ঢাকা ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

দেশে দেশে ঈদুল ফিতর

মাসব্যাপী সিয়াম সাধনার পর মুসলিম উম্মাহর সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব হলো পবিত্র ঈদুল ফিতর। পৃথিবীর সব মুসলিম কিংবা অমুসলিম দেশেও বেশ ঘটা করে পালন করা হয় ঈদের এ খুশির দিনটি। তবে যে কোনো উৎসবের সঙ্গেই মিশে থাকে প্রতিটি দেশের নিজস্ব সংস্কৃতি, আচার-অনুষ্ঠান; ঈদও তার ব্যতিক্রম নয়। বিশ্ব মানচিত্রের কোথায় কীভাবে ঈদ উদযাপন করা হয়, রয়টার্স ও হন্দুস্তান টাইমসের সূত্রে বৈচিত্র্য ও ভিন্ন আবহের সেসব গল্প তুলে ধরেছেন দৈনিক আলোকিত বাংলাদেশের সহ-সম্পাদক- মুনশি মুহাম্মদ উবাইদুল্লাহ
দেশে দেশে ঈদুল ফিতর

বাংলাদেশ

বাংলাদেশে ঈদ উদযাপন হয় আড়ম্বরপূর্ণভাবে। নতুন পোশাক পরে পুরুষরা ঈদগাহে নামাজ পড়তে যান। নামাজ শেষে বন্ধু, আত্মীয়-স্বজন, প্রতিবেশী সবার সঙ্গে ‘ঈদ মোবারক’ বলে কোলাকুলি করে থাকেন। মেয়েরা ঈদের আগের রাতে হাত রাঙায় মেহেদির রঙে। বাড়িতে রান্না হয় মজাদার সব খাবার। নানা জাতের সেমাই, পায়েস, এ ছাড়া হালিম, চটপটি, ফুচকাও আজকাল ঈদের খাবারে রাখা হচ্ছে। ভারী খাবার হিসেবে পোলাও, কোর্মা, মুরগির রোস্ট ও বিরিয়ানির প্রচলন আছে। বাড়ির বয়স্করা পরিবারের ছোট সদস্যের ‘ঈদি’ বা ‘সালামি’ দিয়ে থাকেন। ঘরে ঘরে সবাই ঈদের শুভেচ্ছা জানানোর মাধ্যমে ঈদ হয়ে ওঠে পাড়া-প্রতিবেশীদের খবর নেয়ার অন্যতম মাধ্যম। বাংলাদেশে একক পরিবারের সংখ্যা ক্রমাগত বাড়তে থাকলেও ঈদের ছুটিগুলোতে পরিবারের সবাইকে নিয়ে ঈদ করার প্রবণতা দেখতে পাওয়া যায়। এ জন্য ঈদের সময় রাস্তায় যানজট অন্যান্য সময়ের চেয়ে অনেক বেশি দেখা যায়।

মিয়ানমার

উৎসবের সঙ্গে মিলেমিশে একাকার হয়ে যায় দারুণ স্বাদের মজাদার সব খাবার-দাবার। মিয়ানমারদের মধ্যে সুজি দিয়ে তৈরি বিভিন্ন ডেজার্টের চাহিদা ব্যাপক। ঈদের দিন তাই দেশটির প্রতি ঘরে ঘরে অত্যাবশ্যক হয়ে দাঁড়ায় দু’টি পদ। একটি তো অবশ্যই সুজির ডেজার্ট, অপরটি হলো মিয়ানমারের বিশেষ বিরিয়ানি, যা ঈদ উপলক্ষে মাংসের সঙ্গে বাদাম মিশিয়ে অন্যরকম করে রান্না করা হয়।

ভারত

বাংলাদেশের মতোই ঈদের আগের রাতকে ভারতীয়রাও ‘চাঁদ রাত’ হিসেবে পালন করে থাকেন। মেয়েরা দু’হাত ভরে মেহেদি লাগিয়ে বরণ করে নেয় ঈদের চাঁদকে। ঈদের নামাজের পর সালামি নিয়ে কাড়াকাড়ি পড়ে যায় বাচ্চাদের মধ্যে। ভারতীয়দের কাছে ঈদ মানে যেন সেভিয়া খাওয়ার বাহানা। এই মিষ্টিটি ছাড়াও নানা পদের কাবাব, নেহারি, হালিমসহ হরেক রকমের মুখরোচক খাবারে সরগরম থাকে ভারতের প্রতিটি ঘর। ভারতে ঈদের দিন স্কুল-কলেজ, ইউনিভার্সিটি, সরকারি অফিস-আদালত এমনকি কিছু কিছু দোকানপাট ও রেস্টুরেন্ট বন্ধ থাকে। রাষ্ট্রীয়ভাবে একদিনের সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়। ঈদগাহ ও বড় বড় জামে মসজিদগুলোতে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। বড়দের সালাম দিয়ে ছোটরা পেয়ে থাকে ঈদের সালামি। খাবারের মধ্যে থাকে মাংস, পোলাও, রুটি, পরোটার মতো মজাদার ও মুখরোচক সব খাবার।

পাকিস্তান

পাকিস্তানে ঈদের দিন সকালে পরিবারের সবাই এক হয়ে বিভিন্ন ধরনের মিষ্টি বা মিষ্টিজাতীয় খাবার, ঐতিহ্যবাহী শির-কোরমা দিয়ে নাশতা করে। টিভির পর্দায় সারাদিন ঈদ ঘিরে থাকে নানা আয়োজন। অনেকে পার্ক, মনোরম স্থান ও সাগরতীরে ঘুরতে যায়। চাঁদ রাতে মেয়েরা মেহেদির রঙে রাঙায় দু’হাত।

আফগানিস্তান

ঈদের দিনে আফগানরা অতিথিদের খেতে দেন ‘জালেবি’ নামের এক বিশেষ খাবার। ‘তখম জাঙ্গি’ আফগানদের ঈদ উদযাপনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। ‘তখম জাঙ্গি’ হলো পুরুষরা ফাঁকা ময়দানে একত্রিত হয়ে একজন আরেকজনের দিক সিদ্ধ ডিম ছোড়া। ছোটরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করে। এ সময় তারা বলতে থাকে, ‘খালা ঈদেত মোবারক’। সিএনএন-এর মতে, আফগানিস্তানে যখন তালেবানরা ব্যাপক আক্রমণ শুরু করেছিল, তখনও আফগানিরা ঈদের দিন ঠিকই ডিম যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে নিজেদের ঐতিহ্য বজায় রেখেছেন।

সৌদি আরব

সৌদি আরবে ঈদুল ফিতর উদযাপিত হয় ভিন্নভাবে। ঈদের দিন পুরুষরা ‘কান্দর’ নামের সাদা পোশাক পরিধান করেন। মাথায় দেন ‘গাহফিহ’ নামের টুপি। নারীরা এ দিনে ‘থাউব’ নামের বিশেষ পোশাক পরে থাকেন। ঈদের দিন সৌদি মুসলিমরা বাজার থেকে বেশি পরিমাণে চাল কিনে আনেন। তা বাড়ির প্রবেশ দরজার বাইরে রেখে দেন। যাতে অসহায় ও অভাবগ্রস্ত মানুষ তা নিয়ে প্রয়োজন মেটাতে পারেন। এ ছাড়া এ দিনটিতে গরিবদের মাঝে খাবার বিতরণ করা হয়। ঈদ উপলক্ষে দেশটিতে তিনদিন সরকারি ছুটি থাকে। ঈদের নামাজ শেষে বাড়িতে বিশেষ খাবার রান্না হয়।

সংযুক্ত আরব আমিরাত

সংযুক্ত আরব আমিরাতে ঈদ মানে হাজারো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, চমৎকার সব নাটক বা শো এবং অভাবনীয় অফারের ছড়াছড়ি। রণ-পা, নৃত্যশিল্পী, ভাঁড়, জাদুকর, বেলুনওয়ালা দিয়ে ভরে যায় সেখানকার রাস্তাগুলো। লোকে লোকারণ্য থিম পার্ক আর সার্কাস দেখে বোঝা যায় জাঁকজমকপূর্ণ ঈদ আয়োজন কাকে বলে! সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রতিটি রাস্তা তার সৌন্দর্যের পসরা খুলে বসে পরিবারে প্রতিটি সদস্যের জন্য।

তুরস্ক

সাংস্কৃতিক প্রাচুর্য্য ও ঐতিহাসিকভাবে সমৃদ্ধ তুরস্কে অত্যন্ত জমকালো উপায়ে ঈদ উদযাপন হয়ে থাকে। ঈদের দিনকে তুর্কিরা ‘রামাদান বেরামি’ বা রামাদান উৎসব ও ‘সেকার বেরামি’ বা মিষ্টির উৎসব বলে আখ্যায়িত করেন। শিশুরা ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময়ের জন্য বাড়ি বাড়ি ঘুরে বেড়ায়। এ সময় তাদের ‘টার্কিস ডিলাইট’, ‘বাকলাভা’সহ অন্যান্য মিষ্টি খেতে দেয়া হয়। দেশের বিভিন্ন স্থানে শিশুদের আনন্দ দেয়ার জন্য ‘শ্যাডো পাপেট শো’র ব্যবস্থা করা হয়। এ ছাড়া ঈদের নামাজ, কোলাকুলি, ঈদ সালামি, কবর জেয়ারত তো আছেই। বড়দের ডান হাতে চুম্বনের মাধ্যমে তাদের প্রতি শ্রদ্ধা ও সম্মান প্রদর্শন করা হয়।

ইন্দোনেশিয়া

বিশ্বের সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম দেশ ইন্দোনেশিয়া। ঈদের দিনকে ইন্দোনেশিয়ায় বলা হয় ‘হারি রায়া ঈদুল ফিতরি’। এ দিনটি ‘লেবারান’ হিসেবেও পরিচিত। ঈদের দিনে তারা বিগত বছরের কৃতকর্মের জন্য আত্মীয়স্বজন বা বন্ধুদের কাছে ক্ষমা চান। ঈদের এ বিশেষ দিনটিতে নারীরা পরেন ‘কেবায়া কুরঙ্গ’ আর পুরুষরা ‘বাজু কোকো’। যা সে দেশের ঐতিহ্যবাহী পোশাক। ঈদের দিন বিশেষ খাবার হিসেবে তারা কেতুপাত, দোদোল, লেমাং নামের বিভিন্ন খাবার রান্না করেন। ঘর সাজাতে তারা ‘পেলিটাস’ বা প্রদীপ জ্বালিয়ে থাকেন।

মালয়েশিয়া

ঈদের দিন মালয়েশিয়ার মুসলমানরা সে দেশের ঐতিহ্য অনুযায়ী ওপেন হাউস পালন করেন, অর্থাৎ এ দিন যে কেউ কারও বাড়িতে অতিথি হয়ে আসতে পারেন। মুখরোচক বিভিন্ন ধরনের খাবার রান্না হয় ঘরে ঘরে। খাবার তালিকায় থাকে মাংসের তৈরি ‘রেনডাং’, কাবাব বা ‘কেটুপাত’, ‘ডোডল’ বা এক ধরনের মিষ্টি। এ ছাড়া সে দেশের বিশেষ ঐতিহ্য বাঁশের মধ্যে রান্না করা ভাত, যা ‘লেমাং’ নামে পরিচিত। এ ছাড়া ঈদের নামাজ, কুশল বিনিময়, সালামি দেওয়া, কবর জেয়ারত তো আছেই।

মিশর

ঈদ উদযাপনে পিরামিডের দেশ মিশর যেন অন্যান্য দেশের চেয়ে এক ধাপ এগিয়ে। এখানে ঈদ উদযাপন করা হয় টানা চার দিন। আর এ পুরো সময়জুড়ে মজাদার সব মাছের রান্না ঈদ উৎসবকে করে তোলে প্রাণবন্ত।নীলনদের দেশ মিসরের অন্যতম একটি ঐতিহ্যবাহী খাবার হলো ‘ফাতা’; যা ভাত, মাংস, পেঁয়াজ, ভিনেগার সবকিছুর মিশ্রণে রান্না করা হয়। ফাতার পাশাপাশি ‘কাহক’ নামের আরেকটি দারুণ জনপ্রিয় কুকি বা বিস্কুট ছাড়া মিসরীয়দের ঈদ একেবারেই জমে না।

