ঢাকা ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

ঘনিষ্ঠ মিত্রদের প্রতিদ্বন্দ্বিতা

ঘনিষ্ঠ মিত্রদের প্রতিদ্বন্দ্বিতা

মাত্র সাত বছর আগেও সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান (এমবিএস) এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ানকে (এমবিজেড) সবচেয়ে ভালো বন্ধু বলে মনে হয়েছিল, যখন তারা সৌদি মরুভূমিতে ক্যাম্পিং এবং বাজপাখি শিকারে গিয়েছিলেন। কিন্তু এ সপ্তাহে ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের একটি বিস্ফোরক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ানের সঙ্গে ছয় মাস ধরে কথা বলেননি মোহাম্মদ বিন সালমান। তাদের ঘনিষ্ঠ একাধিক সূত্রকে উদ্ধৃত করে ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই)-এর নেতাদের মধ্যে একটি তিক্ত ফাটল উন্মোচন করেছে এবং উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যে, তাদের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্য শত্রুতায় গড়াতে পারে। এমবিএস ডিসেম্বরে সৌদি সাংবাদিকদের সঙ্গে একটি অনানুষ্ঠানিক আলোচনায় ইউএই’র ওপর কাতারের মতো অবরোধ আরোপের হুমকি দিয়েছেন বলেও দাবি করেছে পত্রিকাটি।

এমবিএস’র ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্যের মধ্যকার প্রায়শ ঝড়ো অংশীদারিত্বের কথা উল্লেখ করে জোর দিয়ে বলেছে, ঘনিষ্ঠ মিত্রদের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা নতুন কিছু নয়। দুই উপসাগরীয় রাষ্ট্রের মধ্যে সম্পর্ক স্থিতিশীল রয়েছে, তবে তারা সবসময় স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছে না। সূত্রটি বলেছে, সিরিয়া এবং ইয়েমেনের মতো বড় আঞ্চলিক সংঘাত কীভাবে মোকাবিলা করা যায়, তা নিয়ে দুই রাষ্ট্রের মধ্যে কোনো মতবিরোধ নেই, যদিও উভয়ই তাদের স্বার্থ অনুসরণ করছে। তবে এসব দাবি থেকে ধারণা করা হচ্ছে, মধ্যপ্রাচ্যে বাইডেন প্রশাসনের রেখে যাওয়া ক্ষমতার শূন্যস্থান পূরণের জন্য লড়াই করার কারণে এমবিএস এবং এমবিজেড-এর মধ্যকার সম্পর্কের অবনতি ঘটেছে। যুক্তরাষ্ট্র মধ্যপ্রাচ্যে তার উপস্থিতি হ্রাস করায় এমবিএস নিজেকে এ অঞ্চলের পরবর্তী প্রধান খেলোয়াড় হিসেবে উপস্থাপনের চেষ্টা করছেন। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে তিনি সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার জন্য আরব বিশ্বের প্রচেষ্টার নেতৃত্ব দিয়েছেন। আসাদ মে মাসে গত এক দশকের মধ্যে প্রথমবারের মতো আরব লীগের শীর্ষ সম্মেলনে ভাষণ দিয়েছেন। তবে প্রক্রিয়াটি আসলে ২০১৮ সালে দামেস্কে সংযুক্ত আরব আমিরাতের তার দূতাবাস পুনরায় চালু করার মাধ্যমে শুরু করেছিল। কিন্তু রিয়াদ এ পদক্ষেপের জন্য বেশিরভাগ কৃতিত্ব নিয়েছে বলে মনে হচ্ছে। এমবিএস সৌদি আরব এবং ইরানের মধ্যে সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি বড় বরফ গলাতে চীনের সাহায্য চেয়েছিলেন, যা তাদের দূতাবাস পুনরায় খুলতে এবং সম্ভাব্যভাবে ইয়েমেনে চলমান যুদ্ধের অবসান ঘটাতে সহয়তা করবে, যেখানে রিয়াদ এবং তেহরান দুই বিরোধী পক্ষ রয়েছে। সৌদি আরবের একটানা কূটনৈতিক অভ্যুত্থানের পর্ব এমবিজেডকে হতাশ করেছে বলে মনে হয়, যিনি এমবিএস’র প্রতিদ্বন্দ্বীতে পরিণত হওয়ার আগে তার একজন পরামর্শদাতা ছিলেন। আমিরাতি নেতা ডেপুটি ক্রাউন প্রিন্স থাকাকালীন এমবিএস’র পক্ষে ট্রাম্প প্রশাসনে মধ্যস্থতা করার ক্ষেত্রে মুখ্য ভূমিকা পালন করেছিলেন এবং ২০১৭ সালে সৌদি আরবে ট্রাম্পের উচ্চ মাত্রার সফর সুরক্ষিত করতে সাহায্য করেছিলেন বলে জানা যায়।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত