ঢাকা ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

তাকওয়ার পোশাকই উন্নত সভ্যতা

হাদিউজ্জামান
তাকওয়ার পোশাকই উন্নত সভ্যতা

আদি যুগে মানুষের পোশাক ছিল না। গাছের পাতা, পশুর চামড়া দিয়ে কোনো মতে সতর বা লজ্জাস্থান ঢেকে রাখত। শিল্পসভ্যতার উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে মানুষ তার পরিধেয় বস্ত্রের উন্নতি সাধন করেছে। তাই যারা একসময় পোশাক পেত না, তারা যখন পোশাক পেল আর তা দিয়ে শরীর ঢাকতে শুরু করল,ঠিক তখনই সভ্যতার উৎকর্ষ সাধিত হলো। মানুষ পোশাক পড়তে শিখল। এজন্য বলা হয়, নগ্ন, অর্ধনগ্ন হয়ে থাকা সভ্য ও সুস্থ সভ্যতা নয়। এটা পশ্চাৎপদতা। আদিযুগে ফিরে যাওয়া। যা সুস্থ ও বিবেকসম্পন্ন মানুষের কাছে কাম্য নয়। প্রকৃত পক্ষে, তাকওয়ার পোশাকই উন্নত সভ্যতার পোশাক। তাকওয়ার পোশাক কী? যে ধরনের পোশাক আল্লাহর রাসুল (সা.) পরিধান করেছেন, পরিধান করতে বলেছেন তা-ই তাকওয়ার পোশাক। যে কোনো ব্যক্তি তার সাধ্যমতে সুন্দর ও উন্নত মানের কাপড় পরিধান করতে পারে। তবে সেটা নিষিদ্ধ ও অহংকার প্রকাশকারী না হওয়া জরুরি। রাসুল (সা.) কে এক লোক জিজ্ঞেস করল, মানুষ তো ভালোবাসে যে তার পোশাক সুন্দর হোক, জুতা সুন্দর হোক। তিনি বললেন, আল্লাহতায়ালা সুন্দর, তিনি সৌন্দর্যকে ভালোবাসেন। অর্থাৎ সুন্দর পোশাক পরতে কোন সমস্যা নেই। শর্ত হল, নিষিদ্ধ কাপড় যেন না হয় এবং সেটা দ্বারা অহংকার প্রদর্শনের মানসিকতা যেন না থাকে। (মুসলিম: ৯১, তিরমিজি : ১৯৯৮)।

নারীর জন্য যে পোশাক নিষিদ্ধ : আল্লাহতায়ালা পবিত্র কোরআনে বলেন, হে নারীরা তোমরা নিজেদের প্রাক-জাহেলি যুগের মত প্রদর্শন করবে না। (সুরা আহজাব : ৩৩)। ইসলাম মহিলাদের জন্য এমন পোশাক নির্ধারণ করেছেন, যা পরিধানের দ্বারা তাদের ব্যক্তিত্ব প্রশংসিত হবে এবং সব ধরনের অপমানজনক পরিস্থিতি থেকে নিজেদের বাঁচিয়ে রাখতে সক্ষম হবে। রাসুল (সা.) তাদের বিশেষ কিছু কাপড় পরিধান করতে বারণ করেছেন। হাদিসে এসেছে, আল্লাহর রাসুল (সা.) সেই মহিলাকে অভিসম্পাত করেছেন, যে পুরুষের পোশাক পরিধান করে। (আবু দাউদ : ৪০৯৮, মুসনাদে আহমাদ : ৮১১০)। বর্তমান সময়ে এটা এক ধরনের ফ্যাশনে পরিণত হয়েছে। এটাকে কোনো গুনাহই মনে করা হচ্ছে না। মুসলিম নারীরা অমুসলিম নারীদের অনুকরণে এমন পোশাক পরিধান করে আল্লাহতায়ালার অবাধ্যতায় নিজেকে লিপ্ত করছে। মুসলিম নারীদের পুরুষালি পোশাক পরিধান থেকে বিরত থাকা উচিত। আটো-সাটো, পাতলা ফিনফিনে কাপড় পরিধান করা ইসলামে সম্পূর্ণ হারামণ্ডনিষিদ্ধ। রাসুল (সা.) বলেন, দুই শ্রেণির জাহান্নামিকে আমি এখনো (তাঁর সময়ে) দেখিনি। এমন একশ্রেণির লোক যাদের কাছে গরুর লেজের মতো চাবুক থাকবে তা দ্বারা তারা জনগণকে পেটাবে এবং এমন একশ্রেণির মহিলা, যারা পোশাক পরা থাকবে কিন্তু তারপরেও উলঙ্গ থাকবে। তারা পুরুষদের নিজেদের প্রতি আকৃষ্ট করবে এবং নিজেরাও আকৃষ্ট হবে। এরা জান্নাতে প্রবেশ করবে না এবং তার সুগন্ধও পাবে না। অথচ জান্নাতের সুগন্ধ অনেক দূর থেকে পাওয়া যায়। (মুসলিম : ৮৪৫১, মুসনাদে আহমাদ : ৯৩৩৮৮)। ফ্যাশনের নামে মুসলিম নারীরা কাঁধ-ফাঁকা, গলাকাটা পোশাক পরতে অভ্যস্ত হচ্ছে। অথচ কাধখোলা পোশাক পরতে ইসলামে বারণ রয়েছে। সাহাবি আবু সাইদ খুদরি (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) এমন পোশাক পরতে নিষেধ করেছেন, যাতে এক-কাঁধে কাপড় থাকে এবং অন্য কাঁধে কাপড় থাকে না বরং খোলা থাকে। (মুসলিম : ২০৯১)।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত