ভারত-ইরান সম্পর্কে যেসব বিষয়ের প্রভাব
প্রকাশ : ০১ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
আলোকিত ডেস্ক
ই রানের সর্বোচ্চ নেতা আলী খামেনেই সম্প্রতি ভারতে লমানদের অবস্থা নিয়ে মন্তব্য করেছিলেন। যে দেশগুলোতে মুসলমানদের ওপর নির্যাতন করা হচ্ছে বলে অভিযোগ, সেই তালিকায় ভারতের নামও উল্লেখ করেন তিনি। ভারত অবশ্য এর জবাব দিয়েছে। ভারতের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ইরানের নেতার এ মন্তব্য ‘শুধু অগ্রহণযোগ্যই নয়, নিন্দনীয়ও বটে।’ প্রসঙ্গত, ভারত এবং ইরানের সম্পর্ক খুব পুরনো এবং একই সঙ্গে বেশ কৌতূহলোদ্দীপকও বটে! তাদের এ সম্পর্ককে প্রায়ই ‘দুই সভ্যতার সম্পর্ক’ বলা হয়। ভারত-ইরান সম্পর্ক বিভিন্ন সময় চড়াই-উতরাইয়ের মধ্য দিয়েও গেছে। দীর্ঘদিনের এ সম্পর্কে প্রভাব রয়েছে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধেরও।
১৯৭১-এর যুদ্ধ এবং ইরান : ১৯৭১-এর যুদ্ধের সময় ইরানের শাহ উদ্বিগ্ন ছিলেন। তার চিন্তার মূল কারণ ছিল পাকিস্তানের বিভাজন। এর পেছনে মূলত দুটো কারণ ছিল। প্রথমত, পাকিস্তানের বেলুচিস্তান প্রদেশের সীমান্ত ইরানের সঙ্গে লাগোয়া। দ্বিতীয়ত, তাদের আশঙ্কা ছিল সেই সময়ের ঘটনাপ্রবাহের পরিপ্রেক্ষিতে সোভিয়েত ইউনিয়ন ওই অঞ্চলে হস্তক্ষেপের সুযোগ না পেয়ে যায়! অধ্যাপক ও ঐতিহাসিক শ্রীনাথ রাঘবন তার গ্রন্থ ‘১৯৭১ গ্লোবাল হিস্ট্রি অব ক্রিয়েশন অব বাংলাদেশ’-এ লিখেছেন, ১৯৭১ সালের মে মাসে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব টিএন কাউল ইরানের শাহের সঙ্গে দেখা করতে তেহরান গিয়েছিলেন। ভারতের কাছে গোয়েন্দা সূত্রে তথ্য ছিল যে, ইরান পাকিস্তানে অস্ত্র পাঠিয়েছে। মি. কাউল শাহকে অনুরোধ করেছিলেন পাকিস্তানকে অস্ত্র না দিতে এবং ইয়াহিয়া খানকে বোঝাতে যে, বিষয়টা এমন পর্যায়ে না চলে যায়, যাতে সেটা বড় সংকটে পরিণত হয়। কিন্তু এ বৈঠকের আগেই ইরানের শাহ ইয়াহিয়া খানকে তার নীতি পরিবর্তনের জন্য চাপ দিতে শুরু করেছিলেন। মুহাম্মদ ইউনুসও তার ‘ভুট্টো অ্যান্ড দ্য ব্রেকআপ অব পাকিস্তান’ গ্রন্থে লিখেছেন, শাহ পরে ভুট্টোকে বলেছিলেন, আমি ইয়াহিয়াকে রাজনৈতিক পদক্ষেপ নিতে অনুরোধ করেছিলাম। আমার পরামর্শ ছিল, শেখ মুজিবের আওয়ামী লীগের দলকেই সরকার গঠনের পথ প্রশস্ত করে দিতে হবে।
ইন্দিরা গান্ধীকে ইরানের শাহের বার্তা : ১৯৭১ সালের ২৩ জুন ভারতে ইরানের রাষ্ট্রদূত প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে দেখা করেন। তিনি ইন্দিরা গান্ধীকে ইরানের শাহের মৌখিক বার্তা পৌঁছে দেন। ইরানের শাহের বার্তা ছিল, তিনি (ইন্দিরা গান্ধী) এবং ইয়াহিয়া খান যেন একে অপরের সঙ্গে কথা বলেন। পিএম মিউজিয়াম অ্যান্ড লাইব্রেরিতে (সাবেক নেহরু মেমোরিয়াল) সংরক্ষিত ‘হাকসার পেপারস’ থেকে জানা যায়, ইন্দিরা গান্ধী বিশ্বাস করতেন, এটা একটা ‘অদ্ভুত পরামর্শ; বাস্তবতার সঙ্গে যার কোনো সম্পর্ক নেই। ইন্দিরা গান্ধী তৎক্ষণাৎ তার একজন মন্ত্রীকে পাঠিয়ে রেজা শাহ পাহলভিকে বার্তা দেন যে, পশ্চিম ও তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের নেতাদের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমেই একমাত্র এ সমস্যার সমাধান সম্ভব। সেই বার্তায় ইন্দিরা গান্ধী উল্লেখ করেছিলেন, আপনার বার্তার প্রেক্ষিতে আমি শুধু এটুকুই বলতে পারি, পাকিস্তান যে সমস্যার সৃষ্টি করেছে, তার ব্যাপকতা সম্পর্কে সম্ভবত আমরা বোঝাতে পারিনি। (হাকসার পেপারস, ফাইল ১৬৮)।
অস্ত্র পাঠানো নিয়ে প্রশ্ন : ১৯৭১ সালের যুদ্ধের আগে যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানে অস্ত্র পাঠানোর জন্য বেশ কয়েকটা বিকল্পের কথা বিবেচনা করেছিল। সেই তালিকায় ইরানও ছিল। শ্রীনাথ রাঘবন লিখেছেন, শাহ মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে বলেছিলেন, তিনি পাকিস্তানে যুদ্ধবিমান ও পাইলট পাঠাতে চাইছেন না। কারণ, তিনি সোভিয়েত ইউনিয়নের সঙ্গে বিরোধ চান না। তার পরামর্শ ছিল, জর্ডানে বিমান পাঠাতে প্রস্তুত তিনি। জর্ডান পাকিস্তানে বিমান পাঠাতে পারে। মুহাম্মদ ইউনূস লিখেছেন, আসলে পাকিস্তানের সঙ্গে ইরানের একটা গোপন চুক্তি ছিল যে, ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ হলে করাচির বিমান নিরাপত্তার দায়িত্ব থাকবে ইরানের। ইয়াহিয়া খান ইরানকে এ চুক্তির কথা স্মরণ করিয়ে দিলেও শাহ তার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেননি। তার যুক্তি ছিল, ভারত-পাকিস্তানের যুদ্ধ শুধু দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধতেই সীমাবদ্ধ নেই।
ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক মজবুত করতে ইরানের আগ্রহ : নোবেলজয়ী কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৯৩২ সালে ইরান সফরে গিয়েছিলেন। এ সময় দুই দেশের মধ্যে; কিন্তু কোনো রকম রাজনৈতিক সম্পর্ক ছিল না। ভারত একটা ব্রিটিশ উপনিবেশ ছিল, আর অন্যদিকে ইরান স্বাধীন ছিল। যদিও সেখানে স্পষ্টতই ব্রিটেনের প্রভাব ছিল। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর চতুর্দশ শতাব্দীর ফার্সি কবি হাফেজের একজন গুণমুগ্ধ ছিলেন। শিরাজে হাফেজের সমাধিস্থলও পরিদর্শন করেছিলেন তিনি। স্বাধীনতার আগে ভারতের সীমানা ইরানের লাগোয়া ছিল; কিন্তু দেশভাগের পর সবকিছু বদলে যায়। ১৯৫৩ সালে ইরানের শাহ ক্ষমতায় ফিরে এলে তারা পশ্চিমাদের পক্ষ নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। অন্যদিকে ভারত জোট নিরপেক্ষ দেশ হওয়ার নীতি বেছে নেয়। ইরানই প্রথম দেশ, যারা পাকিস্তানকে স্বীকৃতি দেয়। ১৯৬৫ এবং ১৯৭১ সালের দুটো যুদ্ধতেই ইরান পাকিস্তানকে সমর্থন করেছিল। ১৯৬৯ সালে ইরানের শাহ প্রথমবার ভারতে আসেন। আর ১৯৭৩ সালে ইরান সফরে গিয়েছিলেন ইন্দিরা গান্ধী। ১৯৭৪ সালের অক্টোবরে শাহ আবার ভারতে আসেন। এ সফর বেশ তাৎপর্যপূর্ণ ছিল। কারণ, এটা ভারতের প্রথম পারমাণবিক পরীক্ষার কয়েক মাস পরে হয়েছিল। এ সফরের পরে, ভারত ইরান থেকে প্রচুর পরিমাণে অপরিশোধিত তেল আমদানি শুরু করে। এছাড়া দুই দেশ কুদ্রেমুখ লৌহ আকরিক প্রকল্প বিকাশের জন্যও সম্মত হয়।
ইসলামি বিপ্লবের পরের চিত্র : ১৯৭৯ সালের ইসলামি বিপ্লবের পর ইরানের অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক অবস্থার পরিবর্তন হয়। কিন্তু কাশ্মীর সম্পর্কে ইরানের অবস্থান এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের সঙ্গে ভারতের ক্রমবর্ধমান ঘনিষ্ঠতা সত্ত্বেও ইরানের নতুন নেতৃত্ব ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের বিষয়ে আগ্রহী ছিল। এদিকে ১৯৮০ এবং ১৯৯০-এর দশকে ভারতের অপরিশোধিত তেলের চাহিদা পূরণের জন্য ইরান একটা গুরুত্বপূর্ণ দেশ হয়ে ওঠে। চাবাহার বন্দর প্রকল্প এবং আফগানিস্তানের সঙ্গে মধ্য এশিয়াকে যুক্ত করার লক্ষ্যে দুই দেশ একসঙ্গে কাজও করেছে। তালেবানের উত্থানের পর বুরহানউদ্দিন রব্বানির নেতৃত্বাধীন নর্দার্ন অ্যালায়েন্স ভারত ও ইরান উভয়ের সমর্থন পায়। অন্যদিকে পাকিস্তান ও তালেবানের মধ্যে সম্পর্ক ছিল সুবিদিত।
চাবাহার বন্দরের বিকাশ : ২০০৩ সালে রাষ্ট্রপতি মুহাম্মদ খাতামির ভারত সফরের সময় ভারত ও ইরান ‘দিল্লি ঘোষণাপত্র’ স্বাক্ষর করে। যার অধীনে আঞ্চলিক নিরাপত্তা, সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলা এবং পারস্পরিক বাণিজ্যের ওপর জোর দেয়া হয়েছিল। পাকিস্তানকে ‘পাশ কাটিয়ে’ আফগানিস্তানে পৌঁছানোর জন্য চাবাহার বন্দরের উন্নয়ন ভারত-ইরান সম্পর্কের মূল বিষয় হয়ে ওঠে। এ সম্পর্ক চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে, যখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। সেই নিষেধাজ্ঞাগুলো কার্যকর করার জন্য ভারতসহ একাধিক দেশকে ইরানের কাছ থেকে তেল না কেনার জন্য চাপ দিতে থাকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। তা সত্ত্বেও চাবাহার প্রকল্পের প্রতি ভারতের আগ্রহ কমেনি। ভারত, ইরান ও পাকিস্তান- এই তিন দেশকে যুক্ত করতে তেলের এই পাইপলাইন নির্মাণের সম্ভাবনা নিয়ে গুরুত্বসহ ভাবনা-চিন্তা করেও শেষে নিরাপত্তাজনিত কারণে এই প্রকল্প থেকে সরে আসার সিদ্ধান্ত নেয় ভারত।
ইরানের বিরুদ্ধে ভারতের ভোট : অধ্যাপক এবং দক্ষিণ এশিয়ার কৌশলগত বিষয়ে বিশেষজ্ঞ ও পররাষ্ট্র বিশেষজ্ঞ অবিনাশ পালিওয়াল তার গ্রন্থ ‘মাই এনিমিস এনিমি’-তে লিখেছেন, ২০০৯ সালে আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থার (আইএইএ) মঞ্চে ইরানের পরমাণু কর্মসূচির বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছিল ভারত। কিন্তু তারপর ২০১৩ সালে মনমোহন সিং এবং ২০১৬ সালে নরেন্দ্র মোদি ইরান সফরে যান। এদিকে ইসরায়েল ও সৌদি আরবের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের গভীরতা স্বভাবতই ইরানের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কে প্রভাব ফেলেছে। ইরানের সঙ্গে বাণিজ্য ও জ্বালানি সংক্রান্ত সম্পর্কের মাধ্যমে এই ‘দূরত্ব’ দূর করার চেষ্টা করলেও দুই দেশের রাজনৈতিক মতপার্থক্য রয়ে গেছে। গার্ডিয়ান পত্রিকায় ‘আফগান তালেবান সেন্ড ডেলিগেশন টু ইরান’ শীর্ষক নিবন্ধে সাংবাদিক এমা গ্রাহাম হ্যারিসন লিখেছেন, আফগানিস্তানের অভ্যন্তরে ইরানের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো তালেবানের একটা অংশ ও অন্যান্য মার্কিনবিরোধী গোষ্ঠীর সঙ্গে তারা সুন্নি হওয়া সত্ত্বেও সম্পর্ক গড়ে তুলতে থাকে এবং তাদের সাহায্যও করে। তালেবান ও পাকিস্তানবিরোধী অভিযানে ইরানের সক্রিয় সহযোগিতা প্রত্যাশা করা ভারতের নীতিনির্ধারকদের জন্য একটা বিশাল বড় চ্যালেঞ্জ ছিল। এদিকে চাবাহার বন্দর এবং জারাঞ্জ-ডেলারাম মহাসড়কে ভারতের বিনিয়োগ ভারত-ইরান-আফগানিস্তান সম্পর্কে ত্রিপাক্ষিক কৌশলগত প্রসার এনে দেয়। এই মহাসড়ক ইরানকে আফগানিস্তানের সঙ্গে জুড়েছে। ফলে ভারত আফগানিস্তানে পণ্য পাঠানোর জন্য ইরানের স্থলভাগ ব্যবহার করতে পারে।
আফগানিস্তানে সালমা বাঁধ নিয়ে ইরানের ক্ষোভ : আফগানিস্তানে সালমা বাঁধ নির্মাণ করে ভারত। একে কেন্দ্র করে শুধু কাবুল ও তেহরানের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয়নি, ইরানও ক্ষুব্ধ হয়েছিল ভারতের ওপর। অবিনাশ পালিওয়াল লিখেছেন, হরিরুদ নদীর ওপর নির্মিত এই বাঁধ ইরান ভালোভাবে নেয়নি। সালমা বাঁধের কারণে ইরানের জল আফগানিস্তান নিয়ন্ত্রণ করে। জল বণ্টন ইস্যুতে দুই দেশের মধ্যে অবিশ্বাসের ইতিহাস রয়েছে। এর আগে ১৯৭১ সালে হেলমান্দ নদীর জল বণ্টন ইস্যুকে ঘিরে দুই দেশের কূটনীতিকদের মধ্যে তীব্র বাগবিতণ্ডা হয়েছিল। ১৯৯৮ সালে মাজার-ই-শরিফে ইরানি কূটনীতিকদের অপহরণের পর আফগানিস্তানে হামলা চালানোর হুমকি দেয় ইরান। অবিনাশ পালিওয়াল লিখেছেন, তালেবান সরকার হেলমান্দ নদীকে দক্ষিণ দিকে ঘুরিয়ে দিয়েছিল। ফলে হামুন-ই-হেলমান্দ হ্রদ শুকিয়ে যায়। এর ফলে সেই অঞ্চলের ফসল ও বন্যপ্রাণী ধ্বংস হয়ে যায়। ২০০৫ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি ইরানের তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী কামাল খরাজী প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে সালমা বাঁধ নির্মাণের বিষয়ে একটি আনুষ্ঠানিক অভিযোগ করেন। এ বিষয়ে ভারতের বক্তব্য ছিল, ইরান ও আফগানিস্তানের নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে নেয়া উচিত।
ভারতের জন্য ইরানের গুরুত্ব : ইরান এবং তালেবানের কৌশলগত জোট প্রশ্ন তুলেছে যে, যদি শিয়া ইরান ও সুন্নি তালেবানের মধ্যে সমঝোতা হতে পারে, তাহলে কেন ভারতের পক্ষ থেকে তা সম্ভব নয়? বিভিন্ন ইস্যুতে ইরানের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েন এবং যুক্তরাষ্ট্রের বিরোধিতা সত্ত্বেও দুই দেশ চাবাহারের মতো প্রকল্পে একসঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভারতের ক্রমবর্ধমান সম্পর্ক, চীনের সঙ্গে ইরানের ক্রমবর্ধমান ঘনিষ্ঠতা, উপসাগরীয় ও আফগানিস্তানের আঞ্চলিক রাজনীতি এবং তালেবানের ক্ষমতায় প্রত্যাবর্তন সত্ত্বেও ইরানের কাছ থেকে ভারত কিন্তু দূরে সরে যায়নি। ইরানের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও ভারত এখনও ইরানের সহায়তায় টেকসই জ্বালানি সরবরাহ বজায় রাখতে আগ্রহী। পশ্চিমাদের ক্রমবর্ধমান চাপকে মাথায় রেখে ইরানও কিন্তু ভারতকে তার তেল রপ্তানির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচনা করে। এটা বলাই যায়, রাজনৈতিক উত্তেজনা সত্ত্বেও ভারতের কাছে ইরানের কৌশলগত গুরুত্ব কমেনি।