ইরাক

রমজান এবং ঈদের সঙ্গে সম্পর্কিত প্রতিটি উৎসবে ইরাকিরা খেজুরের ওপর অনেক বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকেন। ‘ক্লাইচা’ নামের একটি ঐতিহ্যবাহী খাবার ইরাকে খুব প্রচলিত। যা না থাকলে ইরাকিদের কোনো অনুষ্ঠানই পূর্ণতা পায় না। ক্লাইচা মূলত এক ধরনের কুকি; যা বাদাম, খেজুর এবং গুলকন্দ দিয়ে বানানো হয়।

রাশিয়া

বিশ্বের সর্ববৃহৎ আয়তনের দেশ রাশিয়ায় ঈদ উদযাপন হয় ভাবগাম্ভীর্য আর আড়ম্বরপূর্ণভাবে। ঈদের দিন ঈদগাহে বসে নামাজ শেষে দেশবাসী ও মুসলিম জাহানের শান্তির জন্য দোয়া-মোনাজাত করা হয়। প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করে নেয়া হয় উপহার দেয়া-নেয়ার মাধ্যমে। তা ছাড়া একসঙ্গে ঘুরতে যাওয়া, সময় কাটানো তো আছেই। ঈদের বিশেষ খাবার হিসেবে গরুর মাংসের রয়েছে আলাদা কদর। এ দিনে তারা ‘মানতি’ নামের এক ধরনের খাবার খান, যা মাখানো আটার ভেতর ভেড়া বা গরুর মাংসের কিমার পুর দিয়ে ভাপানো হয়। পরিবেশন করা হয় মাখন এবং সাওয়ার ক্রিম দিয়ে। এ খাবার সে দেশে খুবই জনপ্রিয়।

সোমালিয়া

সোমালিয়ানদের কাছে ঈদ মানেই লোভনীয় সব মনোহর খাবার। সোমালিয়ার ঐতিহ্যবাহী মিষ্টি ‘হালভো’ খুবই জনপ্রিয়। যা বানানো হয় তেল, চিনি, কর্নস্টার্চ এবং হরেক রকমের মসলা মিশিয়ে। সোমালিয়ানদের ঈদের অনুষ্ঠানে হালভো থাকবেই থাকবে।

চীন

এশিয়ার অন্যতম প্রভাবশালী এ দেশটির মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ এলাকা জিনজিয়ান ও নিংজিয়া প্রদেশে ঈদ উপলক্ষে তিন দিনের সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়। অন্যান্য প্রদেশেও সরকারি ছুটি থাকে একদিন করে। এ দিনে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ এলাকায় সরকারিভাবে ভেড়ার মাংস সরবরাহ করা হয়। ঈদের দিন তারা জিয়াং নামের এক ধরনের বিশেষ খাবার খান, যা ভাজা আটা ও ময়দা দিয়ে তৈরি করা হয়। স্যুপ অথবা ভাত দিয়ে এটি খাওয়া হয়। এখানে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয় মসজিদে। এমনকি দিনটির সম্মানার্থে রাস্তায় টোল পর্যন্ত আদায় করা হয় না।

আজারবাইজান

মুসলিম অধ্যুষিত দেশ আজারবাইজানে মাহে রমজান এবং রমজান-পরবর্তী ঈদুল ফিতর খুবই সম্মান এবং শ্রদ্ধার সঙ্গে পালিত হয়। পরিবারগুলো পরস্পর মিষ্টি এবং অন্যান্য উপহার বিনিময় করে। এ দিনে সবাই কোলাকুলি করে ঈদের খুশি ভাগ করে নেয়। ঈদের নামাজের পর পরিবারের মৃত সদস্যদের কবর জেয়ারত করে তাদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন তারা। আজারবাইজানের দু’দিনব্যাপী আয়োজিত ঈদ উৎসবের প্রায় পুরোটাকেই ঘিরে থাকে সেখানকার মসজিদগুলো।

মরিশাস

মরিশাসে ঈদ উদযাপিত হয় একেবারে সাদামাটাভাবে। দিনটির প্রধান আকর্ষণ থাকে বিরিয়ানি। নামাজ শেষে পরস্পর ‘ঈদ মোবারক’ বলে কোলাকুলি করে বাটিভর্তি বিরিয়ানি বিনিময় করে মরিশাসের মুসলমানরা। বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়স্বজন সবাই একসঙ্গে বসে দুপুরের খাবার খান। একদিনের সরকারি ছুটিতে ঈদ উপলক্ষে পারিবারিক বন্ধনের দৃঢ়তা বেড়ে যায় বহুগুণে।

যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা

সেখানে ঈদের নামাজ আদায় করা হয় ইসলামি কেন্দ্র, খোলা মাঠ বা কনভেনশন হল অথবা মসজিদে। বিভিন্ন দেশের লাখ লাখ মুসলমান তাদের নিজস্ব সংস্কৃতি অনুযায়ী পোশাক পরিধান করে ঈদগাহে একত্রিত হন। বাচ্চাদের মধ্যে উপহার বিতরণ করা হয়। শুধু এ দিনকে মাথায় রেখে বেশকিছু দারুণ স্পাইসি খাবার রান্না করা হয়। মুসলমানরা স্থানীয় দরিদ্র লোকজনদের মাঝে খাবার বা অর্থ বিলি করে ঈদের খুশিতে শামিল করেন।

সিঙ্গাপুর

সিঙ্গাপুরে ঈদ উদযাপিত হয় বেশ জাঁকজমকতার সঙ্গে। গিলং সেরাই এলাকায় ঈদুল ফিতরের দিন রঙিন আলোয় আলোকিত হয়ে ওঠে। গিলং সেরাইয়ের রাস্তাগুলো ঈদ উপলক্ষে সাজানো হয় বেশ ঘটা করে। ৫০টিরও বেশি আলোক এবং ভিজ্যুয়াল ইনস্টলেশনের মাধ্যমে আলোকসজ্জা করা হয় সেখানে। গিলং সেরাইকে কেন্দ্র করেই সিঙ্গাপুরের ঈদুল ফিতরের উৎসব পরিপূর্ণতা পায়। সেখানেই সব মুসলমানরা ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে ভিড় জমায়। ১০০ এরও বেশি খাবারের দোকান বসে। যেখানে ঐতিহ্যবাহী মালয় খাবার পরিবেশন করে থাকে।

আইসল্যান্ড

আইসল্যান্ডবাসী ঈদের দিনও রোজা থাকেন। কারণ, গ্রীষ্মের শুরুতে সূর্য স্বাভাবিকের চেয়ে দীর্ঘ সময়ের জন্য থাকায় মধ্যরাতে সূর্যাস্ত যায় সেখানে। আইসল্যান্ডে বসবাসরত মুসলমানরা প্রতিদিন ২২ ঘণ্টা রোজা রাখেন। যদিও এটি অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং বিষয়। তবে ইসলামি নির্দেশনা অনুযায়ী তারা নিকটতম দেশের সূর্যাস্তের সময়কালের ভিত্তিতে রোজা ভাঙেন। আইসল্যান্ডের রাজধানী রেকজাভাকের কয়েকটি মসজিদে ঈদুল ফিতর উদযাপিত হয়। মসজিদের আশপাশের এলাকাতেই অতিথিদের সমাগম ঘটে। সেখানেই তারা পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপন করেন। এ সময় তারা ইন্দোনেশিয়ান, মিসরীয় এবং এরিটরিয়ানে বিভিন্ন খাবার ও পানীয় খেয়ে থাকেন। শিশুরা নতুন পোশাক পরে ছোটাছুটি করে।

নিউজিল্যান্ড

নিউজিল্যান্ডের অকল্যান্ডে ঈদুল ফিতরের উৎসব শুরু হয় সকালের নামাজের মধ্য দিয়ে। তারপরে ইডেন পার্কে অনুষ্ঠিত হয় ‘বাই অ্যানুয়াল ঈদ ডে’। সেখানে বিভিন্ন আয়োজন দেখতে একে একে ভিড় জমান নিউজিল্যান্ডবাসী। সেখানে বিভিন্ন কার্নিভালের আয়োজন করা হয়। বসে বিভিন্ন খাবারের দোকান। সবাই আনন্দ উৎসবে মেতে ওঠে। অনেকটা সাংস্কৃতিক উৎসবের মতো উদযাপিত হয় নিউজল্যান্ডের ঈদুল ফিতর। এ বিশেষ অনুষ্ঠান যেমন শিক্ষামূলক, তেমনি বিনোদনমূলক। এটি সর্বস্তরের মুসলমান দর্শকদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠান হিসেবে বিবেচিত।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত