ঢাকা ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৮ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

শবে বরাতের আমল

ড. মুহাম্মদ ঈসা শাহেদী
শবে বরাতের আমল

হাদিস শরিফ অনুযায়ী শবে বরাতে সম্পূর্ণ রাত নামাজে তেলাওয়াতে, তওবা-ইস্তেগফারে কাটিয়ে দেয়া ও পরের দিনের রোজা রাখার বিরাট সওয়াব ও গুরুত্ব রয়েছে। এছাড়া লাইলাতুল বরাতের বিশেষ নামাজ বা অন্য কোনো আনুষ্ঠানিকতার ধরাবাধা নিয়ম নেই। বুজর্গনে দ্বীন বিভিন্ন নিয়মে নামাজ পড়ে ও ইবাদত বন্দেগি করে এই রাত জাগ্রত অবস্থায় কাটিয়েছেন। কোনো কোনো কিতাবে বুজর্গনে দ্বীনের নিয়ম অনুযায়ী লাইলাতুল বরাতের কিশেষ নামাজের যেসব নিয়ম উল্লেখ করা হয়েছে, তাতে কেউ ১০ রাকাত, কেউ ২০ রাকাত, কেউ ১০০ রাকাত বা ততোধিক রাকাত নামাজ পড়ার কথা উল্লেখ করেছেন। আবার প্রায় প্রত্যেক বর্ণনাতেই প্রতি রাকাতে সুরা ফাতেহার পর সুরা এখলাস ৩ বার, ৫ বার, ৭ বার, ১১ বার, ২১ বার বা ১০০ বার পড়ার কথা উল্লেখ করেছেন। অর্থাৎ প্রত্যেকেই নিজের মনের আগ্রহ ও চাহিদা মোতাবেক পড়তে পারেন। নিয়ত করতে হবে ‘আমি কেবলামুখী হয়ে লাইলাতুল বরাতের দুই রাকাত নফল নামাজের নিয়ত করলাম।’ এ সম্পর্কে হুজ্জাতুল ইসলাম ইমাম গাজ্জালী (রহ.) এর বিশ্ববিখ্যাত গ্রন্থ ‘এহয়াই উলুমুদ্দীন হতে উদ্ধৃতি দিয়ে এই আলোচনার ইতি টানছি। ইমাম গাজ্জালী (রহ.) বলেন :

‘১৪ শাবান দিবাগত রাতে ১০০ রাকাত নামাজ পড়বেন। প্রত্যেক দুই রাকাতে সালাম ফিরাবেন। প্রত্যেক রাকাতে সুরা ফাতেহার পর সুরা এখলাস ১১ বার পড়বেন। যদি ইচ্ছা হয় ১০ রাকাত পড়তে পারেন। প্রত্যেক রাকাতে সূরা এখলাস ১০০ বার। পূর্ববর্তীরা এই নিয়মে নামাজ পড়তেন এবং একে কল্যাণের নামাজ বলে নামকরণ করেছিলেন। মহাত্মা হাসান বসরী (রা.) বলেছেন: আমাকে প্রায় ৩০ জন সাহাবি বলেছেন- যে ব্যক্তি এই নামাজ এই রাতে পড়ে আল্লাহতায়ালা তার দিকে ৭০ বার নজর করবেন। প্রত্যেক দৃষ্টিতে তার ৭০টি হাজত (প্রয়োজন) পূরণ করবেন। ছগিরা গোনাহ মাফ হওয়াও এর অন্তর্ভুক্ত।’ এহয়াউ উলুমুদ্দীন।

মনে রাখতে হবে, এই মহিমান্বিত রাতে অহেতুক আলোকসজ্জা, বাজি পোড়ানো, ফটকা ফুটনো প্রভৃতি শরিয়ত ও শান্তি-শৃঙ্খলাবিরোধী জাহেলি প্রথা শবে বরাতের শিক্ষা ও চেতনার বরখেলাফ। অতীতের গোনাহ খাতার জন্য তওবা ইস্তেগফার করা, কোরআন তেলাওয়াত, জিকির ও ইবাদত বিশেষত তাহাজ্জুদের নামাজের প্রতি যত্নবান হতে হবে। শবে বরাত বলা যায় মাহে রমজানের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। এ জন্য আবহমান কাল থেকে মাদরাসা শিক্ষায় পাঠ্য মিশকাত শরিফে শব বরাত সম্পর্কিত উল্লেখিত হাদিসগুলো ‘কিয়ামু শাহরি রামাদান’ বা রমজান মাসে রাতজেগে ইবাদত অধ্যায়ে আনা হয়েছে। কারণ শবে বরাত হতেই শুরু হয় মাহে রমজানকে স্বাগত জানানোর প্রস্তুতিপর্ব।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত