ঢাকা ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৮ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

ঈদুল ফিতর মুসলমানের ধর্মীয় প্রধান উৎসব

শরিফ আহমাদ
ঈদুল ফিতর মুসলমানের ধর্মীয় প্রধান উৎসব

মাসব্যাপী সিয়াম সাধনার পর আসে এই ঈদ। এটাকে ঘিরে থাকে মানুষের অনেক প্রত্যাশা ও স্বপ্ন। বাস্তবে ঈদের মাধ্যমে যে আত্মতৃপ্তি অনুভূত হয় তা অন্য কোনো উৎসবে হয় না। ঈদ আনন্দের মিছিলে হিংসা-বিদ্বেষ ভুলে সৌহার্দণ্ডসম্প্রীতি আর ভালোবাসার বন্ধনে আবদ্ধ হয় প্রতিটি মুসলিম। ঈদের আনন্দ অটুট থাকুক সারা বছর।

ঈদ আনন্দের সূচনা : পৃথিবীর প্রত্যেকটি জাতির আলাদা আলাদা উৎসব ও আনন্দের দিন আছে। মুসলমানদের আনন্দ উৎসব অন্যদের থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। দ্বিতীয় হিজরীতে ঈদ আনন্দের সূচনা থেকে এটা স্পষ্ট। হজরত আনাস ইবনে মালিক (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুল (সা.) মদিনায় পৌঁছে দেখতে পান যে সেখানকার অধিবাসীরা দুইটি দিন (নায়মূক ও মেহেরজান) খেলাধুলা ও আনন্দ উৎসব করে থাকে। তিনি জিজ্ঞাসা করেন, এই দুইটি দিন কিসের? তারা বলেন, জাহিলি যুগে আমরা এই দুইদিন খেলাধুলা ও উৎসব করতাম। রাসুল (সা.) বলেন, আল্লাহতায়ালা তোমাদের এই দুইদিনের পরিবর্তে অন্য দুটি উত্তম দিন দান করেছেন। তা হল কোরবানির ঈদ এবং রোজার ঈদ। (আবু দাউদ : ১১৩৪)।

ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করা : ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করার জন্য বন্ধু বান্ধবদের সঙ্গে অনলাইন অফলাইনে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় করা যায়। সাহাবায়ে কেরাম ঈদের দিন সাক্ষাৎকালে একে অপরকে বলতেন, তাকাব্বালাল্লাহু মিন্না ওয়া মিনকুম। এর অর্থ আল্লাহতায়ালা আমাদের ও আপনাদের ভালো কাজগুলো কবুল করুন। (আল মুজামুল কাবির : ১৭৫৮৯)।

আত্মীয়স্বজনের খোঁজখবর রাখা : ঈদের দিনে আত্মীয়-স্বজন এবং পাড়া-প্রতিবেশীর দিকে নজর রাখার গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তাদের মুখে হাসি ফোটানো সওয়াবের কাজ। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি আল্লাহ ও শেষ দিনের প্রতি ঈমান রাখে, সে যেন তার মেহমানের সম্মান করে। আর যে ব্যক্তি আল্লাহ ও শেষ দিনের প্রতি ঈমান রাখে, সে যেন তার আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখে। আর যে ব্যক্তি আল্লাহর শেষ দিনের প্রতি ঈমান রাখে, সে যেন উত্তম কথা বলে নতুবা নীরব থাকে। (বোখারি : ৫৭০৮)।

ইসলামি সংস্কৃতি চর্চা করা : ঈদ উপলক্ষ্যে কবিতা আসর কিংবা ইসলামী সংস্কৃতির আয়োজন করা যায়। ইসলামী সভ্যতার সংস্কৃতির বিকাশ ঘটানো যায়। হজরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, (একদিন আমার ঘরে) আবু বকর (রা.) এলেন। তখন আমার নিকট আনসার দুটি মেয়ে বুআস যুদ্ধের দিন আনসারীরা পরস্পর যা বলেছিলেন সে সম্পর্কে কবিতা আবৃত্তি করছিল। তিনি বলেন, তারা কোনো পেশাগত গায়িকা ছিল না। আবু বকর (রা.) বললেন, রাসুল (সা.)এর ঘরে শয়তানি বাদ্যযন্ত্র। আর এটি ছিল ঈদের দিন। তখন রাসুল (সা.) বললেন, হে আবু বকর! প্রত্যেক জাতির জন্যই আনন্দ উৎসব রয়েছে। আর এ হলো আমাদের আনন্দ। (বোখারি : ৯০৪)।

খেলাধুলার আয়োজন করা : ঈদের দিনে শরীর চর্চা বা খেলাধুলার আয়োজন করা যায়। এর মাধ্যমে আনন্দের রঙ ছড়িয়ে দেওয়া যায়।

হজরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, ঈদের দিন সুদানীরা বর্শা ও ঢালের দ্বারা খেলা করত। আমি নিজে (একবার) রাসুল (সা.)-এর কাছে আরজ করেছিলাম অথবা তিনি নিজেই বলেছিলেন, তুমি কি তাদের খেলা দেখতে চাও? আমি বললাম, হ্যাঁ, তারপর তিনি আমাকে তাঁর পেছনে এমনভাবে দাঁড় করিয়ে দিলেন যে, আমার গাল ছিল তার গালের সঙ্গে লাগানো। তিনি তাদের বললেন, তোমরা যা করতে ছিলে তা করতে থাক, হে বনু আরফিদা। পরিশেষে, আমি যখন ক্লান্ত হয়ে পড়লাম, তখন তিনি আমাকে বললেন, তোমার কি দেখা শেষ হয়েছে? আমি বললাম, হ্যাঁ, তিনি বললেন, তা হলে চলে যাও। (বোখারি : ৯০২)।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত