ইসলামের শুরু থেকে মসজিদ ছিল মুসলিম সমাজের প্রাণস্পন্দন। ইতিহাসের ভাঙাগড়া, দুঃখ-আনন্দ ও জয়-পরাজয়ে মসজিদসমূহ মুসলমানদের সামনে বাতিঘরের ভূমিকা পালন করেছে। সুষ্ঠু পরিকল্পনার মাধ্যমে এখনো আমাদের সমাজে সর্বজনীন শিক্ষার আলো বিতরণ, জাকাতব্যবস্থার মাধ্যমে দারিদ্র্র্য দূরীকরণ, পবিত্রতা ও পরিচ্ছন্নতার চেতনা জাগ্রত করে জনস্বাস্থ্যের উন্নয়ন, সর্বোপরি সমাজের সর্বত্র ভ্রাতৃত্ব ও সম্প্রীতির পরিবেশ তৈরিতে মসজিদসমূহ এবং সম্মানিত ইমামগণ বিশেষ অবদান রাখতে পারেন। বক্তাগণ বর্তমান পরিস্থিতিতে দেশের সব মসজিদে পুরুষদের মতো মহিলাদের বেলায়ও পর্দার ব্যবস্থা রেখে নামাজ ও ইবাদতের জন্য সুযোগ রাখার জন্য আহ্বান জানান।
২৫ মে ২০২৪ ঢাকা ফার্মগেটস্থ বায়তুশ শরফ ইসলামী গবেষণাকেন্দ্রে আয়োজিত সেমিনারে আলোচকগণ উপরোক্ত অভিমত ব্যক্ত করেন। ‘মসজিদভিত্তিক সমাজ গড়ার স্বপ্ন: বায়তুশ শরফের প্রতিষ্ঠাতা শাহ মওলানা মীর মুহাম্মদ আখতর (রা) এর মিশন’ শীর্ষক আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন রাহবারে বায়তুশ শরফ আল্লামা শায়খ মুহাম্মদ আবদুল হাই নদভী। প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট পরমাণু বিজ্ঞানী প্রফেসর ড. এম শমশের আলী। প্রবন্ধ পাঠ করেন বিশিষ্ট লেখক ও গবেষক আলহাজ আমান উল্লাহ খান। সূচনা বক্তব্য ও সঞ্চালনা করেন গবেষণাকেন্দ্রের পরিচালক ড. মুহাম্মদ ঈসা শাহেদী। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কুষ্টিয়ার আর্টস ফ্যাকাল্টির সাবেক ডিন ড. মাহফুজুর রহমান, বায়তুশ শরফ আনজুমনে ইত্তেহাদ ঢাকা শাখার সহ-সভাপতি আলহাজ আবদুল মালেক মোল্লা, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মোহাম্মদ নূরুল হুদা, মসজিদ বায়তুশ শরফ ঢাকার খতিব মওলানা জাফর আহমদ, বায়তুশ শরফ আনজুমনে ইত্তেহাদ ঢাকার সহ-সভাপতি আলহাজ জহুরুল ইসলাম চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা, খুলনা বায়তুশ শরফ মসজিদের খতিব মওলানা ইব্রাহীম ফয়জুল্লাহ, কক্সবাজার বায়তুশ শরফের প্রতিনিধি হাফেজ মুজিবুর রহমান বেলাল ও জনাব আনোয়ারুল আজিম আজাদ। বক্তাগণ আরো বলেন, নবী করিম (সা.) এর জমানায় মদিনার মসজিদে নববি ইসলামি সমাজ ও রাষ্ট্রের যাবতীয় কর্মকাণ্ডের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে ভূমিকা পালন করেছে। মসজিদের যে জায়গায় বসে তিনি বিভিন্ন গোত্রীয় প্রতিনিধিদলকে সাক্ষাৎ দিতেন তা এখনও উস্তায়ানাতুল উফুদ (প্রতিনিধিদলের স্তম্ভ) হিসেবে চি?িহ্নত আছে। পরবর্তীকালেও মসজিদকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিখ্যাত জামেয়া বা বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণাগার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
আমাদের দেশের মসজিদগুলো এখনো শিশুকিশোর থেকে শুরু করে বয়স্কদের শিক্ষায়তন হিসেবে সমাজে শিক্ষা ও জ্ঞানচর্চা এবং সুন্দর জীবনবোধ ও সুকীর্তির আলো বিকিরণ করতে পারে। তবে এর জন্য সুষ্ঠু চিন্তা-ভাবনা, পরিকল্পনা ও উদ্যোগের প্রয়োজন। আমরা জেনে খুশি হয়েছি যে, বায়তুশ শরফের প্রতিষ্ঠাতা শাহ মওলানা মুহাম্মদ আখতর (র.) একজন বড় দরজার ওলী ছিলেন এবং তিনি মসজিদে নববীর আদলে মসজিদ বায়তুশ শরফ প্রতিষ্ঠা করে মসজিদসমূহকে আধ্যাত্মিক ও জাগতিক কর্মকাণ্ডের চালিকাশক্তি হিসেবে গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখেছিলেন এবং আমাদেরকেও সে স্বপ্ন দেখতে উদ্বুদ্ধ করে গেছেন। মুসলমান হিসেবে আমাদের প্রত্যেকের উচিত এমন স্বপ্ন লালন করা এবং তা বাস্তবায়নের জন্য কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা। আমরা আশা করব, ড. মুহাম্মদ ঈসা শাহেদীর নেতৃত্বে বায়তুশ শরফ ইসলামী গবেষণা কেন্দ্র এ ক্ষেত্রে জাতিকে পথ দেখাতে সক্ষম হবে- ইনশাআল্লাহ। (প্রেস বিজ্ঞপ্তি)