নূপুর আক্তার বিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনার এক অদম্য শিক্ষিকা। ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার ৭১নং কাদিগড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রথমে সহকারী পরে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা হিসেবে যোগদানের মাত্র অল্প দিনেই স্কুলের লেখাপড়ার মান সহ সার্বিক বিষয়ে অভূতপূর্ব উন্নয়ন সাধনে ব্যাপক ভুমিকা রেখেছেন নূপুর আক্তার। সম্প্রতি বিদ্যালয়টি পরিদর্শনে গিয়ে কয়েকজন ঊর্ধ্বতন শিক্ষা অফিসার বিদ্যালয়টির শিক্ষার সার্বিক পরিবেশ দেখে সন্তোষ্টি প্রকাশ করেছেন। এলাকাবাসী, অভিভাভক, জমিদাতা, বিদ্যালয়ের অন্যান্য সহকারী শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীরাও নূপুর আক্তারের সার্বিক কার্যক্রমের প্রতি উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছেন। জানা গেছে নূপুর আক্তারের অন্যত্র বদলীর খবর শুনে বদলি বাতিল করার জন্য লিখিতভাবে উপজেলা শিক্ষা অফিসার বরাবর আবেদন করেছেন। বিদ্যালয়ের সার্বিক বিষয় নিয়ে সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০১৩ সালের ২৭ নভেম্বরে সহকারী শিক্ষিকা হিসেবে চাকুরীতে যোগদানের পর থেকে ৭৫ নং জামিরদিয়া স. প্রা. বি. এ চাকরি শুরু করেন। বদলী সূত্রে ২০১৯ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারী কাদিগড় স. প্রা. বিদ্যালয়ে যোগদানের পর ২০২২ সালের ৪ এপ্রিল উপজেলা শিক্ষা অফিস থেকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব প্রদান করেন। দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে বিদ্যালয়ের সার্বিক শিক্ষার পরিবেশ ভালো হবার কারনে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের ঝরে পরা রোধ ও শিক্ষার্থী বৃদ্ধি পেয়েছে। এ জন্য অন্যান্য শিক্ষকদের নিয়ে শিক্ষার্থীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করেছেন তিনি। নিয়মিত মা সমাবেশ ও অভিভাবক সমাবেশ আয়োজন করে শিক্ষার্থী, অভিভাবক এবং এলাকাবাসীর হৃদয় জয় করে নিয়েছেন। বিদ্যালয়ে প্রতিদিন প্রতিটি পাঠদান নিশ্চিত করণের পাশাপাশি অনিয়মিত শিক্ষার্থীদের নিয়মিত করতে হোমভিজিটের পাশাপাশি মোবাইল কলের মাধ্যমে যোগাযোগ করে সেখানেও সাফল্যের স্বাক্ষর রেখেছেন নূপুর আক্তার। বিদ্যালয়ের জন্য আসা প্রতিটি উন্নয়ন বরাদ্ধের সর্বোচ্চ স্বচ্ছতার মাধ্যমে সরকারি অর্থের যথাযথ ব্যবহারের মাধ্যমে উন্নতি সাধন এবং পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার বিষয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টিতেও উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেছেন নূপুর আক্তার। বিদ্যালয়ের শিশু শ্রেণী ও ১ম শ্রেণির অভিভাবকদের জন্য তিনি যেমন বসার ব্যবস্থা করেছেন তেমনি উপজেলার মধ্যে অন্যতম দৃষ্টিনন্দন করে সাজিয়েছেন শিশু শ্রেণিকে। ভালুকা উপজেলা থেকে বদলী হওয়া সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার শিকদার হারুন অর রশিদ বিদ্যালয়টির শিশু শ্রেণিকে মডেল হিসেবে নিয়ে আশেপাশের বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অত্র বিদ্যালয়ের শিশু শ্রেণী পরিদর্শন করার জন্য নির্দেশ দিয়েছিলেন। এছাড়া শিক্ষার্থীদের দিয়ে দেয়ালিকা তৈরি, মাটি এবং কাগজ দিয়ে বিভিন্ন ধরনের উপকরণ তৈরি সহ শিক্ষার্থীদের মাঝে বিভিন্ন সৃজনশীল কাজে উৎসাহ সৃষ্টি করেছেন তিনি। কিছুদিন আগে বিদ্যালয়ের শিক্ষার সার্বিক শিক্ষার পরিবেশ নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে উপজেলা শিক্ষা অফিসার সৈয়দ আহমেদ আশেপাশের ৮/১০ টি বিদ্যালয়ের মধ্যে অন্যতম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে উল্লেখ করেন। ময়মনসিংহ সহকারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আবু ইউসুফ খান কিছুদিন আগে বিদ্যালয় পরিদর্শন করে সন্তোষ্টি প্রকাশ করেছেন। বিদ্যালয়টির জমি দাতা সদস্য এবং পি.টি.এ. সভাপতি রুমি তালুকদার বলেন, নূপুর আক্তার দায়িত্ব গ্রহণ করার পর থেকে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের সংখ্যা বাড়তে শুরু করেছে। বর্তমানে অতীতের যে কোন সময়ের তুলনায় শিক্ষার পরিবেশ খুবই ভালো। বিদ্যালয়টির সার্বিক শিক্ষার পরিবেশ নিয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নূপুর আক্তার বলেন, বিদ্যালয়ের সকল স্টাফদের আন্তরিক প্রচেষ্টার কারনে শিক্ষার মান বৃদ্ধি পেয়েছে। এলাকাবাসী তাদের সন্তানদের বিদ্যালয় মুখী করছে। এলাকাবাসী এবং অভিভাবকদের সহযোগিতা অব্যাহত থাকলে আমি সহ সকল স্টাফরা মিলে বিদ্যালয়টিকে একটি মডেল বিদ্যালয় হিসেবে গড়ে তুলতে চাই।