যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর ধারাবাহিক বিমান হামলা অব্যাহত রয়েছে। গত রোববার ভোরে খান ইউনিসের একটি আবাসিক এলাকায় ইসরায়েলি বাহিনীর বোমা হামলায় সেখানে ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে ফিলিস্তিনিদের লাশ। খান ইউনিসের বাসিন্দা জামাল আল-মাধৌন আল-জাজিরাকে জানিয়েছেন, কীভাবে তিনি ভোরে একটি আবাসিক বাড়িতে বোমা হামলায় বেঁচে গিয়েছিলেন।
তিনি বলেছেন, ‘আমরা শান্তিতে ঘুমাচ্ছিলাম এবং হঠাৎ বাড়িগুলো গুঁড়িয়ে দেয়া হয়। নিরীহ নারী ও শিশুদের মাথার ওপর ছাদ উপড়ে ফেলা হয়েছে। ভারী ক্ষেপণাস্ত্র শিশুদের ওপর নিক্ষেপ করা হয়।’ জামাল আরও বলেছেন, ‘আমরা ধ্বংসস্তূপ থেকে আটজনের লাশ উদ্ধার করেছি। তাদের সবাই নারী ও শিশু। একজন পুরুষও নেই। তারা (ইসরায়েলিরা) মিথ্যা দাবি তুলেছে, তারা যোদ্ধাদের নিশানা করছে। পুরোটাই মিথ্যা। তাদের লক্ষ্য মুসলিম পরিচয়ের যে কোনো মানুষকে হত্যা করা। এ নিরীহ নারী ও শিশু সবার লাশ ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে।’
২৪ ঘণ্টায় গাজার বেশ কয়েকটি লক্ষ্যবস্তুতে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী আবারও হামলা চালিয়ে অন্তত ৪৬ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে। আল-জাজিরা জানিয়েছে, গত রোববার ভোর থেকে খান ইউনিসে ইসরায়েলি বাহিনী একটি আবাসিক ভবন এবং বাস্তুচ্যুত লোকদের আশ্রয় দেয়া একটি তাঁবু লক্ষ্য করে হামলা চালানোর পর থেকে খান ইউনিসে কমপক্ষে নয়জনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। উদ্ধারকারীরা ধ্বংসস্তূপের মধ্যে হতাহতদের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছেন। একটি মেডিকেল সূত্র জানিয়েছে, গাজা সিটির পূর্বাঞ্চলীয় শুজাইয়া এলাকা লক্ষ্য করে চালানো বিমান হামলায় তিনজন নিহত হয়েছেন। একই শহরের জেইতুন এলাকার আইন জালুত স্কুলের কাছে একটি বাড়িতে ইসরায়েলি বিমান হামলায় আরও দুজন নিহত। বেশ কয়েকজন আহতও হয়েছেন। খান ইউনিসের পশ্চিমে আল-মাওয়াসিতে বাস্তুচ্যুতদের আশ্রয় দেয়া একটি তাঁবুতে ইসরায়েলি গোলাবর্ষণে এক ফিলিস্তিনি শিশু নিহত এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। খান ইউনিসের পূর্বাঞ্চলীয় আবাসন আল-কাবিরায় আর্টিলারি গোলাবর্ষণে আরও একজন নিহত ও চারজন আহত হয়েছেন। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, ইসরায়েলি বাহিনী দক্ষিণ গাজা উপত্যকার উত্তর রাফায় আবাসিক ভবন ধ্বংস অব্যাহত রেখেছে। এদিকে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বলেছে, নতুন একটি সামরিক করিডর প্রতিষ্ঠার জন্য দক্ষিণ গাজায় অভিযান শুরু করেছে সেনারা। এ করিডর প্রতিষ্ঠা করা হলে রাফা নগরী উপত্যকার অন্যান্য অঞ্চল থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে।