ঢাকা ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৮ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

মহান আল্লাহ ইমাম আবু হানীফাকে (রহ.) বড় নেয়ামত দিয়ে ধন্য করেছেন

অধ্যাপক শাব্বির আহমদ
মহান আল্লাহ ইমাম আবু হানীফাকে (রহ.) বড় নেয়ামত দিয়ে ধন্য করেছেন

গত ১৬ ফেব্রুয়ারি দক্ষিণ চট্টগ্রামের প্রাচীনতম দ্বীনি শিক্ষা নিকেতন চুনতি হাকিমিয়া কামিল (অনার্স-মাস্টার্স) মাদ্রাসার ২১৩তম বার্ষিক সভার প্রধান অধিবেশনে রাহবারে বায়তুশ শরফ আল্লামা শায়খ মুহাম্মদ আবদুল হাই নদভী (ম. জি. আ) বলেন, জীবনে প্রতিটি ক্ষেত্রে নবীজি (সা.)-এর সুন্নত আদর্শ অনুকরণ ও অনুসরণ করা হলো ইসলাম। মহানবী (সা.)-এর অনুপম আদর্শ এবং তাঁর জীবনের ব্যবহারিক ও প্রায়োগিক দিকগুলো সমাজ ও সভ্যতার জন্য পরম উপকারী এবং মানুষের ইহকালে ও পরকালে মুক্তির দিশারি। কোরআন-সুন্নাহর আলোকে এসব কিছু সাবলীলভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন ইমাম আজম হজরত আবু হানীফা (রহ.)। তিনি হচ্ছেন ইলমে ফিকহর প্রধান ইমাম। যে কোনো সমস্যার সমাধান অনুসন্ধানের ক্ষেত্রে ইমাম আবু হানীফা (রহ.)-এর অনুসৃত নীতি ছিল, প্রথমে কোরআনের শরণাপন্ন হওয়া। কোরআনের পর হাদিস শরিফের আশ্রয় গ্রহণ করা। হাদিসের পর সাহাবায়ে কেরাম গৃহীত নীতির ওপর গুরুত্ব দেওয়া। উপরোক্ত তিনটি উৎসের মধ্যে সরাসরি সামাধান পাওয়া না গেলে তিনটি উৎসের আলোকে বিচার-বুদ্ধির (কেয়াসের) প্রয়োগ করা।

রাহবারে বায়তুশ শরফ বলেন, মহান আল্লাহ ইমাম আকম আবু হানীফা (রহ.) দুটি বড় নেয়ামত দিয়েছেন। প্রথমত তাঁকে প্রথম শতাব্দীতে দুনিয়াতে পাঠিয়ে খায়রুল কুরুন তথা উত্তম যুগের অন্তর্ভুক্ত করেছেন। দ্বিতীয়ত, তাঁকে উঁচুমানের দ্বীনি দূরদৃষ্টি দান করেছেন। সাহাবায়ে কেরাম ও প্রথমসারির তাবেঈদের সাহচর্য তাঁর খোদা প্রদত্ত যোগ্যতাকে আরও সজ্জিত করেছেন। যার ভিত্তিতে তিনি কোরআন-হাদিস অনুধাবন, মাসায়েল বের করা ও আহকাম উদ্ভাবন করার নতুন পদ্ধতি সৃষ্টি করেছেন। তার সুস্পষ্ট বক্তব্য ছিল, রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর যে কোনো ধরনের হাদিস বা সাহাবিদের অভিমতের সঙ্গে যদি আমার কোনো বক্তব্যকে সাংঘর্ষিক মনে হয়, তবে আমার বক্তব্য অবশ্য পরিত্যাজ্য হবে। হাদিস এবং আছারে সাহাবা দ্বারা যা প্রমাণিত, সেটাই আমার মাজহাব। রাহবারে বায়তুশ শরফ বলেন, বাংলাদেশের প্রাচীনতম দ্বীনি শিক্ষা নিকেতন ‘উম্মুল মাদারেস’ খ্যাত চুনতি হাকিমিয়া কামিল মাদ্রাসা ইসলামের সুমহান ঐতিহ্যের প্রতীকরূপে চির ভাস্বর হয়ে রয়েছে দুই শতাব্দীর বেশিকাল ধরে। তিনি বলেন, কোরআন-হাদিসের জ্ঞানচর্চা, ছাত্রদের আলেমসুলভ পোশাক ও চরিত্র এবং জনগণের আস্থা অর্জনের সব সূচকেই চুনতি হাকিমিয়া বাগানের সাফল্য অন্যদের জন্য অনুকরণীয়। শিক্ষকদের আন্তরিকতা, সঠিক দিকনির্দেশনা, এলাকাবাসী ও অভিভাবকদের সহযোগিতায় এবং ছাত্রদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় প্রতিষ্ঠানটি আগের গৌরব অক্ষুণ্ন রাখবে বলে তিনি দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

মাদ্রাসা গভর্নিং বডির সভাপতি অধ্যাপক ড. আবুল আলা মুহাম্মদ হোছামুদ্দিনের সভাপতিত্বে প্রধান অধিবেশনে মাদ্রাসার বার্ষিক রিপোর্ট পেশ করেন অধ্যক্ষ মাওলানা মুহাম্মদ ফারুক হোসাইন। মাওলানা জিয়াউল করিমের সঞ্চালনায় মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের প্রফেসর ড. মুহাম্মদ এনামুল হক, ড. মুহাম্মদ শাযাআত উল্লাহ ফারুকী, অধ্যক্ষ মাওলানা অহিদ আহমদ, তোলবায়ে সাবেকীনের সভাপতি মওলানা মমতাজুর রহমান, সিনিয়র সহসভাপতি মাওলানা মুহাম্মদ ইউসুফ, সহসভাপতি অধ্যাপক শাব্বির আহমদ, সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মুহাম্মদ অলি উদ্দিন, মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সদস্য, ফুলকলি গ্রুপের ডাইরেক্টর মুহাম্মাদ কপিল উদ্দিন, মাওলানা জসিম উদ্দিন কবির, অধ্যক্ষ মাওলানা খালেদ জামিল, অধ্যক্ষ মাওলানা নুরুল আলম, অধ্যক্ষ মাওলানা আবু নছর, তোলাবায়ে সাবেকীনের সদস্য মাওলানা আহমদুল কবির প্রমুখ।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত