ঢাকা ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

পশ্চিমা দেশে ভার্চুয়াল অপহরণের শিকার

পশ্চিমা দেশে ভার্চুয়াল অপহরণের শিকার

গত ৩১ ডিসেম্বর ১৭ বছর বয়সি কাই ঝুয়াং নামে একজন চীনা তরুণকে উটাহ্ অঙ্গরাজ্যের বনাঞ্চল থেকে উদ্ধার করা হয়। ওই তরুণকে একটি অস্থায়ী ক্যাম্পসাইট থেকে উদ্ধার করা হয়। তার বাবা-মা তার স্কুলের কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছে, তাদের কাছে একটি ছবি পাঠিয়ে মুক্তিপণ দাবি করা হয়েছে। ওই ছবিতে মনে হচ্ছে, তাদের ছেলেকে অপহরণ করা হয়েছে। পুলিশ বলছে, সাইবার-অপহরণের শিকার ভুক্তভোগীদের নিজেদের একাকী করে ফেলতে বাধ্য করা হয়। এ ছাড়া তাদের জিম্মি করে রাখা হয়েছে, এমন সব ছবি তুলতেও বাধ্য করা হয়। যদিও সেখানে অপহরণকারীরা সশরীরে থাকে না। তবে তাদের ওপর ফেসটাইম ও স্কাইপে ব্যবহার করে নজর রাখা হয়। ভুক্তভোগী ও তাদের পরিবারের সদস্য দুই পক্ষকেই বোঝানো হয়, তারা নির্দেশ মোতাবেক কাজ না করলে অপর পক্ষের ক্ষতি করা হবে। চীনের স্থানীয় পুলিশ জানিয়েছে, এ প্রতারণার মাধ্যমে কাইয়ের পরিবারকে চীনের কয়েকটি ব্যাংক হিসেবে ৮০ হাজার মার্কিন ডলার পরিশোধ করতে বাধ্য করা হয়।

যাদের সতর্ক করা হয় : পুলিশ বাহিনীর মতে, পশ্চিমা দেশগুলোতে থাকা চীনের বিদেশি শিক্ষার্থীদের টার্গেট করছে সাইবার অপহরণকারীরা। গত ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে যুক্তরাজ্যের সাউথ ইয়র্কশায়ার পুলিশের প্রতারণাবিরোধী সমন্বয়ক দল বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য একটি সতর্কবার্তা জারি করে। বিশেষ করে, যেসব শিক্ষার্থী ইংল্যান্ডের উত্তরাঞ্চলের শেফিল্ডে যাচ্ছিল, তাদের সতর্ক করা হয়। এ সতর্কবার্তায় বলা হয়, এ প্রতারণার জন্য মূলত যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে অধ্যয়নরত চীনা শিক্ষার্থীদের টার্গেট করা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে ভুক্তভোগীরা একজন প্রতারকের কাছ থেকে একটি ফোনকল পায়। যে নিজেকে চীনের দূতাবাস, অভিবাসন ও শুল্ক বিভাগ বা চীনের পুলিশ বা রয়াল মেইলের কর্মকর্তা হিসেবে পরিচয় দেয়। তারা দাবি করে, তারা একটি আন্তর্জাতিক অপরাধের বিষয়ে তদন্ত করছে। এটি নিশ্চিত হতে তারা চীনের একটি ব্যাংক হিসেবে বড় অঙ্কের অর্থ স্থানান্তর করতে বলে।

বিদেশ ভ্রমণ করতে বাধ্য করে : সাউথ ইয়র্কশায়ার পুলিশ বলছে, অনেক ক্ষেত্রে অপরাধীরা ভুক্তভোগীদের হুমকি-ধামকি দিয়ে নির্দেশ মানতে বাধ্য করে। আরো বলা হয়, অপরাধীরা এ ঘটনাগুলো কাউকে বলতেও নিষেধ করে। ২০২৩ সালের অক্টোবরে অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসের (এনএসডাব্লিউ) পুলিশ সতর্ক করে বলে, ভার্চুয়াল অপহরণ ক্রমাগত আরও জটিল রূপ লাভ করছে। এনএসডাব্লিউ পুলিশের ডিটেকটিভ সুপারিন্টেনডেন্ট জোসেফ ডুয়েইহি বলেন, এ প্রতারণা কার্যক্রম শুরু হয় চীনের মূল ভূখণ্ডে। প্রতারকরা নানা কৌশলে ভুক্তভোগীদের চীনা কর্তৃপক্ষের একজন সদস্য হিসেবে অভিনয় করতে বাধ্য করে। এরপর আরেকজন নতুন ভুক্তভোগীর কাছে যেতে রাজি করায়। এক সংবাদ সম্মেলনে মি ডুয়েইহি বলেন, এ প্রতারণার আওতায় প্রতারকরা ভুক্তভোগীদের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে এবং বিদেশে ভ্রমণ করতেও বাধ্য করে। যেটা আমরা আগে কখনো দেখিনি। এমনকি আমাদের কিছু ভুক্তভোগী থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়াতেও গেছে। এ ছাড়া অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যেও ভ্রমণ করেছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত