ঢাকা ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৮ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

তাসাউফের উদ্ভবে নিউপ্লেটোনিজমের প্রভাবের মিথ্যাচার

মুসা আল হাফিজ
তাসাউফের উদ্ভবে নিউপ্লেটোনিজমের প্রভাবের মিথ্যাচার

সুফিবাদের উৎস কী? এর উৎস ও উৎপত্তি কোথায় আমাদের খোঁজ করা উচিত? ব্যাপারটি মুখর এক তর্কের প্রসঙ্গ হয়ে উঠেছে। কিন্তু আসলেই কি খুব তর্কের বিষয় এটি? আমরা বিশ্লেষণ করে এর জবাব খুঁজে নেব। সুফিতত্ত্বের উৎস নিয়ে তর্কের প্রধান দুটি পক্ষ হলেন ইসলামী বিশেষজ্ঞ ও অমুসলিম প্রাচ্যবিদরা। প্রাচ্যবাদী এলাকা থেকে সুফিবাদের সূচনাবিন্দু নিয়ে এমন সব বক্তব্য এসেছে, যা ইসলামি ট্র্যাডিশনে কখনও স্বীকৃতি পায়নি।

প্রফেসর রেনল্ড নিকলসন (১৮৬৮-১৯৪৫) বলেছেন, গ্রিক দর্শনের প্রভাবে সুফিবাদের জন্ম হয়েছে। নিকলসন সুফিতত্ত্ব নিয়ে কিছু কাজ করেছেন। পশ্চিমে বিপুল মাত্রায় পঠিত ও প্রশংসিত হয় তাঁর গ্রন্থ Sufism : The Mysticism of Islam। বইটিতে তিনি দাবি করেন সুফিবাদ মূলত নব্য প্লেটোবাদী দর্শনের সন্তান। ১৯০৯ সালে এনসাইক্লোপিডিয়া অব রিলিজিওন অ্যান্ড এথিকসে প্রকাশিত হয় নিকলসনের Muslim asceticism প্রবন্ধ। এতে তিনি দাবি করেন খ্রিস্টান ধর্মতত্ত্ব ও নিউ প্লেটোনিজমের সংস্পর্শে এসে নতুন মাত্রা ও প্রাণাবেগ লাভ করে। তিনি চেষ্টা করেন সুফি ও গ্রিক মিস্টিক-দার্শনিকদের মধ্যে ভাবের আত্মীয়তা দেখাতে। এরই মধ্য দিয়ে নিশ্চিত করতে চেয়েছেন একটি মিল ও সমন্বয়। নিউপ্লেটোনিক ভাববাদের সঙ্গে সুফিবাদকে একাকার করার চেষ্টাই তিনি করেছেন মুখ্যত। এমন চেষ্টা লক্ষ্য করা যায় ই এইচ হোয়াইনফিল্ডের (১৮৩৬-১৯২২) লেখাজোখায়ও।

এই দাবিকে খাড়া করার জন্য নব্য প্লেটোবাদের সঙ্গে তাসাউফের কিছু সাদৃশ্য কল্পনা করা হয়। কিন্তু নব্য প্লেটোবাদের সঙ্গে সুফিবাদের বিরোধ অত্যন্ত প্রকট। দার্শনিক প্লেটোর ভাববাদের একটি নতুন রূপায়ণ হচ্ছে নব্য প্লেটোবাদ। সেটা প্রধানত মিশরে বিকশিত হয়। গ্রিক দর্শনের শেষ স্তর ছিল এ মতাদর্শ। এর মূল চেষ্টা ছিল প্লেটো ও এরিস্টটলের মতের মধ্যে সামঞ্জস্য বিধান। কিন্তু তাসাউফ কখনোই দার্শনিকদের মতের বিরোধ নিরসনকে মনোযোগের বিষয় বানায়নি। এসব বিরোধ ও সামঞ্জস্যের উপায় নিয়ে তাসাউফ কখনও বিচলিত হয় না।

নব্য প্লেটোবাদের প্রতিষ্ঠাতা মূলত এমোনিয়াস স্যাক্কাস। এ মতবাদের বিকাশ ঘটে প্লটিনাসের হাত ধরে। এ দর্শন প্রথম দিকে ছিলো হেলেনিক। পরে তা দুই সম্প্রদায়ে বিভক্ত হয়ে যায়। এক সম্প্রদায়কে বলা হতো সিরীয় গোষ্ঠী, এর নেতৃত্বে ছিলেন ইয়ামব্লিকাস। আরেক সম্প্রদায় ছিল এথেনীয় গোষ্ঠী। এর নেতৃত্বে ছিলেন প্রোক্লাস। উভয় গোষ্ঠী বহু দেবতার উপাসনায় প্রচণ্ডভাবে মগ্ন হয়। বহুদেবতাবাদী হয়ে উঠে তাদের তত্ত্ব ও অনুশীলন। ইসলামে তাসাউফ বহুদেবতাবাদের প্রধান প্রতিপক্ষ। এর বিরুদ্ধে দৃঢ় ও সুস্থির অবস্থান তার। এর সঙ্গে কোনো সহাবস্থানের সুযোগ রাখেনি তাসাউফ।

নিউপ্লেটোনিক গোষ্ঠীগুলো প্রথমে জ্ঞানের জন্য যুক্তি, চিন্তা ও ধ্যান চর্চাকে প্রধান অবলম্বন মনে করত। পরবর্তী গোষ্ঠীগুলো এসবের বদলে অলৌকিক জাদুকৌশলের অভ্যাসকে মনে করত জ্ঞানের প্রধান হাতিয়ার। কিন্তু তাসাউফ এর কোনোটাকেই মুখ্য অবলম্বন মনে করে না। তার কাছে পরম সত্য- জ্ঞানের প্রধান অবলম্বন হচ্ছে আল্লাহর ওহি, যা প্রেরিত হয়েছে কিতাব আকারে। এ হচ্ছে আল কোরআন। তারপর পরম সত্যজ্ঞানের বুনিয়াদ হচ্ছে নবীর (সা.) শিক্ষা ও বাণী। এসবের বদলে যুক্তি, চিন্তা ও অনুধ্যানকে কখনোই সত্য লাভের প্রকৃত উপায় মনে করে না তাসাউফ। আর জাদু কৌশলের অভ্যাস তো তার কাছে একান্তভাবেই নিন্দিত। সে যুক্তি, ধ্যান ও চিন্তাকে কাজে লাগায় ওহির অনুকূলে। তাও ওহির সমর্থনের ভিত্তিতে, নিউ প্লেটোনিকরা সেটাকে মূল্য দিত বলে নয়।

কিন্তু তারপরও তাসাউফকে নব্য প্লেটোবাদের সন্তান হিসেবে দেখানোর পথে প্রধান হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয় এই মতবাদের ধ্যান ও চিন্তাচর্চার ঐতিহ্যকে। তারা মনে করতেন সত্য লাভ করা যাবে অতিপ্রাকৃত অন্তর্দৃষ্টি ও দিব্যদর্শনের সাহায্যে, যা নিশ্চিত হবে ধ্যান ও সাধনার প্রক্রিয়ায়। বলা হয়, সুফিরা একে ইলহাম ও কাশফ হিসেবে অনুশীলন করেছেন। কিন্তু দাবিটি অমূলক। সুফিরা নিজেদের ইলহাম (অন্তরালোকের উদ্ভাসন) ও কাশফকে (দিব্য উন্মোচন) জ্ঞান ও সত্যের সুনিশ্চয় ভিত্তি মনে করেন না। কোরআন-সুন্নাহের বিপরীতে একে কখনোই কবুল করেন না। একে এমনকি সাধারণভাবে প্রামান্য সত্য বলেও মনে করেন না। এর মাধ্যমে সুফিরা আধ্যাত্মিক অভিজ্ঞতা লাভ করেন। যার যাচাইয়ের মানদণ্ড হচ্ছে শরিয়াহ। ইলহাম ও কাশফকে এই মূল্য দেওয়া হয় মূলত কোরআনের কারণে, সুন্নাহের কারণে। নব্য প্লেটোবাদীদের দিব্যদর্শনের বয়ান ও ভাবধারার সঙ্গে এর দূরত্ব অনতিক্রম্য।

অ্যামনিয়েস সাক্কাস (১৭৫-২৪২ খ্রি.) নব্য প্লেটোবাদের প্রয়োজনে খ্রিষ্টধর্ম ত্যাগ করেছিলেন এবং লৌকিক রীতি ও নিজের আদলে ধর্ম জীবনযাপন করতেন। তার শিষ্য প্লটিনাস ছিলেন রহস্যবাদী দার্শনিক। ধ্যানী। তিনি বহুদেবতায় বিশ্বাস করতেন। এইসব দেবতাকে জন্ম দিয়েছে এক আত্মা। যাকে বলা যায় বিশ্বাত্মা। তার দেবতাদের মধ্যে আছেন উচ্চতর পর্যায়ের অপ্রাকৃত শক্তি, সাধারণ অপ্রাকৃত শক্তিগুলো এবং সূর্য, চন্দ্র, নক্ষত্ররাজি, পৃথিবী প্রভৃতি সৌরজাগতিক সত্তা। এই সব দেবতা পরস্পরে এক ও একে অন্যের মধ্যে বিরাজমান। যে সত্তাই চন্দ্রের চেয়ে বড় ও প্রভাবশালী, তিনিই দেবতা। প্লটিনাসের এই বিশ্বাসের সঙ্গে কীভাবে মেলানো সম্ভব সুফিবাদকে? তাসাউফের মূলকথা খোদাতত্ত্ব ও খোদাপ্রাপ্তি। এতে পরম সত্তা সম্পর্কে যে বিশ্বাস রয়েছে, তা বরং প্লটিনাসের খোদাতত্ত্বকে প্রত্যাখ্যান করেই অগ্রসর হয়। একের সঙ্গে অন্যকে মেলানোর চেষ্টাও হাস্যকর পরিণতি নিশ্চিত করবে।

প্লটিনাসের শিক্ষা হলো অপ্রাকৃত দেবতা চিরন্তন। তাদের দেহ গঠন করা হয়েছে চেতনার উপাদান দিয়ে। তাদের আছে দেখার ক্ষমতা, অনুভবের ক্ষমতা, স্মৃতিরক্ষার ক্ষমতা। তারা আগুন ও বাতাসের পর্দা দিয়ে নিজেদের ঢেকে রাখেন। মানুষের আবেদন শোনেন। সূর্য নক্ষত্ররাজি এবং পৃথিবী মানুষের প্রর্থনা শোনেন। নব্য প্লেটোবাদের প্রধান পুরুষের এই শিক্ষার সঙ্গে তাসাউফের মিল কোথায়? প্লটিনাস প্রকাশ্যে বিরোধিতা করতেন উপাসনার, পূজা-অর্চনার। কিন্তু তাসাউফ ইবাদতকে দেয় উচ্চতর গুরুত্ব। অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিকভাবে ইবাদতকে পূর্ণতাদানের চেষ্টাই মূলত তাসাউফের মূল শিক্ষা।

