নারীর যে ভুল অবশ্য সংশোধনীয়
শরিফ আহমাদ
প্রকাশ : ২৭ নভেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
ইসলাম নারীদের ন্যায্য অধিকার দিয়েছে। উন্নত জীবন গঠনের জন্য দিয়েছে বিধিবিধান। জীবন চলার পথে নারীরা বেশি ভুল করে। ক্ষতিগ্রস্ত হয় দুনিয়া ও আখেরাতে। এখানে নারীদের কমন কয়েকটি ভুল নিয়ে আলোচনা করা হলো। যা সংশোধন হওয়া জরুরি।
নামাজের ব্যাপারে উদাসীনতা : নামাজ ইসলামের দ্বিতীয় বৃহত্তম ইবাদত। নারীদের এই ইবাদতের ব্যাপারে উদাসীনতা লক্ষণীয়। দৈনিক কর্ম ব্যস্ততা ছাড়াও বিলম্বে নামাজ আদায় করে তারা। এমন নামাজিদের পরিণতি সম্পর্কে আল্লাহপাক বলেন, দুর্ভোগ সেসব নামাজির জন্য নিজেদের নামাজের ব্যাপারে যারা থাকে গাফেল। (সুরা মাউন : ৪৫)।
অভিশাপ ও অকৃতজ্ঞা : সংসারে সুখের জন্য পুরুষরা কঠোর পরিশ্রম করে। তবুও তাদের প্রতি অকৃতজ্ঞ হয় নারীরা। কথায় কথায় খোঁচা দেয়। যখন ইচ্ছে যাকে তাকে অভিশাপ দেয়। হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, হে রমণীগণ! তোমরা দান-খয়রাত করতে থাকো এবং বেশি করে ইস্তেগফার কর। কেন না, আমি দেখেছি যে জাহান্নামের অধিবাসীদের অধিকাংশ নারী। জনৈকা বুদ্ধিমতী মহিলা প্রশ্ন করল, হে আল্লাহর রাসুল! জাহান্নামে আমাদের সংখ্যাগরিষ্ঠতার কারণ কি? তিনি বললেন, তোমরা বেশি বেশি অভিসম্পাত করে থাকো এবং স্বামীর অকৃতজ্ঞতা প্রকাশ করো। (মুসলিম : ১৪৫, মুসনাদে আহমদ : ৪০৩৬)।
রূপ সৌন্দর্য প্রদর্শন : সাধারণত নারীরা সাজসজ্জা খুব পছন্দ করে। এ জন্য অবশ্য শরীয়ত তাদের নির্ধারিত সীমারেখা দিয়েছে। তা সত্ত্বেও অনেকে বিউটি পার্লারে গিয়ে হারাম উপায়ে রূপচর্চা করে। নিজেকে প্রদর্শনের মানসিকতা লালন করে। মহান আল্লাহ বলেন, আর তোমরা নিজ ঘরে অবস্থান করবে এবং প্রাচীন জাহেলী যুগের প্রদর্শনীর মতো নিজেদের প্রদর্শন করে বেড়াবে না। আর তোমরা নামাজ কায়েম করো। জাকাত প্রদান করো এবং আল্লাহ তাঁর রাসুলের অনুগত থাকো। (সুরা আহযাব : ৩৩)।
পারিবারিক পর্দার অভাব : আজকাল কিছু নারী বাইরে বোরকা পরে চললেও পরিবারে পর্দা বিধান মানে না। যার তার সাথে সাক্ষাৎ করে। ঘটে যায় বহু অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। পারিবারিক পর্দা প্রথমে নিশ্চিত করা জরুরি। হজরত উকবা ইবনে আমির (রা.) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, তোমরা স্ত্রী লোকদের কাছে যাওয়া থেকে বেঁচে থাকবে। তখন জনৈক আনসার বললেন, দেবর সম্পর্কে কি মনে করেন? তিনি বললেন, দেবর তো মউত (মৃত্যুকে যেমন ভয় করা হয়, দেবরের সম্পর্ক ও তেমনি ভয় পাওয়া উচিত) (তিরমিজি : ১১৭১)।
গিবত চর্চার বদভ্যাস : নারীদের মধ্যে গিবত চর্চা আর চোগলখোরীর প্রবণতা বেশি । দু’চারজন একত্রিত হলেই শুরু হয়ে যায় বকবক। ইসলামে অন্যদের গিবত করা বড় গোনাহ। পবিত্র কোরআনে এসেছে, হে মুমিনগণ তোমরা কারো দোষ অনুসন্ধান করো না। আর একে অন্যের গিবত করো না। তোমাদের কেউ কি মৃত ভাইয়ের গোশত খেতে পছন্দ করবে? এটা তো তোমরা অবশ্যই ঘৃণা করে থাক। আর আল্লাহকে ভয় করো। নিঃসন্দেহে আল্লাহ তওবা কবুলকারী, দয়ালু। (সুরা হুজুরাত : ১২)।
পারিবারিক দ্বন্দ্ব-কলহ : গ্রাম শহরে অনেক পরিবারে নারী সদস্যদের মধ্যে মিল মুহাব্বাত নেই। সামান্য কারণে কথাবার্তা বন্ধ করে রাখে। বউ-শাশুড়ি কিংবা ননদদের মাঝে দ্বন্দ্ব-কলহ যেন থামেই না। কেউ কারো কাছে নত না হওয়ার মনোভাব আত্মীয়তা ছিন্ন করার বড় কারণ। হজরত আনাস ইবনে মালেক (রা.) থেকে বর্ণিত। রাসুল (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি চায় যে, তার রিজিক প্রশস্ত হোক বা আয়ু বৃদ্ধি পাক, সে যেন তার আত্মীয়তার সম্পর্ক অক্ষুণ্ণ রাখে। (বোখারি : ৫৫৬০)।
ফরজ গোসলে অলসতা : ফরজ গোসলে অলসতা করা নারীদের চিরাচরিত অভ্যাস। অথচ ফরজ গোসলের তাকিদ দিয়ে আল্লাহতায়ালা বলেন, যদি তোমরা নাপাক হয়ে থাক, তবে গোসল কর। (সুরা মায়েদা : ৬) ফরজ গোসল বিলম্বিত করার কারণে যদি নামাজ কাজা হয়ে যায়, তাহলে অবশ্যই গোনাগার হতে হবে। সুতরাং এ ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি।
লেখক : শিক্ষক ও খতিব