গ্রন্থনা : মুফতি দিদার শফিক

সাবেক মুহাদ্দিস ও শিক্ষাসচিব, জামিয়া ইসলামিয়া জাইনুল উলুম ঢাকারগাও

প্রকাশ : ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

প্রশ্ন : জনৈক ব্যক্তি তার স্ত্রীকে মৌখিকভাবে তিন তালাক দেয়। কিন্তু মৌখিক তালাক দিলে তালাক হয় না এই ধারণাবশত তারা স্বাভাবিক ঘর-সংসার করতে থাকে। দুই বছর পর ওই লোকের মধ্যে দ্বীনের বুঝ আসে। তখন সে মাসআলা জেনে তার স্ত্রীকে বলে, দুই বছর আগেই আমাদের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে গেছে। এখন আর আমরা একত্রে থাকতে পারব না। স্ত্রী এটি মানতে চাচ্ছিল না। পরে তার পরিবারকে বিষয়টি জানালে তারা তাকে বুঝিয়ে নিজেদের বাড়িতে নিয়ে আসে।

জানার বিষয় হলো, ওই মহিলার এখন কোনো ইদ্দত পালন করতে হবে কি না? যদি ইদ্দত পালন করতে হয়, তাহলে তা কীভাবে পালন করবে?

উত্তর : প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে ওই ব্যক্তি তার স্ত্রীকে তিন তালাক দেওয়ার পরও যেহেতু মাসআলা না জানার কারণে তারা দাম্পত্য সম্পর্ক বহাল আছে মনে করে স্বামী-স্ত্রী হিসেবে একত্রে থেকেছে, তাই এক্ষেত্রে তাদের সর্বশেষ মেলামেশার পর থেকে ওই মহিলার ওপর নতুন একটি ইদ্দত আবশ্যক হয়েছে। আর এই ইদ্দতের সময়সীমা হচ্ছে, মহিলা যদি ঋতুমতী হয়, তাহলে সর্বশেষ ‘মেলামেশা’ হওয়ার পর থেকে তিনটি ঋতুস্রাব। আর অন্তঃসত্ত্বা হলে সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়া পর্যন্ত। এই সময়সীমা শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত উক্ত মহিলার জন্য কোথাও বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার সুযোগ নেই। তবে অন্যান্য ইদ্দতের মতো এই ইদ্দতের সময় ঘরে অবস্থান করা জরুরি নয়। অনুরূপভাবে স্বামীর ওপরও এই সময় তার খরচাদি বহন করা আবশ্যক নয়। উলে¬খ্য, তিন তালাক হয়ে যাওয়ার পরও তাদের একত্রে থাকাটা গোনাহের কাজ হয়েছে। এজন্য তাদের উভয়ের আল্লাহতায়ালার দরবারে তওবা-ইস্তেগফার করা জরুরি।

(আলমুহীতুর রাযাবী ৫/২৩৩; আলজাওহারাতুন নায়্যিরা ২/১০১; রদ্দুল মুহতার ৩/৫১৮৫ ও ৫২২)

প্রশ্ন: স্বর্ণ-রুপার পেয়ালায় পানি পান করা জায়েয আছে কি?

উত্তর : স্বর্ণ বা রুপার পেয়ালায় পানি পান করা পুরুষ-মহিলা সবার জন্য নাজায়েয। হাদিস শরিফে এ ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা এসেছে। হজরত হুযাইফা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের স্বর্ণ-রুপার পাত্রে পানাহার করতে, রেশমি কাপড় পরিধান করতে এবং তাতে বসতে নিষেধ করেছেন। (বোখারি : ৫৮৩৭, আলজামেউস সগির, পৃ.২৩২; মুখতাসারুত তহাবি, পৃ. ৪৩৬; আলইখতিয়ার ৪/১২৮; আলমুহীতুল বুরহানি ৮/৪৬; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৪/৩৭১)।

সৌজন্যে, মাসিক আল-কাউসার।