সিজদায় তিলাওয়াতের মাসায়েল

মুফতি শাহ আমিমুল ইহসান সিদ্দিকি

প্রকাশ : ১৮ মার্চ ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

মাসয়ালা : প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্ক সুস্থ মস্তিষ্কসম্পন্ন মুসলমানের উপর সিজদায়ে তিলাওয়াত ওয়াজিব। এ ধরনের কেউ সিজদার আয়াত পাঠ করলে বা অন্য কারো থেকে শ্রবণ করলে তাকে সিজদা করতে হয়। নাবালেগ ও মস্তিষ্কবিকৃত ব্যক্তির ওপর সিজদায়ে তিলাওয়াত ওয়াজিব নয়।

মাসয়ালা : হায়েয ও নেফাস অবস্থায় মহিলারা কারো থেকে সিজদার আয়াত শুনলে তাদের ওপর সিজদা ওয়াজিব হয় না। তাবেয়ি ইমাম ইবরাহীম নাখয়ি রহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, হায়েয অবস্থায় সিজদার আয়াত শুনলে সিজদা করবে না। তার তো এর চেয়ে বড় বিধান ফরজ নামাজই পড়তে হয় না। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদিস: ৪৩৪৭, কিতাবুল আছল ১/২৭২; আলমাবসূত, সারাখসি ২/৪; বাদায়েউস সানায়ে ১/৪৩৯)।

 

সিজদায়ে তিলাওয়াত আদায়ের পদ্ধতি

মাসয়ালা : সিজদায়ে তিলাওয়াত আদায়ের উত্তম পদ্ধতি হচ্ছে, দাঁড়িয়ে নিয়ত করে হাত উঠানো ছাড়া আল্লাহু আকবার বলে সিজদায় যাবে। সিজদায় গিয়ে তিনবার ‘সুবহানা রাব্বিয়াল আলা’ পড়ে পুনরায় আল্লাহু আকবার বলে দাঁড়িয়ে যাবে। এভাবে শুধু একটি সিজদা করবে। (আলবাহরুর রায়েক ২/১২৬; আদ্দুররুল মুখতার ২/১০৭; ইলাউস সুনান ৭/২৪৯-২৫০)।

মাসয়ালা : সিজদায়ে তিলাওয়াতের ক্ষেত্রে তাকবিরের সময় হাত উঠানো, হাত বাঁধা, শেষে বৈঠক, তাশাহহুদ, সালাম ফিরানো এসবের কোনো নিয়ম নেই। তাই এক্ষেত্রে এমন কিছু করবে না। (আলমাবসূত, সারাখসী ২/১০; তাবয়িনুল হাকায়েক ১/৫০৫ আলবাহরুর রায়েক ১/১২৬)।

মাসয়ালা : সিজদায়ে তিলাওয়াতের সময় দাঁড়ানো থেকে সিজদায় যাওয়া এবং সিজদা করে আবার দাঁড়িয়ে যাওয়া উভয়টিই মুস্তাহাব। সুতরাং একাধিক সিজদা আদায় করার ক্ষেত্রেও প্রতিটি সিজদা শেষে দাঁড়িয়ে যাবে তারপর আরেকটি সিজদা করবে। তবে না দাঁড়িয়ে যদি বসা থেকে সিজদায় যায় তাহলেও সিজদা আদায় হয়ে যাবে। (আলবাহরুর রায়েক ২/১২৬; হাশিয়াতুত তাহতাবি আলাল মারাকি, পৃ. ২৬০; আদ্দুররুল মুখতার ২/১০৭)।

মাসয়ালা : জমিনে সিজদা করতে সক্ষম নয় এমন অসুস্থ ব্যক্তি নামাজের সিজদার ন্যায় ইশারা করে সিজদায়ে তিলাওয়াত আদায় করতে পারবে। (কিতাবুল আছল ১/২৭৭; শরহুল মুনইয়া, পৃ. ৫০১)।