ঢাকার উত্তাল গ্রীষ্ম। আকাশে সূর্যের নির্মম তাপ, আর রাজপথে মানুষের জোয়ার। শিক্ষার্থীদের কণ্ঠে স্লোগানের ঝড়। কোটা সংস্কার আন্দোলন তখন দেশের প্রতিটি ঘরে আলোচনার বিষয়। তাদের দাবি ছিল সুনির্দিষ্ট, আর এই দাবি আদায়ের জন্য হাজারো তরুণ-তরুণী রাজপথে নেমে এসেছিল। এই তরুণদের মধ্যেই ছিলেন মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধ। ছিমছাম চেহারা, সদা হাস্যময়। মানুষের জন্য তার হৃদয়ে ছিল অদ্ভুত ভালোবাসা। একদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্র, অন্যদিকে একজন সফল ফ্রিল্যান্সার। কিন্তু এসব পরিচয়ের বাইরেও মুগ্ধ ছিলেন একজন স্বপ্নদ্রষ্টা। তিনি স্বপ্ন দেখতেন এমন এক দেশের, যেখানে সবাই সমান অধিকার পাবে।
১৮ জুলাই ২০২৪। উত্তাল ঢাকার এক বিকেল। মুগ্ধ সকাল থেকেই ব্যস্ত ছিলেন। একদিকে ক্লাস, অন্যদিকে ফ্রিল্যান্স প্রজেক্ট। দুপুরের পরপরই তিনি সহপাঠীদের ফোন পেলেন। রাজপথে হাজারো শিক্ষার্থী নেমেছে। তাদের কণ্ঠে প্রতিবাদের তেজ। মুগ্ধ দেরি করেননি। তিনি তার যমজ ভাই স্নিগ্ধকে বললেন, 'ভাই, আজ আমাদের দেশের জন্য কিছু করতে হবে। এ অন্যায়ের বিরুদ্ধে আমাদের আওয়াজ তুলতে হবে।’
স্নিগ্ধের চোখে এক ধরনের উদ্বেগ ফুটে উঠল। ‘তুই ঠিক তো?’ ‘ঠিক আছি। ভয় পাস না। আমরা ন্যায়বিচারের জন্য লড়াই করছি। এটা আমাদের দায়িত্ব।’
সেই বিকেলে মুগ্ধ যখন মিছিলের দিকে এগোচ্ছিলেন, তখন তার হাতে ছিল কয়েকটি পানির বোতল। মিছিলের মাঝখানে পৌঁছেই তিনি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের কাছে বোতলগুলো বিতরণ করতে শুরু করলেন। তার চোখে ছিল অসীম সাহস, ঠোঁটে ছিল শান্ত হাসি। বিক্ষোভকারীদের সামনে অবস্থান করছিল পুলিশ। টিয়ার গ্যাস, জলকামান আর রাবার বুলেট দিয়ে তারা আন্দোলন দমন করার চেষ্টা করছিল। মুগ্ধ তখনও নির্ভীকভাবে সাহায্য করে যাচ্ছিলেন। আন্দোলনকারীদের চোখ জ্বালা করছে টিয়ার গ্যাসে, কিন্তু মুগ্ধ তার টি-শার্ট দিয়ে তাদের চোখ মুছে দিচ্ছিলেন।
বিকেল ৫টা। পরিস্থিতি ক্রমেই উত্তপ্ত হয়ে উঠছিল। হঠাৎই বিকট শব্দে গুলি চলল। আন্দোলনকারীরা চিৎকার করে ছত্রভঙ্গ হয়ে গেল। কেউ দৌড়াচ্ছে, কেউ মাটিতে লুটিয়ে পড়ছে।
মুগ্ধ তখন এক ছাত্রীকে পানি দিচ্ছিলেন। গুলির শব্দ শুনে সে ভয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ল। মুগ্ধ দ্রুত তাকে সরিয়ে নিরাপদ জায়গায় নিতে চাইলেন। কিন্তু ঠিক তখনই ঘটে গেল সেই মর্মান্তিক ঘটনা। একটি গুলি সোজা মুগ্ধের কপালে আঘাত করল।
রক্তে ভিজে গেল তার টি-শার্ট। আশপাশের সবাই হতবাক। কেউ ভাবতেই পারেনি, এমন একজন নির্ভীক তরুণ, যিনি শুধু অন্যদের সাহায্য করতে এসেছিলেন, এভাবে মুহূর্তে পড়ে যাবেন।
মুগ্ধের বন্ধুরা তাকে তৎক্ষণাৎ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করল। রক্তক্ষরণ থামানোর চেষ্টা করছিলেন স্নিগ্ধ। মুগ্ধের মুখে তখনও সেই পরিচিত হাসি। তিনি কষ্ট করে বললেন, 'স্নিগ্ধ, ভয় পাস না। আমরা জিতব। আমাদের প্রজন্মকে একদিন ইতিহাস মনে রাখবে।’কথাগুলো শেষ হতেই তার হাত নিস্তেজ হয়ে গেল। স্নিগ্ধ চিৎকার করে উঠল, 'না, মুগ্ধ! তুই এমন করতে পারিস না। এভাবে চলে যেতে পারিস না।’
হাসপাতালে পৌঁছানোর আগেই মুগ্ধের জীবনাবসান হয়। হাসপাতালের পরিবেশ নিস্তব্ধ। তার রক্তাক্ত পরিচয়পত্র তখনও তার গলায় ঝুলছিল। এটি যেন আন্দোলনের প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছিল। তার মৃত্যুর খবর মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ল সারা দেশে। মুগ্ধ হয়ে গেলেন একটি ইতিহাস। একটি নামে আর সীমাবদ্ধ রইলেন না। তার হাতে পানির বোতল, তার শেষ হাসি, তার রক্তে ভেজা টি-শার্ট—সবকিছু আজ স্মৃতিতে অম্লান।
মুগ্ধের রক্তে লেখা হলো নতুন ইতিহাস। তার মৃত্যু শুধু তার পরিবার নয়, পুরো জাতিকে জাগ্রত করেছিল। তার ভাই স্নিগ্ধ এখন সেই যুদ্ধে নেতৃত্ব দেওয়ার প্রতিজ্ঞা করলেন।
‘আমরা থামব না। মুগ্ধ যে স্বপ্ন দেখেছিল, তা আমরা পূরণ করব। সে যে ইতিহাসের শুরু করেছিল, আমরা সেই ইতিহাসের শেষ লিখব।’ মুগ্ধের মৃত্যুর পর পুরো দেশ স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল। টিভি চ্যানেল, পত্রিকা আর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তার রক্তে ভেজা চেহারার ছবি ঘুরছিল। এক তরুণের এমন আত্মত্যাগ জাতির বিবেককে নাড়া দিয়েছিল। তার মৃত্যু যেন আরো শক্তি জোগাল আন্দোলনে। মুগ্ধের যমজ ভাই স্নিগ্ধ তখনো হাসপাতালের করিডোরে বসে ছিলেন। চোখের লাল রেখা তার বেদনা আর রাগের সাক্ষী ছিল। হাসপাতালের বাইরে অপেক্ষা করছিল অসংখ্য মানুষ। সবাই শোকাহত; কিন্তু সেই শোকের মাঝে একটা জ্বলন্ত ক্রোধ। স্নিগ্ধের চোখ থেকে পানি গড়িয়ে পড়ছিল। তিনি মনে মনে বলছিলেন, ‘তুই মরে গিয়ে হারিসনি, মুগ্ধ। আমি তোকে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি তোর স্বপ্নের জন্য আমি আমার সর্বস্ব উজাড় করে দেব।’
সেদিন গভীর রাতে স্নিগ্ধ তার বন্ধুদের সঙ্গে একটি মিটিং করল। মুগ্ধের সহপাঠী আর আন্দোলনের কর্মীরা সবাই সেখানে জড়ো হয়েছিল। স্নিগ্ধ বলল, ‘এই মৃত্যু শুধু আমার ভাইয়ের নয়। এটা পুরো দেশের। মুগ্ধ আমাদের লড়াইয়ে আগুন জ্বালিয়ে গেছে। এবার আমাদের দায়িত্ব সেই আগুনকে দাবানলে পরিণত করা।’
স্নিগ্ধের বক্তব্য সবাইকে অনুপ্রাণিত করল। তারা সিদ্ধান্ত নিল, এই আন্দোলনকে নতুন মাত্রায় নিয়ে যেতে হবে। মুগ্ধের মৃত্যুর পরে ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা সারা দেশের বিভিন্ন স্থানে আন্দোলনের ঢেউ ছড়িয়ে পড়ল। হাজারো তরুণ-তরুণী রাজপথে নেমে এলো। তাদের কণ্ঠে একটাই স্লোগান, ‘মুগ্ধ তুমি অমর। তোর রক্ত বৃথা যাবে না।’
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ক্লাস বর্জন শুরু হলো। শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে প্রধান সড়কগুলো অবরোধ করল। ছাত্রদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষও এই আন্দোলনে যোগ দিল। যেখানেই আন্দোলন হতো, সেখানেই মুগ্ধের ছবি উঁচু করে ধরা থাকত। স্নিগ্ধ আর তার দল মুগ্ধের স্মরণে একটি সংগঠন প্রতিষ্ঠা করল ‘মুগ্ধ ফাউন্ডেশন’। সংগঠনটির প্রধান উদ্দেশ্য ছিল শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায় এবং অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়ানো। সরকার আন্দোলনের তীব্রতায় দিশাহারা হয়ে পড়েছিল। তারা পুলিশি দমনপীড়ন চালানোর চেষ্টা করলেও আন্দোলনের শক্তি তাতে থেমে যায়নি। বরং আরো দৃঢ় হয়েছে। একদিন সকালে স্নিগ্ধের ফোনে একটি অজানা নাম্বার থেকে কল এলো। ওপাশে একজন সাংবাদিক। তিনি বললেন, ‘স্নিগ্ধ ভাই, সরকার নাকি শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নিতে আলোচনা করতে রাজি হয়েছে। আপনারা কী ভাবছেন?’ স্নিগ্ধ উত্তরে বলল, ‘সরকার হয়তো আমাদের দাবি মেনে নিতে চাইছে, কিন্তু আমরা কোনো আপস করব না। যতক্ষণ পর্যন্ত সব শিক্ষার্থী ন্যায্য অধিকার না পায়, ততক্ষণ আমরা এই লড়াই চালিয়ে যাব।’
মুগ্ধের মা প্রায়ই রাতে স্নিগ্ধের ঘরে এসে বসতেন। তার চোখে কান্নার রেখা আর মুখে বিষণ্ণতার ছাপ স্পষ্ট ছিল। কিন্তু তিনি কখনোই স্নিগ্ধকে এই আন্দোলন থেকে বিরত থাকতে বলেননি।
একদিন রাতে তিনি স্নিগ্ধকে বললেন, ‘বাবা, মুগ্ধ চলে গেছে, এটা মেনে নেয়া কঠিন। কিন্তু জানিস, আমি গর্বিত। কারণ আমার ছেলেরা অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে। তোদের এই লড়াই থামাস না। তুই মুগ্ধের অসম্পূর্ণ স্বপ্ন পূরণ কর।’ মায়ের কথায় স্নিগ্ধ যেন আরও দৃঢ় হলো। তিনি প্রতিজ্ঞা করলেন, ‘মা, মুগ্ধ শুধু আমার ভাই নয়, সে এই দেশের একেকটি তরুণের প্রতিচ্ছবি। আমি এই লড়াই থামাব না।’
একদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে বড় এক মিছিলের আয়োজন করা হলো। স্নিগ্ধের নেতৃত্বে শিক্ষার্থীরা জড়ো হলো। তারা নির্ধারিত পথে এগোচ্ছিল, কিন্তু হঠাৎই পুলিশ তাদের বাধা দিল।
মিছিলের সামনে স্নিগ্ধ দাঁড়াল। সে শান্ত কণ্ঠে পুলিশকে বলল, ‘আমরা শান্তিপূর্ণভাবে এগোচ্ছি। আমাদের আটকানোর কোনো অধিকার নেই।’ কিন্তু কথা শেষ হওয়ার আগেই টিয়ার গ্যাস ছোড়া হলো। সবাই ছত্রভঙ্গ হয়ে গেল। হঠাৎ করেই রাবার বুলেট আর জলকামানের আঘাতে চারপাশ ভয়াবহ হয়ে উঠল।
স্নিগ্ধ একজন আহত ছাত্রীকে টেনে সরানোর চেষ্টা করছিল। ঠিক তখনই একটি রাবার বুলেট এসে তার হাতে আঘাত করল। রক্ত গড়িয়ে পড়ছিল, কিন্তু স্নিগ্ধ থামেনি। তার মুখে ছিল দৃঢ়তার ছাপ। মুগ্ধের মৃত্যুর এক মাস পর ১৮ আগস্ট, তার নামে একটি ‘শহীদ মুগ্ধ দিবস’ পালিত হলো। সারা দেশে এই দিনে শিক্ষার্থীরা কালো ব্যাজ ধারণ করল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা মুগ্ধের একটি বিশাল প্রতিকৃতি এঁকে তার নিচে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাল।
স্নিগ্ধ সেখানে বক্তৃতা দিল। তার কণ্ঠে ছিল আবেগ আর দৃঢ়তার মিশ্রণ। ‘মুগ্ধ চলে গেছে, কিন্তু তার রক্ত আমাদের বাঁচিয়ে রেখেছে। তার রক্তে লেখা ইতিহাস কোনোদিন মুছে যাবে না। আমরা সবাই মিলে সেই ইতিহাসকে বাস্তবে রূপ দেব।’ স্নিগ্ধ জানত, লড়াইটা সহজ হবে না। কিন্তু সে আর পিছিয়ে যাবে না। মুগ্ধের স্বপ্ন পূরণ করতে সে নিজের জীবনও উৎসর্গ করতে প্রস্তুত ছিল। এই অদম্য সাহসের কারণে স্নিগ্ধ খুব দ্রুত শিক্ষার্থীদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠল। তার নেতৃত্বে আন্দোলন আরও ব্যাপক হয়ে উঠল। মুগ্ধের মৃত্যুর শোক ধীরে ধীরে শক্তিতে পরিণত হলো। আর সেই শক্তি একদিন পুরো দেশের চেহারা বদলে দেবে এমনটাই সবাই বিশ্বাস করতে শুরু করল।
স্নিগ্ধের নেতৃত্বে আন্দোলন আরো শক্তিশালী হয়ে উঠল। দিনরাত এক করে পরিকল্পনা সাজাচ্ছিলেন তিনি। প্রতিটি জায়গায় মুগ্ধের রক্তাক্ত চিত্র শিক্ষার্থীদের মনে আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছিল। এক মাসের আন্দোলন সরকারকে চাপে ফেলতে বাধ্য করেছিল। অবশেষে সরকার ঘোষণা দিল, তারা শিক্ষার্থীদের সব দাবি মেনে নেবে। কিন্তু সময় ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গেছে। ছাত্র-জনতা একদফা দাবিতে রাস্তায় নেমে পড়ে। গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে স্বৈরাচার, অবৈধ সরকারের পতনের আগ পর্যন্ত কেউ থামবে না।
মুগ্ধের মৃত্যু শুধুমাত্র একটি ব্যক্তিগত ক্ষতি ছিল না। এটি তরুণদের জন্য একটি জাগরণ ঘটিয়েছিল। স্নিগ্ধের নেতৃত্বে মুগ্ধ ফাউন্ডেশন নতুন প্রজন্মকে একত্রিত করে শিক্ষার অগ্রগতিতে ভূমিকা রাখতে শুরু করল। বিভিন্ন অঞ্চলে স্কুল, লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠা করা হলো মুগ্ধের নামে। মুগ্ধ ফাউন্ডেশন চালু করল ‘মুগ্ধ স্কলারশিপ প্রোগ্রাম’ যার অধীনে দরিদ্র শিক্ষার্থীরা বিনামূল্যে পড়াশোনা করার সুযোগ পেল। তরুণরা এখন শুধু রাজপথে নয়, কলমে আর সৃজনশীলতায়ও তাদের লড়াই চালিয়ে যেতে শুরু করল।
একদিন স্নিগ্ধ মায়ের কাছে এসে বলল, ‘মা, তোর কথাই ঠিক ছিল। মুগ্ধ আমাদের মাঝে বেঁচে আছে। সে শুধু আমাদের আন্দোলনের অনুপ্রেরণা নয়, সে পুরো দেশের আশার প্রতীক হয়ে উঠেছে।’ মা মাথা নিচু করে চোখ মুছলেন। কিন্তু এবার তার চোখের পানি ছিল গর্বের। তিনি বললেন, ‘তোমাদের বাবা সবসময় বলতেন, সত্যের পথে হাঁটলে জয় আসবেই। মুগ্ধ সত্যের জন্য রক্ত দিয়েছে। তার সেই সত্যই এখন সবাইকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।’ এক বছর পরে শহীদ মুগ্ধ দিবসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল প্রাঙ্গণে একটি স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপন করা হলো। এর নাম দেয়া হলো ‘মুগ্ধের শপথ’। এখানে খোদাই করা ছিল তার সেই বিখ্যাত উক্তি ‘রক্তে লেখা ইতিহাস কখনো মুছে যায় না। আমি সেই ইতিহাসের সৈনিক।’ স্মৃতিস্তম্ভের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্নিগ্ধ বলেছিল, ‘মুগ্ধ আমাদের স্বপ্নের বীজ বুনে গেছে। আজ সেই স্বপ্ন বাস্তবে রূপ নিচ্ছে। তার রক্ত শুধু আন্দোলনের নয়, এই জাতির পুনর্জাগরণের প্রতীক।’ স্নিগ্ধের নেতৃত্বে তরুণ প্রজন্মের আন্দোলন শুধু সরকারের প্রতিশ্রুতি আদায়েই থামেনি। এই আন্দোলন দেশের প্রতিটি তরুণের মনে একটি বিশ্বাস জাগিয়ে তুলেছিল, ‘আমরা পারি।’ মুগ্ধের আত্মত্যাগ ইতিহাস হয়ে গেছে, কিন্তু সেই ইতিহাসের শিক্ষা প্রতিদিন নতুন প্রজন্মের হাতে ছড়িয়ে পড়ছে। সেই রক্তের বিনিময়ে আজ একটি নতুন বাংলাদেশ গড়ে উঠছে, যেখানে স্বপ্ন আর সাহসের জয়গান চলছে। এই গল্প শেষ হয়, কিন্তু শহীদ মুগ্ধের রক্তের রেশমপথ ধরে এগিয়ে চলা বাংলাদেশের লাল ইতিহাস চিরদিন বয়ে যাবে।
লেখক : গল্পকার