এশিয়া ও ইউরোপ মহাদেশজুড়ে বিস্তৃত ছিল বিশাল অটোমান বা ওসমানীয় সাম্রাজ্য। এই সাম্রাজ্যের সীমানা ছিল উত্তর আফ্রিকার তিউনিসিয়া থেকে ইউরোপের হাঙ্গেরি, রাশিয়ার ক্রিমিয়া থেকে পূর্বে জর্জিয়া এবং আরবের ইয়েমেন পর্যন্ত বিস্তৃত। এই বিশাল সাম্রাজ্যের স্থায়িত্ব ছিল দীর্ঘ ৬০০ বছর।
অটোমান সাম্রাজ্যের সূচনা
অটোমান সাম্রাজ্যের অভ্যুদয় ১২৯৯ সালে। প্রতিষ্ঠাকাল থেকে শুরু করে ১৪৫৩ সালে বাইজান্টাইন সাম্রাজ্যের রাজধানী কনস্টান্টিনোপল জয় পর্যন্ত এ সাম্রাজ্যের বিস্তৃতকাল বলে ধরে নেয়া যায়। এ সময়েই পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন সুলতানের শাসনামলে বিকশিত হতে থাকে অটোম্যান সাম্রাজ্য। শুরুতে পার্শ্ববর্তী অন্যান্য রাজ্যের মতো অটোমান সাম্রাজ্যও নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে মূলত স্থানীয় নানা সেনাপতি ও সামন্ত রাজ্যের শাসনের ওপর নির্ভরশীল ছিল। ধীরে ধীরে সময় যেতে থাকে, পরিবর্তিত হতে থাকে অটোমান সাম্রাজ্যের অবস্থাও। সামরিক-অর্থনৈতিক উন্নতি তাদের রাজ্য বিস্তারের পক্ষে আরও সহায়ক ভূমিকা পালন করতে থাকে।
এ সময়ে অটোমানদের সফলতার পেছনে কারো একক অবদান নয়, বরং এর একাধিক শাসকরা এই রাজবংশকে সাফল্যের সর্বোচ্চ শিখরে নিয়ে গেছেন। একই সঙ্গে ঐতিহাসিকরা মনে করেন, পরিবর্তিত নানা পরিবেশের সাথে দ্রুত নিজেদের খাপ খাওয়াতে পারাই ছিল ওসমানীয় সাম্রাজ্যের সফলতার মূল কারণ।
প্রতিষ্ঠাতা প্রথম ওসমান
এই রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতার নাম ওসমান গাজী। তিনি প্রথম ওসমান নামেই সমাধিক পরিচিত ছিলেন। তার নামেই অটোমান বা ওসমানীয় সাম্রাজ্যের নামকরণ হয়েছে। ১২৯৯ সালে তুর্কি বংশো™ূ¢ত প্রথম উসমান সেলযুক সাম্রাজ্য কর্তৃক উত্তরপশ্চিম আনাতোলিয়ার দায়িত্ব পান। প্রথম দিকে সেলজুক সাম্রাজ্যের প্রতি অনুগত থাকলেও সেলজুক সাম্রাজ্যের শেষ সময়ে তিনি স্বাধীনতা ঘোষণা করেন এবং ধীরে ধীরে একটি অটোমান সামাজ্যের গোড়াপত্তন করেন। তিনি সেলজুক রাজবংশের জামাতাও ছিলেন এবং তার মা হালিমা সুলতান ছিলেন সেলজুক শাহজাদা নুমান এর মেয়ে। তিনি সেলজুক রাজবংশের জামাতাও ছিলেন। প্রথম উসমানের মাতা হালিমা সুলতান ছিলেন সেলজুক শাহজাদা নুমান এর মেয়ে।
১২৯৯ সালে ওসমান যখন মোঙ্গল সাম্রাজ্যে বার্ষিক কর পাঠালেন না, তখনই আসলে প্রতীকী অর্থে তিনি স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন। ১৩০০ সাল থেকেই একে একে বিভিন্ন অঞ্চল জয় করতে শুরু করে ওসমানের নেতৃত্বাধীন বাহিনী। সাকারয়া নদীর পশ্চিমাঞ্চল, এস্কিসেহিরের দক্ষিণ ভাগ, অলিম্পাস পর্বত ও মারমারা সাগরের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল তার সাম্রাজ্যভুক্ত হয়। এস্কিসেহির, বিলেজিক, ইনোনু থেকে শুরু করে ইয়েনিশেহিরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দূর্গ ও নগর নিজেদের দখলে নিয়ে নেয় ওসমান বাহিনী। নবগঠিত অটোমান রাজ্যের রাজধানী হিসেবে বেছে নেয়া হয় ইয়েনিশেহিরকে। তখনো বার্সা, নিকাইয়া কিংবা নিকোমিডিয়ার মতো গুরুত্বপূর্ণ ও সুরক্ষিত নগরগুলো দখল করার মতো শক্তি অবশ্য তখনো অর্জন করতে পারে নি তার বাহিনী।
১৩২১-১৩২৬ সাল পর্যন্ত ওসমানের বাহিনী মুদান্য়া বন্দর ও বার্সার মতো গুরুত্বপূর্ণ শহর দখলে নেয়। বার্সা জয় ছিল অটোমান সাম্রাজ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। কেননা এতদিন নানা যুদ্ধে ওসমান গাজী কেবল বর্বর জাতিদের বিরুদ্ধে জয় পেয়েছিলেন। এবারই প্রথম এমন এক শহরের দখল নিলেন যা ছিল তখনকার যুগে এক গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক কেন্দ্র। এ জয়ের ফলে মধ্যপ্রাচ্য ও পূর্ব ইউরোপে রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক মানচিত্রের এক গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে উঠলো অটোমানরা।
এরপর বয়সের ভারে ন্যুজ হয়ে পড়েন ওসমান। তখন তার অসামাপ্ত কাজ সম্পাদনের ভার পরে বড় ছেলে ওরহান গাজীর হাতে।
তিনি ১২৮১ সালে সোগুতে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি প্রথম উসমান ও তার স্ত্রী মালহুন খাতুনের পুত্র। ক্ষমতা হাতে পেয়েই সাম্রাজ্য বিস্তারে মনোযোগী হন তিনি এবং আনাতোলিয়ায় বাইজেন্টাইনদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেন। প্রথমে ১৩২১ সালে তিনি মার্মারা সাগরে বুরসার বন্দর মুদানিয়া অধিকার করেন। এরপর তিনি কোনুর আল্পের অধীনে পশ্চিমের কৃষ্ণসাগরের উপকূল এবং আকুয়েদার অধীনে ইজমিত জয়ের জন্য সেনাদল প্রেরণ করেন। শেষে মার্মারা সাগরের দক্ষিণপূর্ব উপকূল অধিকার করেন। এরপর কূটনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে তিনি বুরসা অধিকার করে। বুরসা শহর জয়ের পর ওরহান বসফরাসের দিকে সেনাদল প্রেরণ করে মার্মারা সাগর উপকূলের বাইজেন্টাইন শহরগুলো অধিকার করেন।
বাইজেন্টাইন সম্রাট তৃতীয় এন্ড্রোনিকাসের সেনাবাহিনী অগ্রসর হয়ে বর্তমান দারিজা শহরের ওরহানের বাহিনীর মুখোমুখি হয়। যুদ্ধে বাইজেন্টাইনরা পরাজিত হয়। এভাবে ১৩২৯ সালের পেলেকেনোনের যুদ্ধের পর বাইজেন্টাইনরা কোচাইলির অঞ্চল পুনরুদ্ধারের ধারণা পরিত্যাগ করে।
নাইসিয়া শহর ১৩৩১ সালে আত্মসমর্পণ করে। ১৩৩৭ সালে ইজমিত বা নিকোমেডিয়া অধিকার করা হয়। ওরহান তার জ্যেষ্ঠ পুত্র সুলাইমান পাশাকে শহরের নিয়ন্ত্রণভার প্রদান করেন। ইতিপূর্বে সুলাইমান শহর অবরোধে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। ১৩৩৮ সালে উসকুদার জয়ের মাধ্যমে অধিকাংশ উত্তর আনাতোলিয়া উসমানীয়দের হাতে আসে।
১৩৪৫ সালে ওরহান পার্শ্ববর্তী তুর্কি রাজ্য কারেসি (বর্তমান বালিকেসির ও পার্শ্ববর্তী এলাকা) জয় করেন। কারেসির আমির মারা যাওয়ার পর সিংহাসন নিয়ে তার দুই পুত্রের মধ্যে দ্বন্ধের ফলে লড়াই শুরু হয়। ওরহান এসময় কারেসি আক্রমণ করে তা অধিকার করে নেন।
কারেসি জয়ের ফলে প্রায় সমগ্র উত্তর-পশ্চিম আনাতোলিয়া উসমানীয় বেয়লিকের আওতায় চলে আসে। বুরসা, ইজমিত, ইজনিক ও বেরগামা শহরগুলো উসমানীয়দের শক্তিশালী ঘাঁটি হয়ে ওঠে। এরপর ১৩৬২ সালে নিজের জয় করা বুশরায় দেহত্যাগ করেন ওরহান।
এরপর একে একে ক্ষমতায় আসেন প্রথম মুরাদ (১৩৬১-১৩৮৯), প্রথম বায়েজিদ (১৩৮৯-১৪০২), প্রথম মুহাম্মদ (১৪১৩-১৪২১), দ্বিতীয় মুরাদ (১৪২১-১৪৪৪) দ্বিতীয় মুহাম্মদ (১৪৪৪-১৪৪৬) ও দ্বিতীয় মুরাদ (১৪৪৬-১৪৫১)। তবে অটোমান সাম্রাজ্যের প্রথমদিককার সুলতানদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছেন ওসমান গাজী, ওরহান গাজী, প্রথম মুরাদ ও প্রথম বায়েজিদ।
১৪৫৩ সালে ওসমানের বংশধর সুলতান দ্বিতীয় মুহাম্মদের কনস্টান্টিনোপল জয় করার মাধ্যমে অটোমানরা বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্য উচ্ছেদ করে। ১৫২৬ সালে হাঙ্গেরি জয়ের পর ইউরোপের বলকান অঞ্চলগুলো নিয়ে বড় রাজ্য প্রতিষ্ঠা লাভ করে। তাদের গোড়াপত্তনের ওপর ভিত্তি করেই দীর্ঘ ৬০০ বছর ধরে টিকেছিল এই রাজবংশটি।
সাম্রাজ্যের বিস্তৃতি ও সর্বোচ্চ পর্যায়
দ্বিতীয় মুরাদের ছেলে দ্বিতীয় মুহাম্মদ রাষ্ট্র ও সেনাবাহিনী পুনর্গঠন করেন। ১৪৫৩ সালের ২৯ মে দ্বিতীয় মুহাম্মদ কনস্টন্টিনোপল জয় করেন। উসমানীয়দের প্রতি আনুগত্যের বিনিময়ে ইস্টার্ন অর্থোডক্স চার্চকে তার কার্যক্রম চালু রাখার অনুমতি দেয়া হয়। পশ্চিম ইউরোপের রাজ্যগুলোর সাথে বাইজেন্টাইনদের সম্পর্ক খারাপ ছিল বিধায় অধিকাংশ অর্থোডক্স জনগণ ভেনেসিয়ানদের পরিবর্তে উসমানীয়দের অধীনে থাকাকে সুবিধাজনক মনে করে। ইতালীয় উপদ্বীপে বাইজেন্টাইনদের অগ্রগতির ক্ষেত্রে একটি বড় বাধা ছিল আলবেনিয়ানদের প্রতিরোধ।
১৫০০ ও ১৬০০ শতাব্দীতে উসমানীয় সাম্রাজ্য বিস্তৃতির যুগে প্রবেশ করে। নিবেদিত ও দক্ষ সুলতানদের শাসনের ধারাবাহিকতায় সাম্রাজ্য সমৃদ্ধি লাভ করে। ইউরোপ ও এশিয়ার মধ্যকার বাণিজ্য রুটের বিস্তৃত অংশ নিয়ন্ত্রণ করার কারণে সাম্রাজ্য অর্থনৈতিক উন্নতি লাভ করে।
সুলতান প্রথম সেলিম পারস্যের সাফাভি সম্রাট প্রথম ইসমাইলকে পরাজিত করে দক্ষিণ ও পূর্ব দিকে সাম্রাজ্যের সীমানা বিস্তৃত করেন। তিনি মিশরে উসমানীয় শাসন প্রতিষ্ঠা ও লোহিত সাগরে নৌবাহিনী মোতায়েন করেছিলেন। উসমানীয়দের এই সম্প্রসারণের পর পর্তুগিজ সাম্রাজ্য ও উসমানীয় সাম্রাজ্যের মধ্যে এই অঞ্চলের প্রধান পক্ষ হওয়ার প্রতিযোগিতা শুরু হয়।
সুলতান প্রথম সুলাইমান ১৫২১ সালে বেলগ্রেড জয় করেন এবং উসমানীয়-হাঙ্গেরিয়ান যুদ্ধের এক পর্যায়ে হাঙ্গেরি রাজ্যের দক্ষিণ ও মধ্য অংশ জয় করে নেয়া হয়। মোহাচের যুদ্ধে জয়ের পর তিনি বর্তমান হাঙ্গেরির পশ্চিম অংশ ও মধ্য ইউরোপীয় অঞ্চল ছাড়া বাকি অংশে তুর্কি শাসন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। ১৫২৯ সালে তিনি ভিয়েনা অবরোধ করেন তবে শহর জয় করতে ব্যর্থ হন। ১৫৩২ সালে তিনি পুনরায় ভিয়েনা আক্রমণ করেন তবে গুনসের অবরোধের পর তিনি ফের ব্যর্থ হন। ট্রান্সিলভানিয়া, ওয়ালাচিয়া ও মলডোভিয়া উসমানীয়দের করদ রাজ্যে পরিণত হয়। পূর্বে দিকে উসমানীয়রা পারস্যের কাছ থেকে বাগদাদ দখল করে নেয়। ফলে মেসোপটেমিয়া ও পারস্য উপসাগরে নৌ চলাচলের উপর তাদের নিয়ন্ত্রণ আসে।
উসমানীয় সাম্রাজ্য ও ফ্রান্স হাবসবার্গ শাসনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয় এবং শক্তিশালী মিত্রে পরিণত হয়। ফরাসি ও উসমানীয়রা যৌথ প্রচেষ্টায় ১৫৪৩ সালে নাইস ও ১৫৫৩ সালে করসিকা জয় করে নেয়। নাইস অবরোধের এক মাস আগে এজতেরুগুম জয়ের সময় ফ্রান্স উসমানীয়দেরকে গোলন্দাজ ইউনিট দিয়ে সহায়তা করেছিল। উসমানীয়রা আরও সামনে অগ্রসর হওয়ার পর হাবসবার্গ শাসক ফার্ডিনেন্ড ১৫৪৭ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে উসমানীয়দের বশ্যতা স্বীকার করে নেন।
১৫৫৯ সালে প্রথম আজুরাম পর্তুগিজ যুদ্ধের পর উসমানীয় সাম্রাজ্য দুর্বল আদাল সালতানাতকে সাম্রাজ্যের অংশ করে নেয়। এই সম্প্রসারণ সোমালিয়া ও হর্ন অব আফ্রিকা পর্যন্ত বিস্তৃত হয়। পুর্তুগিজদের সঙ্গে প্রতিযোগিতার জন্য ভারত মহাসাগরে প্রভাব বাড়ানো হয়।
অটোমান শাসক প্রথম সুলাইমানের শাসনের সমাপ্ত হওয়ার সময় সাম্রাজ্যের মোট জনসংখ্যা ছিল প্রায় ১৫ কোটি এবং তিন মহাদেশব্যপী সাম্রাজ্য বিস্তৃত ছিল। উপরন্তু সাম্রাজ্য একটি শক্তিশালী নৌশক্তি হয়ে ওঠে। ভূমধ্যসাগরের অধিকাংশ এলাকা উসমানীয়রা নিয়ন্ত্রণ করত। এই সময় নাগাদ উসমানীয় সাম্রাজ্য ইউরোপের রাজনৈতিক পরিমন্ডলের বৃহৎ অংশ হয়ে ওঠে। উসমানীয় সাম্রাজ্যের রাজনৈতিক ও সামরিক শ্রেষ্ঠত্ব রোমান সাম্রাজ্যের সঙ্গে তুলনা করা হয়।
১৬০০ ও ১৭০০ শতাব্দীতে বিশেষত সুলতান প্রথম সুলাইমানের সময় উসমানীয় সাম্রাজ্য দক্ষিণপূর্ব ইউরোপ, উত্তরে রাশিয়া কৃষ্ণ সাগর, পশ্চিম এশিয়া, ককেসাস, উত্তর আফ্রিকা ও হর্ন অব আফ্রিকাজুড়ে, মধ্যপ্রাচ্য ও আরব অঞ্চলসহ বিস্তৃত একটি শক্তিশালী বহুজাতিক, বহুভাষিক সাম্রাজ্য ছিল। ১৭০০ শতাব্দীর শুরুতে সাম্রাজ্যে ৩৬টি প্রদেশ ও বেশ কয়েকটি অনুগত রাজ্য ছিল।
উসমানীয় সাম্রাজ্য সুদীর্ঘ ৬০০ বছরেরও বেশিকাল ধরে প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের যোগাযোগের কেন্দ্র হিসেবে কাজ করেছে। তবে ইউরোপীয়দের তুলনায় ধীরে ধীরে তারা সামরিক ক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়তে থাকে। যার ধারাবাহিক অবনতির ফলে সাম্রাজ্য ভেঙে পড়ে এবং প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর সম্পূর্ণ বিলুপ্ত হয়ে যায়।