পাঞ্জেগানা, জুমা, ঈদ, তারাবি ইত্যাদি নামাজ জামাতে পড়ানোর ক্ষেত্রে শরিয়তের আলোকে সংশ্লিষ্ট ইমামকে অবশ্যই সাবালক হতে হবে। শরিয়ত শর্ত করেছে সাবালক হওয়ার, বয়সের নয়। অর্থাৎ কোনো ছেলে যদি ১২ থেকে ১৩ বছর বয়সে সাবালক হয়ে যায়, তাহলে ইমামতির অপরাপর যোগ্যতা ও গুণাবলি থাকলে সেও আইনত ইমামতি করতে পারবে। আবার কারও যদি সাড়ে চৌদ্দ বছর বা সামান্য ২-৪ দিন কম ১৫ বছরও বয়স হয়; কিন্তু সে সাবালক হয়নি; তা হলে সে ইমামতি করতে পারবে না। অথচ সাবালক হয়ে গেলে ১২ বছর বয়সেও ইমামতি জায়েজ। এ থেকে বোঝা যাচ্ছে, মূল বিবেচ্য হল পৌরুষত্ব ও সাবালকত্ব বয়স বা দাড়ি-মোচ গজানো মুখ্য নয়।
সুতরাং আমরা যেই হাফেজের পেছনে তারাবিহ সালাত হোক বা অন্য যে কোনো সালাত আদায় করব- ওই হাফেজ যদি সাবালক হয়ে থাকেন, তাহলে তার পেছনে নামাজ-জামাত পড়া সম্পূর্ণ জায়েজ। আর যদি সাবালক না হয়ে থাকে, তা হলে তার পেছনে নামাজ-জামাত জায়েজ হবে না।
প্রশ্ন উঠবে, যেহেতু দাড়ি-মোচ নেই তাই আমরা কীভাবে বুঝব যে, তিনি সাবালক হয়েছেন? তার জবাব সরাসরি ওই হাফেজের কাছ থেকেই নিতে হবে অথবা তার বাবা-মায়ের কাছেও পাওয়া যেতে পারে।
দ্বিতীয় প্রশ্নের উত্তর হচ্ছে, ইমামতি শুদ্ধ হবার জন্যে অজু-গোসল, পাক-নাপাক, নামাজের কিরাত, ফরজ-ওয়াজিব, ‘ভুলের সেজদা’ ইত্যাদির জ্ঞান থাকা একান্ত অবশ্যক। সুতরাং ওই হাফেজ সাবালক হওয়ার পাশাপাশি যদি ওইসব জ্ঞানও রাখেন তা হলে তিনি অবশ্যই ইমামতির যোগ্য হবেন। বয়স বেশি হওয়া, দাড়ি ওঠা, চেহারা সুন্দর হওয়া, বিবাহিত হওয়া- এসব হচ্ছে একান্তই উত্তমণ্ডঅনুত্তম পর্যায়ের কথা, মৌলিক বা আইনি কথা নয়।
কিন্তু পবিত্রতা ও ফরজ-ওয়াজিব ইত্যাদির ইলম না থাকলে তিনি দাড়ি, পাগড়ি, লম্বা জামা, বিবাহিত হলেও তার পেছনে নামাজ-জামাত জায়েজ হবে না।
(তথ্য সূত্র : ফাতাওয়া ও গবেষণা সমগ্র-১, ব. হা.)
১। আলমগীরী খণ্ড-১, পৃঃ-৮৫; মাকতাবা মাজেদিয়া, কোয়েটা, পাকিস্তান। ২। দুররুল-মুখতার+শামী খণ্ড-১, পৃঃ-৫৭৮; এইচ. এম. সাঈদ এডুকেশনাল প্রেস, করাচি। ৩। ইমদাদুল আহকাম খণ্ড-২, পৃঃ-১৩৯, ১৪৬, ২৪২,২৪৩, ২৬৮, ২৬৯; যাকারিয়া বুক ডিপো, ইউ. পি. ভারত। ৪। আহসানুল ফাতাওয়া খণ্ড-৩, পৃঃ-৫২১ ও ৫২২; এইচ. এম. সাঈদ এডুকেশনাল প্রেস, করাচি। ৫। ইমদাদুল ফাতাওয়া খণ্ড-১, পৃঃ-২৩৭,২৩৮ ও ২৩৯; মাকতাবা দারুল উলূম, করাচি)
লেখক : মুফতি, ইসলামিক ফাউন্ডেশন