ভেবে-চিন্তে কথা বলুন

শাহাদাত হোসাইন

প্রকাশ : ১৩ জানুয়ারি ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

আমাদের জীবনের প্রতিটি কথাই আমল। যার পুঙ্খানুপুঙ্খ হিসাব কেয়ামতে আল্লাহর দরবারে দিতে হবে। অতএব, কথা বলার আগে একটু হলেও ভাবা উচিত এবং নিয়ন্ত্রিত কথা বলা উচিত। অনিয়ন্ত্রিত কথার কারণে দুনিয়াতে যেমন সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। আখেরাতেও এর জবাবদিহি করতে হবে। দুনিয়াতে পার পেলেও আখেরাতে পার পাওয়ার কোনো সুযোগ থাকবে না। সাহাবি আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, যে ব্যক্তি নিজ কথাবার্তাকে আমল এবং চরিত্রকে দীন হিসাবে দেখে না। সে নিজের অজান্তেই ধ্বংস হয়ে যায় (আল-জামে : ৬১)। বস্তুত যে ব্যক্তি কথাকে আমল মনে করে, নিশ্চয় সে অল্প কথা বলে। (আয-যুহুদ : ৩৮৩)।

কথার কারণে জান্নাত-জাহান্নাম : গ্রামীণ প্রবাদে আছে- কথায় ভাত কাপড় আর কথায় চড়-থাপড়। কথার ভিত্তিতে মানুষের জান্নাত হবে, কথার ভিত্তিতে হবে জাহান্নাম। যে কথায় সৃষ্টি জীবের উপকার হয়, সে কথায় আল্লাহ খুশি হয়। আর যে কথায় ক্ষতি হয়, তাতে আল্লাহ রাগান্বিত হন। কোরআনে এসেছে, তাদের অধিকাংশ শলা-পরামর্শ (কথাবার্তা) ভালো নয়, কিন্তু যে কথাবার্তা দান-খয়রাত, সৎকাজ কিংবা মানুষের মধ্যে সন্ধি স্থাাপনের জন্য হয় তা ভিন্ন। যে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য এমনটা করে, আমি তাকে বিরাট সাওয়াব দান করব (সুরা নিসা : ১১৪)। নবীজি বলেছেন, অনেক কথার কারণে আল্লাহ বান্দার সম্মান বৃদ্ধি করে এবং জান্নাত দেন এবং অনেক কথার কারণে বান্দাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হয়। (আল-জামে : ৪০৭)।

কথায় শান্তি কথায় ফেতনা : কথার আধিক্য ব্যক্তিকে বিভিন্ন ফেতনা ও বিপদের সম্মুখীন করে। নিত্য-নতুন সমস্যায় জর্জরিত করে। ইয়াজিদ ইবনে হাবিব (রহ.) বলেন, অধিক বাগ্মীতা ব্যক্তিকে ফেতনায় আক্রান্ত করে আর নীরব ও নিস্তব্ধতা ব্যক্তিকে রহমতের উপযুক্ত করে। (আল-জামে : ৪৩৯)। ফেতনাবিমুখ ব্যক্তি মাত্রই অধিক-কথন পরিহারকারী। জিহ্বার হেফাজতকারী সম্পর্কে নবীজি বলেছেন, আল্লাহ যাকে দুটি জিনিসের খারাপি থেকে রক্ষা করবেন, তাকে তিনি জান্নাতে প্রবেশ করাবেন। জিহ্বা (কথাবার্তা) এবং লজ্জাস্থানের খারাপি। (বোখারি : ৬৪৭৪)।