম্বন্ধে অভিজ্ঞতা ছিল পর্তুগিজ ক্যাপ্টেন মিস্টার মুরের। কিন্তু তার সঙ্গে ছিল আরাকানি মগদের বন্ধুত্ব। অল্প সময়ের মধ্যেই উমেদ খাঁ কৌশলে পর্তুগিজ এবং মগদের মধ্যে বিবাদ বাড়িয়ে দিতে সক্ষম হন। ফলে মোগলদের চট্টগ্রাম আক্রমণের সময় আরাকানদের কোনোরূপ সাহায্য করেনি পর্তুগিজরা। ১৬৬৪ খ্রিষ্টাব্দের শেষের দিকে উমেদ খাঁ ক্যাপ্টেন মুরের কূটনৈতিক সমর্থন ও সামরিক সাহায্য নিয়ে সন্দ্বীপ দখল করেন।

পৃথিবীর দ্বিতীয় কাবা প্রতিষ্ঠা : ১৬৬৫ খ্রিষ্টাব্দের জানুয়ারি মাস। সাড়ে ছয় হাজার মোগল বাহিনী নিয়ে ফেনী নদী পেরিয়ে চট্টগ্রাম অভিমুখে ক্রমেই অগ্রসর হতে থাকেন বুজুর্গ উমেদ খাঁ। চট্টগ্রামের বিস্তীর্ণ জঙ্গল বুজুর্গ উমেদ খাঁর সামনে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। তাই তিনি সৈন্যদলকে গাছ কেটে কেটে রাস্তা তৈরি করে অগ্রসর হওয়ার নির্দেশ দেন। যাত্রাপথে বুজুর্গ উমেদ খাঁ চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে এক গ্রামে বেশ ক’দিন যাত্রাবিরতি দেন এবং একটি মসজিদ নির্মাণ করেন। সেই মসজিদটি আজও আছে এবং গ্রামের নাম এখনো উমেদনগর হিসেবে রয়েছে।

বুজুর্গ উমেদ খাঁর বাহিনী মূল চট্টগ্রাম নগরে পৌঁছার পাশাপাশি সমুদ্রপথেও মোগল নৌ-সেনারা সেনাপতি ইবনে হোসেন মনসুর খাঁর নেতৃত্বে চট্টগ্রামে নোঙর করতে সক্ষম হয়। স্থল ও নৌ দুই বাহিনী মিলিত হয়ে আরাকানি মগদের শক্ত ঘাঁটি চাটগিছা কিল্লায় (আন্দরকিল্লা) অবরোধ করে। টানা তিন দিন রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ শেষে ১৬৬৬ খ্রিষ্টাব্দের ২৬ জানুয়ারি মোগল বাহিনীর দখলে আসে আজকের আন্দরকিল্লা।

বুজুর্গ উমেদ খাঁ আরাকানি মগদের বিতাড়িত করে চট্টগ্রামকে মোগল সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত করেন। সম্রাট আওরঙ্গজেবের অনুমতি সাপেক্ষে শায়েস্তা খান চট্টগ্রামের নাম পরিবর্তন করে রাখেন ‘ইসলামাবাদ’। পরবর্তী বছরে কিল্লার ওপরে একটি মসজিদ নির্মাণ করেন। যেটি বর্তমানে ‘আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদ’ নামে পরিচিত। মসজিদের প্রবেশদ্বারের ওপরে দুটি প্রস্তরখণ্ডে ফারসি ভাষায় কিছু লেখা আছে; যার বাংলা অনুবাদ করলে দাঁড়ায়, ‘হে জ্ঞানী! তুমি জগদ্বাসীকে বলে দাও, আজ এ দুনিয়ায় দ্বিতীয় কাবা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। যার প্রতিষ্ঠাকাল ১০৭৮ হিজরি।’

