ঢাকা ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

কালের সাক্ষী ‘পঁচাত্তর থেকে শাপলা’

দিদার শফিক
কালের সাক্ষী ‘পঁচাত্তর থেকে শাপলা’

বইয়ের নাম : পঁচাত্তর থেকে শাপলা

লেখক : মনযূর আহমাদ

প্রকাশক : নাবিক প্রকাশন, বাংলাবাজার

প্রকাশকাল : আগস্ট ২০২৩

দুই খণ্ড একত্রে মুদ্রিত মূল্য : ১৫০০ টাকা।

যোগাযোগ : ০১৯৬৭-১৯৭-৯৯৮

খরস্রোতা বহতা নদীর পানির মতো কালের কথাও বয়ে যায় অবিরাম। কালের কথা কলমের কালি হয়ে কাগজের পৃষ্ঠায় মুদ্রিত হলে তার নাম হয় ইতিহাস। ইতিহাস মানুষের জীবনে নানানভাবে প্রভাব ফেলে। তাই ইতিহাস যুগে যুগে বিভিন্ন উপায়ে সংরক্ষিত হয়। এ ধারায় বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া কিছু গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাকে অবলম্বন করে রচিত হয়েছে ‘পঁচাত্তর থেকে শাপলা’ নামক গ্রন্থটি। এর লেখক প্রথিতযশা সম্পাদক মনযূর আহমাদ। যিনি দীর্ঘ পঁচিশ বছর ধরে সম্পাদকের টেবেলি বসে দেশ ও জাতিকে নিয়ে গভীর ভাবনায় বিভোর থাকা এক দক্ষ কলম সৈনিক। সময়ের কথা সময়ে বলার পক্ষপাতী ইতিহাস সচেতন এক বরেণ্য ব্যক্তিত্ব। তিনি সময়কে ধারণ করে ইতিহাস রচনা করেন এবং ইতিহাসের গভীরে ঢুকে সত্য ও সঠিক তথ্য তুলে আনেন। এ ধারাবাহিকতায় তার রচিত কিছু ঐতিহাসিক গ্রন্থ রয়েছে। তার রচিত ‘সিন্দু থেকে বঙ্গ’ গ্রন্থটি এরই মধ্যে পাঠকমহলে বেশ সাড়া জাগিয়েছে। ‘পলাশি থেকে ধানমন্ডি’ ‘আমার ঢাকা’ ও ‘বখতিয়ারের বাংলাদেশ’ গ্রন্থগুলো অচিরেই প্রকাশিত হবে।

২০২৩ সালের আগস্ট মাসে দুই খণ্ডে প্রকাশিত ‘পঁচাত্তর থেকে শাপলা’ নামে বিশ্লেষণধর্মী ঐতিহাসিক গ্রন্থটি প্রকাশ হওয়ার পরপরই ইতিহাস সচেতন পাঠককে বেশ নাড়া দিয়েছে। গ্রন্থটি হয়েছে পাঠক নন্দিত। ‘পঁচাত্তর থেকে শাপলা’ গ্রন্থটিতে ভারত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের বিভিন্ন শাসনামল ও শাসকবর্গের নানান আচরণ প্রাসঙ্গিকভাবে উঠে এসেছে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে।

স্বাধীনতার ঘোষণা, ’৭১-এর যুদ্ধ এবং শেখ মুজিব থেকে পর্যায়ক্রমে শেখ হাসিনার শাসনামলের নানান চিত্র ও ঘটনা স্থান পেয়েছে গ্রন্থটিতে। বিশেষত ইসলামি রাজনীতির নানান দিক; উত্থান-পতন, সংকট ও উত্তরণ, স্বাধীনতার আগে-পরে আলেমদের আন্দোলন, ব্যর্থতা ও সফলতার সাতকাহন বাস্তবতার নিরিখে উপস্থাপিত হয়েছে। বঙ্গে ইসলামি রাজনীতির সূচনা ও চর্চার ইতিহাস, জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ ও মাওলানা মওদুদির চিন্তা-দর্শন : আকিদা রক্ষা নাকি আধুনিক রাষ্ট্র গঠন? তওবার রাজনীতি নিয়ে হাফেজ্জী হুজুরের আগমন, শাইখুল হাদিস আজিজুল হক ও মুফতি আমিনির নেতৃত্বে বাবরি মসজিদ লংমার্চটি বেনাপোল সীমান্তে পৌঁছার আগেই যশোরের ধোপাখোলায় এসে থেমে যায় কেন? কী রহস্য? সংবাদপত্রের তথ্যসহ বিভিন্ন দালিলিক গ্রন্থের উদ্ধৃতি দিয়ে লেখক চেষ্টা করেছেন বস্তুনিষ্ঠ তথ্যের আলোকে সঠিক ইতিহাস পাঠকের সামনে তুলে ধরতে। সিপাহী বিপ্লব, সেনা অভ্যুত্থান, জেনারেল জিয়া কীভাবে হয়ে উঠলেন প্রেসিডেন্ট জিয়া? বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণের বৈশিষ্ট্য; আওয়ামী লীগ ধর্মদ্রোহী নয়, ক্ষমতার পালা বদলে কেন সংবিধানে সংশোধনী? রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম নাকি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র? এ নিয়ে রাজনীতিপাড়ার আলাপচারিতা, ফতোয়া নিষিদ্ধকারী রায়ের বিরুদ্ধে মুফতি আমিনির ফতোয়া: শাইখুল হাদিস আজিজুল হক ও মুফতি আমিনিকে গ্রেপ্তারের কারণ, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় কেন ঝরে যায় আট যুবকের তাজা প্রাণ? বাংলাদেশে কওমি ও আলিয়া মাদ্রাসার শিক্ষার সূচনা ও ইতিহাস এবং ড. কুদরত-এ খোদার শিক্ষা কমিশন ও শিক্ষাবিষয়ক বিবিধ প্রসঙ্গ কালের আয়নায় প্রতিবিম্বিত হয়েছে গ্রন্থের পাতায় পাতায়। বিশেষত দুটো ঘটনা এই গ্রন্থটিকে বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ করে তুলেছে। এক. বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে নৃশংসভাবে হত্যা করার নির্মম কাহিনি ও তার প্রেক্ষাপট। দুই. হেফাজতের ১৩ দফা আন্দোলন। ২০১৩ সালের ৫ মে মতিঝিলের শাপলা চত্বরে জনজোয়ার হওয়ার কারণ ও নেপথ্য কথা, শাপলা চত্বরের অর্জন ও বিসর্জন কী? তা যুক্তি-প্রমাণ ও বাস্তবতার আলোকে তুলে ধরেছেন লেখক অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে। লেখক প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়েছেন বিজ্ঞ পাঠকের কাছে- হেফাজতের আন্দোলন কি ২০১৩ সালের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নাকি বাংলাদেশ বঙ্গ থাকার কালেও এ আন্দোলন চলমান ছিল? হেফাজত কি ২০১৩ তে স্থির নাকি বার বার আসে? যদি আসে, তবে কেন আসে? এ এক ঐতিহাসিক বিতর্ক। কিন্তু লেখক দেখেছেন চেতনার আলোকে। কী তার চেতনা? এ চেতনা কি তার ব্যক্তিগত নাকি পুরো জাতির চেতনা তার কলমের ডগা বেয়ে নেমে এসেছে কাগজের বুকে? এমন সব প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পেতে ‘পঁচাত্তর থেকে শাপলা ’ গ্রন্থটি কালের কথক হয়ে কথা বলবে পাঠকের সঙ্গে। নিকট অতীতের কিছু ঘটনা, কিছু স্মৃতি, আনন্দ ও বেদনা খুব অল্প কথায় ওঠে এসেছে গ্রন্থটিতে। ইতিহাসে আল্লামা আহমদ শফী, হাটহাজারীর ছাত্র আন্দোলন, শোকরানা মাহফিলসহ ছোট্ট একটি সারকথায় গ্রন্থটি সমাপ্ত হয়েছে। এ গ্রন্থটি পাওয়া যাবে বাংলাবাজারস্থ ইসলামি টাওয়ারের সালেহা পাবলিকেশন্স ও ইকরা পাবলিকেশন্সে। এ ছাড়া গ্রন্থটি সংগ্রহ করা যাবে, নিম্নোক্ত নম্বরে সরাসরি যোগাযোগ করে- ০১৯৬৭-১৯৭৯৯৮, ০১৬২৯১৭২৭১৩, ০১৪০১২০১২৪৩, ০১৭২২২৩৫৬২৩।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত