আজকের তরুণ আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম তারুণ্যের মধ্যেই সর্বদা লুকায়িত সব বাধা-বিপত্তি, অপসংস্কৃতির বিরুদ্ধে গর্জে ওঠার উজ্জীবিত শক্তি। বৃদ্ধের প্রজ্ঞা, পরামর্শ আর তারুণ্যের শক্তি একটি জাতির সমৃদ্ধি অর্জনের সবচেয়ে বড় অস্ত্র হয়ে থাকে। তাই বলা হয়, ‘তারুণ্যেই শক্তি, তারুণ্যেই মুক্তি’। পৃথিবীর যত মহৎকর্ম সাধিত হয়েছে, মুক্তির উদ্যম হাওয়া যত প্রান্তর বেয়ে প্রবাহিত হয়েছে তার প্রত্যেকটির পেছনে অসামান্য অবদান রয়েছে তরুণদের। আর এই তারুণ্যের শক্তির আশ্রয়ে পৃথিবীকে বদলে দিতে চাই তরুণদের সঠিক পথে চালিত করার দিকনির্দেশনা। তরুণদের শুভ শক্তির দ্যুতি ছড়িয়ে মহত্ত্ব এক পৃথিবীর জন্ম ঘটাতে তরুণদের চালিত করতে হবে আলোর পথে, মুক্তির পথে। শেরে বাংলা, বঙ্গবন্ধু, ভাসানী, নজরুলরা হলেন এই বাংলার তেমনই সর্বজন সমাদৃত ব্যক্তি। সময় স্রোতে গা ভাসিয়ে দেয়া কিংবা সময় যুদ্ধে হেরে যাওয়া অক্ষমের মতো আবেগ বিষণ্ণতায় ভোগা জীবনের মতো তাদের অগ্রযাত্রা থেমে ছিল না। তারা ছিলেন সময়ের শ্রেষ্ঠ যোদ্ধা। তাদের প্রতিভা, সাহস, দৃঢ়তা বাঙালি কখনো ভুলবে না। বাঙালিকে পথপ্রদর্শন করা তাদের মহৎ পরার্থপরতা পৃথিবী থেকে মূর্ছিত হবে না কোনো দিনও। ইতিহাস বারবার এগিয়ে আসে তরুণদের অবদানকে স্মরণ করিয়ে দিতে। বলা হয়ে থাকে তারুণ্যের চোখে বিশ্বকে জয় করা যায়। কিন্তু আজকের দিনে তরুণদের বিচরণ চার দেয়ালেই সীমাবদ্ধ। যে তরুণদের বিচরণে রাজপথ, খেলার মাঠ চারপাশ হইহুল্লোড়ে মুখরিত থাকত, সেই তরুণরা আজ যেন কোথায় হারিয়ে গেছে বাংলা থেকেই।
আজ বাঙালি, ইছামতী, করতোয়া নদীর বুকে একঝাঁক তরুণের উন্মুক্ত সাঁতার কাটার দৃশ্যও তেমন চোখে পড়ে না। ভাসানীর মতো দুষ্টুমিতে ভরপুর শৈশব, বঙ্গবন্ধুর মতো সবার হয়ে মুক্তির কথা বলা কৈশোর, আর টগবগে রক্তের শেরে বাংলার মতো প্রতিবাদী যুবকের বাংলার চিরচেনা পথে-প্রান্তরে আর বিচরণ করতে দেখা যায় না। একজনের রক্তের জবাবে হাজার তরুণের বুক পেতে অবলীলায় তাজা রক্ত বিলিয়ে দেয়ার সমৃদ্ধ এবং শানিত ইতিহাস বাংলার আছে।