এলাকার নাম দুইহাজারি বা দোহাজারি : চট্টগ্রাম পুনরুদ্ধারের পুরস্কার হিসেবে বাদশাহ আওরঙ্গজেব বুজুর্গ উমেদ খাঁকে নবাব উপাধি দিয়ে চট্টগ্রামের শাসনভার প্রদান করেন। ফৌজদার হয়েই তিনি সমগ্র চট্টগ্রামকে অনন্যভাবে গড়ে তোলেন। তৈরি করেন সুদক্ষ প্রশাসনিক রাজস্ব ও সুদৃঢ় প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। মোগলরা চট্টগ্রামে বহু স্থাপনাসহ মসজিদ নির্মাণ করে। রহমতগঞ্জ, হামজারবাগ, ঘাট ফরহাদবেগ, আসকার দীঘি, বাগমনিরাম, মোগলটুলী, পাঠানটুলী, বাগ-ই-হামজাহ মসজিদ, মিসকিন শাহ মসজিদ, কদম মোবারক মসজিদ, বায়েজিদ বোস্তামি মসজিদ, ওয়ালি খান মসজিদসহ অনেক স্থাপনা চট্টগ্রামের আনাচে-কানাচে মোগলদের উপস্থিতির কথা মনে করিয়ে দেয়। চট্টগ্রাম বিজয় করেই আরাম-আয়েশ ভোগ করার জন্য বসে না থেকে মগদের পুরোপুরি চট্টগ্রামছাড়া করতে তিনি মোগল বাহিনীসহ চট্টগ্রাম নগরের দক্ষিণে যাত্রা করেন। মগদের ক্রমেই চট্টগ্রাম থেকে বিতাড়িত করতে করতে কক্সবাজারের রামু পর্যন্ত পৌঁছান বুজুর্গ উমেদ খাঁ। কিন্তু বর্ষাকাল এসে যাওয়ায় তিনি আর অগ্রসর হননি। আর চট্টগ্রাম থেকে রামু পর্যন্ত রসদ সরবরাহে কষ্ট হওয়ায় বুজুর্গ উমেদ খাঁ রামু থেকে কিছুটা পিছিয়ে শঙ্খ (সাঙ্গু) নদীর পাড়ে অবস্থান গ্রহণ করেন। এরপর দুর্গ স্থাপন করে সাঙ্গু নদ পর্যন্ত সীমানা কার্যকর করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। এ লক্ষ্যে দু’জন সেনানায়ক যথাক্রমে আধু খাঁ এবং লক্ষ্মণ সিংকে এ স্থানে মোতায়েন করেন। এ দুই সেনানায়কের অধীনে ছিল দুই হাজার সৈনিক। পরবর্তীতে এলাকাটির নামকরণ হয় দুইহাজারি বা দোহাজারি।

মগদের সংখ্যা ছিল সমানে সমান : রাখাইনরা বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী (থেরবাদি) হলেও মায়ানমারের বৌদ্ধদের থেকে তারা নিজেদের পৃথক জাতিসত্তা বলে মনে করে। ফলে যুগ যুগ তারা বর্মি শাসকদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ চালিয়ে গেছে। বর্মি বাহিনীর অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে রাখাইন মগ, রোহিঙ্গা মুসলিম নির্বিশেষে আরাকানের জনগণ পালিয়ে এসে রামু, কক্সবাজারসহ চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় গ্রহণ করে। ১৮২৬ খ্রিষ্টাব্দে ইস্ট-ইন্ডিয়া কোম্পানি বর্মিদের বিতাড়িত করে আরাকান দখল করে নিলে সূচনা হয় নতুন অধ্যায়ের। কোম্পানি বাংলাকে আরাকান পর্যন্ত বিস্তৃত করেছিল। এ সময় হাজার হাজার বাঙালি কাজের সন্ধানে চট্টগ্রাম অঞ্চল থেকে আরাকানে গিয়ে বসতি গড়েছিল। এমনিতে আরাকানে রোহিঙ্গা মুসলিম আর রাখাইন মগদের সংখ্যা ছিল সমানে সমান।

তার ওপর দক্ষিণ চট্টগ্রাম থেকে প্রচুর বাঙালি মুসলমানের অভিবাসনের ফলে মুসলমানরা সংখ্যাগরিষ্ঠে পরিণত হয়। ফলে রাখাইনদের মাঝে অভিবাসন বিরোধী মনোভাব তৈরি হয়; যা দীর্ঘ মেয়াদি রাখাইন-রোহিঙ্গা সংঘাতের জন্ম দেয়। এদিকে রোহিঙ্গাদের প্রচণ্ড বিরোধিতার মুখে ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ ১৯৩৭ সালের প্রশাসনিক সংস্কারের আওতায় মিয়ানমারের করদরাজ্য হিসেবে আরাকানকে স্বায়ত্তশাসন প্রদান করলে ১১১ বছর পর আরাকান বাংলার হাতছাড়া হয়। না হয় আরাকানের ইতিহাস হয়তো অন্যভাবে লেখা হতো। অর্থাৎ, ফেনী নদী থেকে আরাকানের ইরাবতী নদী পর্যন্ত চট্টগ্রামের সীমানা হতো।

বুজুর্গ উমেদ খাঁর নেতৃত্বে বিজয়ের পর চট্টগ্রাম আর কখনো বাংলার প্রশাসনিক এবং রাজনৈতিক আওতার বাইরে যায়নি। মোগল, ব্রিটিশ, পাকিস্তান যখনই যার শাসনে ছিল, চট্টগ্রাম সব সময়ই বাংলার সঙ্গে ছিল এবং আছে; যার বিজয় না হলে হয়তো রোহিঙ্গাদের মতো ফেনী নদীর তীরে আমাদেরও দীর্ঘশ্বাস ফেলতে হতো, সেই বুজুর্গ উমেদ খাঁর খবর ক’জনই রাখে!

লেখক : শিক্ষক, কলামিস্ট ও আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিশ্লেষক

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত