বায়তুশ শরফ আদর্শ কামিল মাদ্রাসার ৪০ বছর পূর্তি ও প্রীতি সম্মিলন অনুষ্ঠিত

মুহাম্মদ আবদুল করীম

প্রকাশ : ৩০ জানুয়ারি ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

দেশের স্বনামধন্য দ্বীনি বিদ্যাপীঠ চট্টগ্রাম মহানগরীর বায়তুশ শরফ আদর্শ কামিল (অনার্স-মাস্টার্স) মাদ্রাসার ৪০ বছর পূর্তি উদযাপন ও প্রীতি সম্মিলন ২৮ জানুয়ারি ২০২৩ শনিবার সকাল ১০টায় ধনিয়ালাপাড়া বায়তুশ শরফ কমপ্লেক্সে অনুষ্ঠিত হয়। বায়তুশ শরফ আনজুমনে তোলাবায়ে সাবেক্বীনের ব্যবস্থাপনায় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন রাহবারে বায়তুশ শরফ ও মাদ্রাসা গভর্নিং বডির সভাপতি আল্লামা শায়খ মুহাম্মদ আবদুল হাই নদভী। স্বাগত বক্তব্য রাখেন ৪০ বছর পূর্তি এবং প্রীতি সম্মিলন বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক মুহাম্মদ আবদুল করীম, শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) মাওলানা আমিনুল ইসলাম।

প্রাক্তন কৃতিছাত্র প্রফেসর ড. মুহাম্মদ সাখাওয়াত হুসাইন ও হাফেজ মোহাম্মদ মফিজ উদ্দীনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সম্মানিত আলোচক ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের প্রফেসর ড. আ. ক. ম আবদুল কাদের, যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের চেয়ারম্যান, প্রফেসর ড. মোহাম্মদ শহিদুল হক। অনুভূতি প্রকাশ করে অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকদের মধ্যে আলোচনা পেশ করেন মাওলানা আবুল হায়াত মোহাম্মদ তারেক, প্রফেসর ফরিদ আহমদ, মুহাম্মদ মেছবাহুল ইসলাম, হাফেজ মাওলানা মুশতাক আহমদ, মুহাম্মদ আবদুল খালেক। প্রাক্তন ছাত্রদের মধ্যে স্মৃতিচারণমূলক বক্তব্য রাখেন- এস. এম. সাজ্জাদ হোসাইন-৮৬ ব্যাচ, হাফেজ মুজিবুর রহমান বেলাল-৮৯ ব্যাচ, মাওলানা মীর মোশাররফ হোসাইন কুতুবী-৯০ ব্যাচ, আনোয়ার ছিদ্দীক চৌধুরী-৯১ ব্যাচ, মোহাম্মদ শফিউল আজম-৯২ ব্যাচ।

সভাপতির বক্তব্যে রাহবারে বায়তুশ শরফ আল্লামা শায়খ মুহাম্মদ আবদুল হাই নদভী বলেন, দ্বীনি ও আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চার অনন্য প্রতিষ্ঠান হিসেবে ব্যতিক্রমধর্মী ও স্বতন্ত্র মহিমায় ভাস্বর বায়তুশ শরফ আদর্শ কামিল (অনার্স-মাস্টার্স) মাদ্রাসার সুনামণ্ডসুখ্যাতি দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিশ্বজুড়ে। ১৯৮২ সালে বায়তুশ শরফের প্রধান রূপকার শাহসুফি আল্লামা আবদুল জব্বার (রহ.) দ্বীনি ও আধুনিক বিজ্ঞানমনস্ক শিক্ষার মাঝে সমন্বয় সাধন করে গতানুগতিক মাদ্রাসা শিক্ষাকে অধিকতর যুগোপযোগী করার সুমহান লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে এই মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। স্বীয় পীর-মুর্শিদ কুতবুল আকতাব শায়খ আল্লামা মীর মুহাম্মদ আখতরুল কাদেরী (রহ.) কর্তৃক প্রদত্ত বায়তুশ শরফ আনজুমনে ইত্তেহাদের দায়িত্বভার নিজ স্কন্ধে তুলে নিয়ে শরিয়ত ও তরিকতের প্রচার-প্রসারে নিরলসভাবে আত্মনিয়োগের পাশাপাশি ইলমে দ্বীনের একটি বাগান সৃজনের তীব্র আকাঙ্ক্ষা তিনি পোষণ করেছিলেন। তাঁর সৃজিত ইলম, আমল, ইখলাছ ও রুহানিয়াতের বর্ণিল কানন বায়তুশ শরফ আদর্শ কামিল (অনার্স-মাস্টার্স) মাদ্রাসা বিগত ৪০ বছরে সযত্নে তৈরি হয়েছে শত শত ওলামা, মুফতি, মুফাচ্ছির, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, আমলা, লেখক, বক্তা ও দায়ি ইলাল্লাহ, যারা এখন দেশ-দেশান্তরে স্ব-স্ব পরিমণ্ডলে ফুলের সুবাস ছড়াচ্ছেন এবং বায়তুশ শরফ আদর্শ কামিল মাদ্রাসা পরিচিতি পেয়েছে বাংলাদেশের একটি বিখ্যাত দ্বীনি বিদ্যাপীঠ হিসেবে।

তিনি বলেন, বায়তুশ শরফ আদর্শ কামিল মাদ্রাসা ১৯৯১, ২০০০ ও ২০১৮ সালে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক জাতীয় পর্যায়ে ‘শ্রেষ্ঠ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান’ হিসেবে স্বীকৃতি ও পুরস্কার লাভ করার পাশাপাশি ২০০০ সালে এই মাদ্রাসার প্রাক্তন অধ্যক্ষ শাহসুফি আল্লামা কুতুবউদ্দিন (রহ.) ও ২০১৭ সালে ড. মাওলানা সাইয়্যেদ আবু নোমান জাতীয় পর্যায়ে ‘শ্রেষ্ঠ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধান’ হিসেবে পুরস্কার লাভ করেন। মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড ও ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে অনুষ্ঠিত পাবলিক পরীক্ষায় মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের রয়েছে ঈর্ষণীয় সাফল্য।

৪০ বছর পূর্তি এবং প্রীতি সম্মিলন শেষে এ. এস. এম মনিরুল ইসলাম ফারুককে সভাপতি, এস. এম. সাজ্জাদ হোসাইনকে সাধারণ সম্পাদক করে ৭১ সদস্য বিশিষ্ট কার্যকরি কমিটি ঘোষণা করা হয় এবং শিগগির পূর্ণাঙ্গ কমিটির নাম ঘোষণা করা হবে বলে জানানো হয়।