নব্য প্লেটোবাদের দাবি হলো, ঈশ্বর জগতের স্রষ্টা নন। কারণ স্রষ্টা হতে হলে দরকার সৃষ্টির চেতনা ও ইচ্ছা। ইশ্বরের চেতনা ও ইচ্ছা আছে, বলা হলে তাকে সীমাবদ্ধ করা হয়। তাই তিনি জগতের স্রষ্টা নন। তবে জগৎ তার সত্তা থেকে জন্ম নিয়েছে। পৃথিবীর কোথাও একজন সুফি পাওয়া যাবে কি, যিনি নব্য প্লেটোবাদের এই বিশ্বাসে আস্থা রাখেন? এই বিশ্বাস পোষণ করলে তো মুসলমান থাকার শর্তকেই পরিহার করা হবে। প্লটিনাসের মতে সূর্যরশ্মি যেভাবে সূর্য থেকে নিঃসৃত হয়, ঠিক তেমনিভাবে গোটা বিশ্বজগৎ বিকীর্ণ হয়েছে ঈশ্বর থেকে। সেটা হয়েছে প্রধানত তিন স্তরে। প্রতিটি স্তরে ঈশ্বর নানা ভাগে বিভক্ত হন। আবার মিলিতও হন। নব্য প্লেটোবাদী এই বিশ্বতত্ত্ব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এর ওপর দাঁড়িয়ে আছে এই দর্শনের আধ্যাত্মিক দিকগুলো। কিন্তু এই মূল ভিত্তির সঙ্গে তো ইসলামের সরাসরি দ্বন্দ্ব, যা ইসলাম সম্পর্কে প্রাথমিক স্তরে অবগত ব্যক্তির কাছেও অস্পষ্ট নয়। কিন্তু নিকলসন-হোওয়াইনফিল্ডের মতো পণ্ডিতরা যেভাবেই হোক, দূরকল্পী অনুমানের ওপর ভর করে তাসাউফকে নব্য প্লেটোবাদের সঙ্গে জোড়া লাগাবেনই!

মৌলিক দূরত্বগুলোর অনতিক্রম্য তালিকা অনেক দীর্ঘ হলেও তারা তালাশ করেন কোথাও একটি বাক্য বা শব্দও পাওয়া যায় কি-না, যার ওপর পা রেখে বলা যায় যে, প্রমাণ পাওয়া গেছে। অতএব তারা হাজির করেন কিছু শব্দ-বাক্য। যেমন (ক) গ্রিকরা বলতেন নিজেকে চিনে নাও। এ থেকে সুফিবাদের মূলনীতি হলো যে নিজেকে চিনলো, সে আল্লাহকে চিনল। (খ) সুফিদের পরিভাষা বাক্য (কালেমা), সক্রিয় জ্ঞান (আকলে ফাঅআল), প্রথম বুদ্ধি (আকলে আওয়াল), কার্যকারণ (ইল্লত), সত্তার প্রভাব (ফয়জে ওয়াজদ), একত্ব (ওয়াহদত) ইত্যাদি গ্রিক দর্শনের জাতক।

দাবিটা সঠিক নয়। প্রথমত যে নিজেকে চিনেছে, সে আল্লাহকে চিনেছে, এটা সুফিবাদের কোনো মূলনীতি নয়। এটি প্রজ্ঞামূলক এক উক্তি। যার পূর্ব নমুনা শুধু গ্রিকদের মধ্যে নয়, আরবদের মধ্যেও রয়েছে। কেন প্রজ্ঞামূলক একটি উক্তির দূরবর্তী মিল থাকলেই সেটা গ্রিকদের জিনিশ হতে হবে? হিজরি তৃতীয় শতকের এক সুফি ইয়াহইয়া ইবনে মুয়াজ আল রাজী (ওফাত-২৫৮ হিজরি) বলেছিলেন- মান আরাফা নাফসাহু ফাকাদ আরাফা রাব্বাহু মানে যে নিজেকে চিনল, সে তার খোদাকে চিনল। সেটা জ্ঞানীদের মধ্যে জনপ্রিয় হয় এবং প্রবাদে পরিণত হয়। সেটাকেই আশ্রয় বানিয়ে একে জোর করে গ্রিকদের নিজেকে চেনার বংশধর বানানো হলো আর তার ভিত্তিতে গোটা তাসাউফকে গ্রিকদের দান সাব্যস্থ করা হলো। গবেষণা বটে!

