ঐতিহ্যবাহী নরসিংদী জেলা মনোহরদী উপজেলার পীরপুর গ্রামে বীর মুক্তিযোদ্ধা শওকত আলী মাস্টার স্মৃতি কল্যাণ ট্রাস্টের উদ্যোগে বিজয় দিবস উদযাপন ও মুক্তিযোদ্ধা সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সম্প্রতি শওকত আলী মাস্টার স্মৃতি গণপাঠাগার অডিটরিয়ামে সৃজনশীল এ আয়োজনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আগামী প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী বীর মুক্তিযোদ্ধা ওসমান গনি। সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ পুলিশে কর্মরত ডিএমপির ওয়ারী বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ ইকবাল হুসাইন, বিপিএম। শিক্ষক ও লেখক শওকত আলী মাস্টার স্মৃতি কল্যাণ ট্রাস্টের সাধারণ সম্পাদক মাকসুদুল আলম মাসুমের অনুষ্ঠান পরিচালনায় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পাঠকপ্রিয় জাতীয় দৈনিক আলোকিত বাংলাদেশের লেখক-পাঠক-শুভানুধ্যায়ীদের সংগঠন দেশ গড়ার কাজে নিবেদিত ‘আলোকিত বন্ধু ফোরাম’র বিভাগীয় প্রধান ও কো-অর্ডিনেটর মুহাম্মদ আশরাফ উদ্দিন, যুগান্তরের মনোহরদী উপজেলা প্রতিনিধি মো. হারুনুর রশীদ, খিদিরপুর ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার নজরুল ইসলাম, বীর মুক্তিযোদ্ধা তোফাজ্জল হোসেন, ন ম মোস্তফা, মোখলেছুর রহমান। প্রধান অতিথি ওসমান গণি বলেন, আজকের এ আয়োজন খুবই আনন্দের। যাদের ত্যাগ ও সাহসের মাধ্যমে আমাদের এদেশ পেয়েছি, তাদের সংবর্ধনা দেয়া ভাগ্যর ব্যাপার। আমরা সেই সৌভাগ্যবান জাতি, যাদের আছে বিজয়ের আনন্দে মাতোয়ারা হওয়ার দিন। ডিসেম্বরের ১৬ তারিখ সাধারণ কোনো দিন নয়। এদিন প্রথম শেকল ভেঙে উড়েছিল বাঙালির মুক্তির পতাকা। ইকবাল হুসাইন বলেন, বিজয়ের আনন্দ সবচেয়ে আলাদা। আর তা যদি হয় পরাধীনতার শৃঙ্খল ভাঙার জয়, তবে সেই আনন্দ বর্ণিল ও গৌরবের। বছরের পর বছর আমরা সেই আনন্দ বুকে লালন করে এগিয়ে চলছি সমৃদ্ধির নিশ্চিত লক্ষ্যে। বিজয়ের দিনটি পেতে আমাদের লড়াই করতে হয়েছে দীর্ঘ ৯টি মাস। তবে এর শুরুটা হয়েছিল আরো অনেক আগেই। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের মাধ্যমে শুরু হওয়া লড়াই শেষ হয় ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসের মাধ্যমে। ভাষা আন্দোলনের মাধ্যমে আমাদের জাতীয়তাবাদী চেতনার উন্মেষ ঘটে। এরই পটভূমিতে ১৯৭১ সালে বাঙালি পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায়। শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ। দীর্ঘ ৯ মাস যুদ্ধের মধ্যদিয়ে ৩০ লাখ বাঙালির জীবন বিসর্জনের মাধ্যমে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর আমাদের বিজয়ের দিনটি আসে। তিনি বলেন, লাখ লাখ প্রিয়জনের জীবনের বিনিময়ে স্বাধীনতা, অশ্রু বিসর্জনে পাওয়া এ স্বাধীনতা আমাদের কাছে সবচেয়ে গৌরবের। প্রিয় জন্মভূমিকে স্বাধীন করতে জীবন দিয়ে গেছেন আমাদের আপনজনরা; এর চেয়ে শ্রদ্ধার, এর চেয়ে ভালোবাসার আর কী-ই বা হতে পারে! তাইতো প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে বয়ে নিয়ে চলছে মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ের পতাকা। এ সময় তিনি উপস্থিত মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। আগত প্রতিটি মুক্তিযোদ্ধাদের চেহারায় ছিল আনন্দ উচ্ছ্বাস। বিজয়ের মাসে বীর মুক্তিযোদ্ধা শওকত আলী মাস্টার স্মৃতি কল্যাণ ট্রাস্ট ও সুফিয়া শওকত ভাষা ও সাহিত্য অনুশীলন কেন্দ্রের মানবিক উদ্যোগের প্রশংসাও করেন আগত বীর মুক্তিযোদ্ধারা। আগত মুক্তিযোদ্ধাদের শীতের শাল পড়িয়ে সম্মান জানানো হয়।