ঢাকা ১৬ অক্টোবর ২০২৪, ১ কার্তিক ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

থার্টিফার্স্ট নাইট মুসলিম সংস্কৃতিতে একটি অপসংস্কৃতি

থার্টিফার্স্ট নাইট মুসলিম সংস্কৃতিতে একটি অপসংস্কৃতি

থার্টিফার্স্ট নাইট কোনো ইসলামিক সংস্কৃতি নয়। মুসলিম সভ্যতা ও সংস্কৃতিতে এটি একটি অপসংস্কৃতি। খ্রিষ্টীয় বছর তথা গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার হিসেবে ডিসেম্বরের ৩১ তারিখ দিবাগত রাত। এ রাতের ১২টা ১ মিনিটকে ‘থার্টিফার্স্ট নাইট’ মুহূর্ত হিসেবে অভিহিত করা হয়। বছরের শেষ রাতের এ মুহূর্তটি উদযাপন একটি খ্রিষ্টীয় সংস্কৃতি। বিশ্বব্যাপী ইসলামিক স্কলাররা ‘থার্টিফার্স্ট নাইট’ উদযাপনকে হারাম বলে আখ্যায়িত করেছেন। এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পবিত্র কোরআনে ঘোষণা করেন, ‘যে ব্যক্তি ইসলাম (ইসলামি রীতিনীতি) ছাড়া অন্য কোনো ধর্মের অনুসরণ করবে, কখনও তার সেই আমল গ্রহণ করা হবে না। আর পরকালে সে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে।’ (সুরা আল ইমরান : ৮৫)। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি অন্য জাতির সঙ্গে আচার-আচরণে, সভ্যতা-সংস্কৃতিতে সামঞ্জস্য গ্রহণ করবে, সে তাদের দলভুক্ত বলে বিবেচিত হবে।’ (আবু দাউদ)।

অমুসলিমদের আচার-আচরণ ও তাদের অনুষ্ঠানে প্রেজেন্টেশন করতে কোরআন হাদিসের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘প্রত্যেক জাতির জন্য আমি একটি নির্দিষ্ট বিধান এবং সুস্পষ্ট পথ নির্ধারণ করেছি।’ (সুরা মায়েদা : ৪৮)। থার্টি ফার্স্ট নাইট এটা সম্পূর্ণ পশ্চিমা সংস্কৃতি। মুসলমানদের জন্য সেটা থেকে বিরত থাকা উচিত। এমনকি অমুসলিমদের থেকে এসব বিষয়ে কোনো ধরনের সাহায্য ও গ্রহণ করা যাবে না। হাদিস শরিফে এসেছে, হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বর্ণনা করেন, এক মুশরিক রাসুলুল্লাহ (সা.) এর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তার সঙ্গে যুদ্ধে অংশগ্রহণের ইচ্ছা প্রকাশ করেন। তিনি (তাকে) বললেন, তুমি ফিরে যাও। আমরা মুশরিকদের সাহায্য চাই না।’ (সুনানে আবু দাউদ)।

‘থার্টিফার্স্ট নাইট’ একটা নীরব ফেতনা। রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাদের ফেতনা থেকে বিরত থাকতে বলেছেন। হাদিস শরিফে এসেছে, হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা অন্ধকার রাতের ঘনঘটার মতো ফেতনার আগে দ্রুত আমল কর, (যখন) ব্যক্তি ভোর অতিবাহিত করবে মোমিন অবস্থায়, সন্ধ্যা করবে কাফের অবস্থায় অথবা সন্ধ্যা অতিবাহিত করবে মোমিন অবস্থায়, ভোর অতিবাহিত করবে কাফের অবস্থায়। মানুষ তার দ্বীনকে বিক্রি করে দেবে দুনিয়ার সামান্য কিছুর বিনিময়ে।’ (সহিহুল মুসলিম)।

আমাদের জীবন থেকে একটা বছর চলে যাওয়া মানে মৃত্যুর জন্য এক বছর এগিয়ে আসা। তাই পেছনের জীবনের গোনাহের জন্য লজ্জিত হওয়া উচিত। অনুতপ্ত হয়ে আল্লাহর কাছে তওবা করা উচিত। নামাজ ও কোরআন পাঠের মাধ্যমে নিউইয়ারকে বরণ করা চাই। দুঃখজনকভাবে আমরা ওয়েস্টার্ন কালচারকে ফলো করি। মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদের সবাইকে ইসলামের সঠিক বুঝ দান করুন এবং ‘থার্টিফার্স্ট নাইট’ নামক বেহায়াপনা ও নষ্টামি থেকে আমাদের হেফাজত করুন।

লেখক : শিক্ষার্থী, ফতোওয়া ও উচ্চতর ইসলামি আইন গবেষণা বিভাগ মারকাজুল বুহুস আল ইসলামিয়া, আফতাব নগর, বাড্ডা, ঢাকা-১২১২

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত