মুসলিম বিশ্ব পরিচিতি

প্রকাশ : ০১ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আলোকিত ডেস্ক

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্যতম বর্ধনশীল অর্থনীতির দেশ মালয়েশিয়া। কয়েক দশক ধরে শিল্প খাতের সম্প্রসারণ ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা দেশটিকে বেশ সাফল্য এনে দিয়েছে। দক্ষিণ চীন সাগর বয়ে যাওয়ার কারণে দুটি অঞ্চলে বিভক্ত হয়েছে দেশটি। ৩টি ফেডারেল ভূখণ্ড ও ১৩টি রাজ্য নিয়ে একটি বহুজাতিক দেশ মালয়েশিয়া। দেশটিতে নানা ধর্মের মানুষের বাস। দেশটিতে বসবাসকারী সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম মালয়রা রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী। বৈষম্যের কারণে ব্যবসা, শিক্ষা ও সরকারি চাকরিতে অতিরিক্ত সুবিধা ভোগ করে এ গোষ্ঠী। তবে অর্থনৈতিক দিক থেকে দেশটিতে চীনা বংশোদ্ভুত সংখ্যালঘু গোষ্ঠী প্রভাব বিস্তার করে। দেশটিতে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিরাজমান। উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে লাভবান হচ্ছে মালয়েশিয়া। পর্যটকদের কাছে অন্যতম প্রধান আকর্ষণ দেশটি। তবে পর্যটন খাতের উন্নয়নের কারণে পরিবেশের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা। বিশেষ করে, দেশটির উত্তর বোর্নিও দ্বীপের রেইন ফরেস্টের পাম তেলের আবাদ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন অনেকে।

মালয়েশিয়ার গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য

রাষ্ট্রীয় নাম : ফেডারেশন অব মালয়েশিয়া

রাজধানী : কুয়ালালামপুর

আয়তন : ৩ লাখ ২৯ হাজার ৮৪৭ বর্গ কিলোমিটার

জনসংখ্যা : ৩ কোটি ১০ লাখ

প্রধান ভাষা : ইংরেজি, মালয়, চীনা, তামিল, তেলেগু ও মালায়লাম

প্রধান ধর্ম : ইসলাম, তাওবাদ, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান, শিখ ও সনাতন

গড় আয়ু : পুরুষ ৭৩, নারী ৭৮ বছর

মুদ্রা : রিঙ্গিত

নেতৃত্ব : রাজা সুলতান আবদুল্লাহ। সুলতান মুহাম্মদের পর ২০১৯ সালে দেশটির রাজা হন পাহাং-এর সুলতান আবদুল্লাহ। পাঁচ বছর পরপর দেশটির ৯টি মালয় রাজ্য থেকে পালাক্রমে রাজা নির্বাচিত হন।

প্রধানমন্ত্রী : আনোয়ার ইব্রাহিম। মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদের পদত্যাগের পর ২০২২ সালে রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেন আনোয়ার ইব্রাহিম। ছোট ছোট কয়েকটি দল নিয়ে গঠিত তার রাজনৈতিক দল পাকাতান হারাপান (পিএইচ)। দক্ষিণ এশিয়ার দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতি মালয়েশিয়ার রাজনীতিতে দুজনের নাম সবচেয়ে বেশি আলোচিত। একজন দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ড. মাহাথির মোহাম্মদ ও অপরজন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম।

সংবাদমাধ্যম : ২০১৮ সালে সরকার পরিবর্তনের পর দেশটির সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা বৃদ্ধি পেয়েছে। সাংবাদিকতায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা আইনগুলো বাতিল করতে উদ্যোগ নিচ্ছেন দেশটির কর্মকর্তারা। টেলিভিশন সেক্টরের মধ্যে রাষ্ট্রীয় ও বেসরকারি চ্যানেলগুলো বেশ প্রচলিত। দেশটির সবচেয়ে ক্ষমতাধর মিডিয়াগোষ্ঠী হলো পে টিভি। মালয়েশিয়ার শীর্ষস্থানীয় জাতীয় চ্যানেল টিভি ৩-এরও মালিকানা পে টিভির। দেশটির জনসংখ্যার ৮০ শতাংশই নিত্যদিনের খবরের জন্য ইন্টারনেট ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ওপর নির্ভরশীল।

মালয়েশিয়ার ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ কিছু ঘটনা

চতুর্দশ শতক : ইসলামধর্ম গ্রহণ করা শুরু করে মালয়রা।

১৮২৬ : মালাক্কা, পেনাং এবং সিঙ্গাপুরের ব্রিটিশ শাসিত অঞ্চলগুলো একত্রিত করা হয়; উপদ্বীপটিতে উপনিবেশ স্থাপন করে ব্রিটিশরা।

১৮৯৫ : চারটি মালয় রাজ্য একত্রিত হয়ে মালয় রাজ্য গঠন করে।

১৯৪২-৪৫ : জাপান অঞ্চলটিকে দখল করে।

১৯৪৮ : মালয় ফেডারেশনের অধীনে ব্রিটিশ শাসিত মালয় অঞ্চলগুলো একীভূত হয়।

১৯৫৭ : মালয় ফেডারেশন স্বাধীন হয়।

১৯৬৫ : মালয়েশিয়া থেকে আলাদা হয়ে যায় সিঙ্গাপুর।

২০০১ : দীর্ঘদিনের বিরোধের অবসান এবং একটি নতুন সেতু ও টানেল নির্মাণে সম্মত হয় মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুর।

২০০৩ : ২২ বছর ক্ষমতায় থাকার পর পদত্যাগ করেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ।

২০১৮ : ভিন্ন রাজনৈতিক দল থেকে নির্বাচনে জয়ী হয়ে আবার ক্ষমতায় আসেন মাহাথির মোহাম্মদ।