রোজা রেখে যা বর্জনীয়

মুফতি আমিমুল ইহসান সিদ্দিকি

প্রকাশ : ১৭ মার্চ ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

রোজা আত্মসংযমের শ্রেষ্ঠ প্রশিক্ষণ। রোজা পালনের মাধ্যমে একজন মানুষ নিজেকে প্রকৃত মানুষে পরিণত করতে সক্ষম হয়। যদি রোজার আবেদনগুলো রক্ষা করে রোজা পালন করা হয়। এজন্য রোজা রাখা অবস্থায় কিছু করণীয় ও কিছু বর্জনীয় নিয়ম মেনে চলতে হয়। বিশেষত মন্দ অভ্যাসগুলো বর্জন করা অপরিহার্য। রোজা রেখে যা করা যাবে না বা করা উচিত নয়; যা করলে রোজা ভাঙ্গে না বটে, তবে হালকা হয়ে যায় এমন কিছু বিষয় এখানে উল্লেখ করা হলো।

ঝগড়া ও অশ্লীলতা : রোজাদার বান্দা কখনো ঝগড়ায় জড়াবে না। অশ্লীলতায় ভেসে যাবে না। এটা মোমিনের গুণ। আর রমজানে তো আর উন্নত আখলাক প্রকাশ করা বাঞ্ছনীয়। তাই রমজানে সব ধরনের ঝগড়া-বিবাদ, মারামারি, অশ্লীল কথা ও নির্লজ্জতা থেকে অবশ্যই বিরত থাকতে হবে, বিশেষ করে গান-বাজনা, টিভি ও মোবাইলের অশ্লীলতা থেকে অব্যশই দূরে থাকতে হবে। এ নিয়ম মেনে সিয়াম সাধনা করা হলে সিয়ামের ফজিলত ও সওয়াব পূর্ণমাত্রায় পাওয়া যাবে বলে আশা করা যায়। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, যখন তোমাদের কেউ সিয়াম পালন করবে, তখন সে কোনো মন্দ কথা বলবে না এবং বাজে বকবে না। যদি কেউ তাকে গালি দেয় বা লড়াই করতে আসে তখন সে যেন বলে, আমি রোজাদার। (বোখারি : ১৯০৪)।

অহেতুক কথা বলা : মন্দ ও অহেতুক কথা বলার কারণে রোজার পূর্ণ ফজিলত পাওয়া যায় না।

অপ্রয়োজনীয় কথা অতিমাত্রায় হলে রোজা উপবাস ছাড়া আর কিছু হবে না- এমন হুঁশিয়ারি আছে রাসুলের হাদিসে। তাই রোজা রেখে অবশ্যই মন্দ কথা ও কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে। রাসুল (সা.) বলেছেন, কত রোজা পালনকারী এমন আছে, (রোজা অবস্থায় মন্দ ও অহেতুক কথা ও কর্ম থেকে বিরত না থাকার ফলে) ক্ষুধা ও পিপাসা ছাড়া রোজা থেকে সে আর কিছু লাভ করতে পারে না। অনুরূপ অনেক রাত জাগরণকারী এমন আছে, যে রাত জেগে থাকার কষ্ট ছাড়া সে আর কিছু পায় না। (ইবনে মাজাহ : ১৬৯০)।

মিথ্যা ও পরনিন্দা : একটি মিথ্যা আরো অনেক মিথ্যার জন্ম দেয়। মিথ্যা কখনো কল্যাণকর হয় না। রাসুল (সা.) বলেছেন, যে রোজা রেখেছে অথচ মিথ্যাচার বর্জন করেনি, তার এই কৃত্রিম পানাহার বর্জনের কোনো প্রয়োজন আল্লাহর কাছে নেই। (বোখারি : ১৯০৩) আর পরনিন্দা তো আমল ধ্বংসের জ্বলন্ত আগুন। পরনিন্দার দ্বারা বান্দার নেকি ধ্বংস হয়। স্বভাব ও বৈশিষ্ট্য হীনতায় উপনীত হয়। পরনিন্দার দ্বারা বান্দা মানুষের কাছেও অপ্রিয় হয়, আল্লাহর কাছেও অপ্রিয় হয়। রোজা রেখে পরনিন্দা অবশ্যই বর্জন করতে হবে।

অপচয় : রমজানে সব ধরনের অপচয় থেকে বিরত থাকা বিচক্ষণতার দাবি। খাবারে, অর্থে, কেনাকাটায়, সময়ে এক কথায় সবকিছুতে অপচয় এড়িয়ে চলা জরুরি। অপচয় বা অপব্যয় করা খুবই বাজে ও মন্দ অভ্যাস। পবিত্র কোরআনে অপব্যয়কারীকে শয়তানের ভাই বলা হয়েছে।