শব্দের দিক থেকে কালিমা, আকল, ওয়াহদাত হচ্ছে কোরআন-সুন্নাহের বহুল ব্যবহৃত পরিভাষা। এসবের নিজস্ব অর্থ, মাত্রা ও দ্যোতনা রয়েছে। আরবদের মধ্যে এগুলোর ব্যবহারের ঐতিহ্য ইসলামের পূর্ববর্তী। আরবদের হাতে গ্রিকদের গ্রন্থের অনুবাদে আরবি ভাষার নিজস্ব এই সব শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে বলে এই শব্দগুলোকে গ্রিক প্রভাবজাত সাব্যস্ত করা একেবারেই জবরদস্তিমূলক। তবুও যেসব পরিভাষা দার্শনিকদের এলাকায় বারবার উচ্চারিত হতো, তাসাউফে এর ব্যবহার কোনো সম্মানজনক ঐতিহ্য হয়ে ওঠেনি। যাদের সুফিতাত্ত্বিক রচনায় এমনতরো পরিভাষার ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়, তারা ছিলেন হিজরি ষষ্ঠ শতাব্দী ও এর পরবর্তী লোক। তাদের গ্রন্থগুলো রচিত হওয়ার বহু আগেই তাসাউফ তার প্রকৃত ইসলামি বুনিয়াদের মজবুত ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত ছিল।

তবুও ভুলে যাচ্ছি না, কোনো কোনো সুফি-লেখক এরিস্টটল-প্লেটোর নানা পরিভাষা ও বক্তব্যকে নিজেদের রচনায় স্থান দিয়েছেন। মুসলিম দুনিয়ায় গ্রিক দর্শনের অনুবাদের বহু পরে এই ঘটনা ঘটে, যা তখনকার জ্ঞানগত পরিভাষাগুলোর সঙ্গে সাযুজ্য স্থাপনের চেষ্টার অংশ ছিল। তাসাউফের দুনিয়ায় এগুলো অপাঙক্তেয় হিসেবে বিবেচিত থেকেছে। এসবের ব্যবহার করা না করার ওপর তাসাউফের তত্ত্ব বুঝা বা না বুঝা নির্ভরশীল নয় আদৌ। আমাদের বরং দেখা উচিত নব্য প্লেটোবাদের সঙ্গে তাসাউফের গুরুতর সম্বন্ধের সুযোগ কি ছিল আদৌ?

নব্য প্লেটোবাদের দাবি হলো, জগতের সব কিছু অক্ষয়, ইসলাম কখনও একে কবুল করে না। প্লোটিনাস মনে করতেন, জগৎ অনাদি। ইসলামের সঙ্গে এর বিরোধ সুস্পষ্ট। জগতের অনাদিত্বের কারণ হিসেবে নব্য প্লেটোবাদ চিহ্নিত করে এর গঠন উপাদানকে। তার মতে, জগৎ গঠিত হয়েছে ফর্ম বা আকার এবং ম্যাটার বা পদার্থ দ্বারা। এ জগতে সাফল্যের জন্য নব্য প্লেটোবাদ তিনটি বিষয়ের প্রস্তাব করে। সেগুলো হচ্ছে (ক) শিল্প ও সংগীত, (খ) প্রেম, (গ) দার্শনিকতা। তাসাউফ বরং ফালাহ বা সাফল্যের জন্য বিকল্প পথের প্রস্তাব করে, যা সব দিক থেকেই নব্য প্লেটোবাদ থেকে ব্যাপক ও গভীরভাবে আলাদা, যা উৎসারিত হয়েছে মহানবীর (সা.) প্রদর্শিত হেদায়েত থেকে।

স্পষ্ট এই সত্যকে শেষ অবধি উপেক্ষা করা যাচ্ছে না বলেই সম্ভবত নিকলসন তাসাউফের প্রকৃত উদ্ভবকে ইসলামজাত বলে স্বীকার করেন। কিন্তু এই স্বীকারোক্তির সময়ও ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে তাসাউফের বিকাশ ও উত্তম দিকগুলোকে নব্য প্লেটোবাদের জাতক বানানোর চেষ্টা পরিহার করতে পারেননি!

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত