ঢাকা ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

তারুণ্যের কথাসাহিত্যিক মোশতাক আহমেদ

তারুণ্যের কথাসাহিত্যিক মোশতাক আহমেদ

খুব সকালে ফোন পেয়ে রাহাতদের বাড়িতে ছুটে এলো রিতিশা। লাবণী নামের অপূর্ব সুন্দরী এক মেয়ে নৃশংসভাবে খুন হয়েছে রাহাতদের রান্নাঘরে। চাপাতি দিয়ে কেটে ফেলা হয়েছে লাবণীর বাঁ পায়ের একাংশ, শরীরে রয়েছে আরও ছোট-বড় ক্ষত। প্রেমিকের বাসায় এরকম একটা লোমহর্ষক ঘটনা দেখে একেবারে হতভম্ব হয়ে গেল রিতিশা। বাড়িতে রাহাত আর তার মা সাদিয়া বেগম ছাড়া কেউ ছিল না। অথচ দু’জনই অস্বীকার করছে খুনের সঙ্গে নিজেদের সম্পৃক্ততার বিষয়টি। তৃতীয় কারো প্রবেশেরও উপায় নেই, বাইরের গেট, দরজা সব বন্ধ ছিল রাতে। তাহলে কীভাবে খুন হলো লাবণী? অশরীরী কোনো কিছুর হাত আছে নিশ্চয়! পুলিশ অবশ্য বিশ্বাস করল না রাহাতের বক্তব্য। গ্রেপ্তার করল তাকে। ঘটনার আকস্মিকতায় স্ট্রোক করলেন সাদিয়া বেগম। আপন বলতে তাদের তেমন কোনো আত্মীয়স্বজন নেই। ভরসা রিতিশাই। রিতিশা অবশ্য দৃঢ়প্রতিজ্ঞ, যে কোনো উপায়ে মুক্ত করবে রাহাতকে। কারণ সে বিশ্বাস করে, ভার্সিটির নবীন শিক্ষক রাহাত কিংবা তার মা এরকম হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকতে পারে না। কিন্তু বাস্তবতা যে বড় কঠিন। কেউ নেই তার সঙ্গে।

এক পর্যায়ে সে যখন হতাশ, বিষাদগ্রস্ত, তখনই ঘটনাক্রমে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ হয় ডাক্তার তরফদারের। একটি একটি করে রহস্যের জট খুলতে থাকেন তিনি। মানসিক চিকিৎসার পাশাপাশি অশরীরীয় শক্তি খুঁজতে গিয়ে এবার তিনি হয়ে ওঠেন প্যারাসাইকোলজিক্যাল ইনভেস্টিগেটর। শেষ পর্যন্ত কি ডাক্তার তরফদার লাবণীর প্রকৃত খুনিকে শনাক্ত করতে পেরেছিলেন? আর কী ঘটেছিল রিতিশার জীবনে? সে কি ফিরে পেয়েছিল তার স্বপ্নের রাহাতকে? পুরো ঘটনাটি জানা যাবে মেঘে ঢাকা জোছনা বইটিতে। মাঝ রাত। জোছনা হাঁটছে লাল ইটের একটা রাস্তা দিয়ে। হঠাৎ সে অনুভব করে কেউ তাকে অনুসরণ করছে। পেছনে তাকিয়ে দেখে একটি ছায়া। ভয়ে দৌড় দেয় সে। প্রবেশ করে নির্জন এক জমিদারবাড়িতে। কিন্তু ছায়া তার পিছু ছাড়ে না। একেবারে এসে থামে তার সামনে। জোছনা চিনতে পারে না ছায়ার পুরুষটিকে, মুখের ওখানে জমাট বাঁধা অন্ধকার। শুধু খাড়া দুটো কান দেখা যায়। ভয়ে জমে যাওয়ার মতো অবস্থা হয় জোছনার। এই বুঝি ছায়াটা তার কোনো ক্ষতি করে। কিন্তু না! কী যেন বলতে চায় ছায়া। বলতে চেষ্টা করেও পারে না। তারপর হঠাৎই ধীরে ধীরে বিকৃত হয়ে যেতে থাকে ছায়ার চেহারা। ভয়ে ও আতঙ্কে চিৎকার করে ওঠে জোছনা। জোছনার স্বামী বাদল তখন ডেকে তোলে জোছনাকে। বলে পুরো বিষয়টি ছিল স্বপ্ন। কিন্তু এই একই স্বপ্ন বারবার দেখতে থাকে জোছনা। এক সময় বাদল বুঝতে পারে জোছনার এই স্বপ্নের বিশেষ কোনো অর্থ আছে। তাই আসে ডাক্তার তরফদারের কাছে। জোছনার সঙ্গে কথা বলে ডাক্তার তরফদার বুঝতে পারেন জোছনার স্বপ্নের যৌক্তিকতা আছে, আছে সত্যতা। তাছাড়া জোছনার মন বন্দি অজানা এক জমিদারবাড়ির গোপন কক্ষে, যেখানে অনেক ধনসম্পদ রয়েছে। জোছনা চেষ্টা করেও বের হতে পারছে না ওই গোপন কক্ষ থেকে। যদি তাকে উদ্ধার করা সম্ভব না হয় নিশ্চিত মৃত্যু হবে তার। শেষ পর্যন্ত কি ডাক্তার তরফদার খুঁজে পেয়েছিলেন গোপন ওই কক্ষটি? উদ্ধার করতে পেরেছিলেন জোছনাকে? আর ওই ছায়াটাই বা কে ছিল? কেন অনুসরণ করত জোছনাকে? কী উদ্দেশ্য ছিল জোছনার ওই ছায়ার? জানা যাবে জোছনার ছায়া নামক বইটিতে। এই রকম শত শত বই লিখে বাংলার অন্যতম কথাসাহিত্যিক মোশতাক আহমেদ পাঠকের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছেন খুব সহজেই।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত