ঢাকা ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৮ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

বিশৃঙ্খল মনন সুশৃঙ্খল হোক

জারিয়াতুল হাফসা
বিশৃঙ্খল মনন সুশৃঙ্খল হোক

মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব। মানুষে-মানুষে বিচিত্রতা সৃষ্টিকর্তা প্রদত্ত আরেকটি নিয়ামত। মানুষের মাঝে লিঙ্গভেদের জন্যই আজ পর্যন্ত মানুষ প্রজাতি টিকে আছে; টিকে থাকবে মহা প্রলয়ের আগ পর্যন্ত। আমরা কোন লিঙ্গের হবো তা আমাদের স্রষ্টাই নির্ধারণ করেন এবং স্রষ্টা নির্ধারিত সব বিষয়ই সন্দেহাতীত সুন্দরতম। আল্লাহতায়ালা বলেন, আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীর সার্বভৌমত্ব আল্লাহরই। তিনি যা ইচ্ছা তাই সৃষ্টি করেন। তিনি যাকে ইচ্ছা কন্যা সন্তান এবং যাকে ইচ্ছা পুত্র সন্তান দান করেন। অথবা দান করেন পুত্র ও কন্যা উভয়ই এবং যাকে ইচ্ছা তাকে করে দেন বন্ধ্যা। তিনি সর্বজ্ঞ, সর্বশক্তিমান।

(সুরা শূরা: ৪৯-৫০)।

আমাদের সমাজে নারী-পুরুষ ছাড়াও আরেক ধরনের মানুষ রয়েছেন। তারা হলেন হিজড়া জনগোষ্ঠী। এটি একটি জন্মগত সমস্যা; ল্যাব টেস্টের মাধ্যমে যা প্রমাণ করা যায়। একটি শিশু অস্পষ্ট বাহ্যিক প্রজনন অঙ্গ নিয়ে জন্মগ্রহণ করতে পারে। কারো কারো ক্ষেত্রে বয়ঃসন্ধি এমনকি ২০-২৫ বছর বয়সেও শারীরিক পরিবর্তন হতে পারে। এটি পুরোপুরি পালনকর্তা কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত। এই সমস্যার উপরে মানুষের হাত নেই। কিন্তু আমরা ট্র্যান্সজেন্ডার ও হিজড়া জনগোষ্ঠীকে মিলিয়ে ফেলছি। যেখানে হিজড়া ও ট্র্যান্সজেন্ডারের মাঝে রয়েছে বিস্তর ফারাক।

ট্রান্সজেন্ডার একটি মানসিক অবস্থা নির্দেশ করে। একজন ছেলে বা মেয়ে ‘ভুল দেহে আটকা পড়েছে’ বলে মনে করে। অর্থাৎ, নিজের ইচ্ছায় সেই ট্রান্স ব্যক্তিটি নিজের লিঙ্গ নির্ধারণ করে; তার জন্মগত লিঙ্গের বিপরীত লিঙ্গ তার পরিচয় হিসেবে দাঁড় করায়। অর্থাৎ এটি একটি স্ব-ঘোষিত ব্যাপার। গবেষণা অনুসারে, ২০ শতাংশ ট্র্যান্সজেন্ডার মেডিকেল চিকিৎসা করে বাহ্যিক নারী বা পুরুষের মতো বৈশিষ্ট্য অর্জন করলেও বাস্তবে ৯৮ শতাংশ ট্র্যান্স নারীর পেনিস থাকে, তেমনিভাবে ট্র্যান্স পুরুষের যোনি থাকে। অন্যদিকে হিজড়া জনগোষ্ঠীদের প্রজনন অঙ্গের অস্পষ্টতার দরুণ তারা সন্তান জন্ম দিতে সক্ষম নয়। এটি যেমন একটি শারীরিক অবস্থা বোঝাচ্ছে তেমনিভাবে ট্র্যান্সজেন্ডার পরিচয়টিও একটি মানসিক অবস্থার নির্দেশক। ট্র্যান্সজেন্ডারের প্রচলন চলতে থাকলে সমকামীতার মতো একটি জঘন্য অশ্লীলতা বেড়ে যাবে। অনেক ক্ষেত্রে, ট্র্যান্সজেন্ডাররা বাই-সেক্স্যুয়ালও হতে পারে। প্রচলনটিকে প্রশ্রয় না দিয়ে তাদের মানসিক চিকিৎসার আওতায় আনা পরিস্থিতির দাবি হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমরা হিজড়াদের অধিকার চাই; তেমনিভাবে ট্র্যান্সজেন্ডারদের মানসিক চিকিৎসার আওতায় এনে প্রচলনটির দমন চাই; আর চাই, তাদের মধ্যকার বিশৃঙ্খল মননটি সুশৃঙ্খল হয়ে বিকশিত হোক।

লেখক : শিক্ষার্থী, সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত